সন্ত্রাসীদের আস্তানা ও অস্ত্রের খোঁজ মেলেনি

পটিয়ায় পাহাড়ে যৌথ বাহিনীর অভিযান

পটিয়া প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ১৯ এপ্রিল, ২০২২ at ১০:৫১ পূর্বাহ্ণ

পটিয়ায় উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের আস্তানা খুঁজতে যৌথ বাহিনী দিনভর সাঁড়াশি অভিযান চালিয়েছে। তবে অভিযানে আস্তানা বা কোনো অস্ত্রের খোঁজ পাওয়া যায়নি। গতকাল সকালে র‌্যাব ও পুলিশ উপজেলার কেলিশহর ইউনিয়নের মৌলভীবাজার হয়ে গহীন পাহাড়ে এ অভিযান চালায়। একই সময়ে পটিয়া সীমান্তের বান্দরবানের সেনাবাহিনীর ডলুপাড়া ক্যাম্পের একটি টিমও অভিযান চালায়।

গত ১২ এপ্রিল পটিয়া উপজেলার কেলিশহর ইউনিয়নের মৌলভী বাজার এলাকায় পাহাড় থেকে সন্ত্রাসীরা ১২ জনকে অপহরণ করে। পরে মুক্তিপণ আদায় করে ছেড়ে দেয়। এরপর এই অভিযান চালানো হয়। অভিযানে বান্দরবান সীমান্তে নেতৃত্ব দিয়েছেন সেনাবাহিনীর ডলুপাড়া ক্যাম্পের মেজর মোহাম্মদ তাহমিদ, পটিয়া সীমান্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) কবির আহমদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পটিয়া সার্কেল) তারিক রহমান, র‌্যাব-৭ এর পরিদর্শক নূরে আলম ও পটিয়া থানার ওসি রেজাউল করিম মজুমদার। সন্ত্রাসীদের খুঁজে গহীন পাহাড়ের চিতাখোলা, চান মিঞার খামার, ভান্ডালজুড়ি খালের মুখ, পুলিক পেট, দামাইছড়ির মুখ, মেয়র মঞ্জুরুল আলমের খামার ও ভাঙাছড়ি এলাকায় অভিযান চালালেও তাদের আস্তানা খুঁজে পায়নি অভিযান দল।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পটিয়া, বোয়ালখালী, চন্দনাইশ ও রাঙ্গুনিয়ার পাহাড় নিয়ন্ত্রণ রাখতে দীর্ঘদিন তিনটি সন্ত্রাসী গ্রুপ সক্রিয়। তারা প্রায়ই পাহাড়ের বাগান-মালিক ও কাজে যাওয়া শ্রমিকদের জিম্মি করে মোটা অংকের টাকা আদায় করে। এর মধ্যে রয়েছে দুটি চাকমা গ্রুপ ও বিভিন্ন সন্ত্রাসীদের সমন্বয়ে গঠিত একটি গ্রুপ। জানা যায়, পাহাড়ি এলাকায় সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্যরা ছদ্মবেশে অবস্থান নেয়। তাদের সাথে স্থানীয় কিছু ব্যক্তির সখ্য রয়েছে। এর জের ধরে সুযোগ বুঝে তারা অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়সহ নানা অপরাধ করে থাকে।

নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক উপজেলার কেলিশহর এলাকার এক লেবু চাষি জানান, কেলিশহর ইউনিয়নের পাহাড়ে শত শত কৃষক চাষাবাদ করলেও উপজাতি সন্ত্রাসীদের ভয়ে তারা আতংকে থাকেন। বিষয়টি থানা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। সন্ত্রাসীদের সঙ্গে স্থানীয় কিছু লোকের যোগাযোগ রয়েছে। তাদের মাধ্যমে মুক্তিপণের টাকা ও লেবু চাষিদের কাছ থেকে মাসোহারা আদায় করা হয়।

সন্ত্রাসীরা সম্প্রতি উপজেলার হাইদগাঁও পাহাড়ি এলাকা থেকে চন্দনাইশ উপজেলার এক পিকআপ চালককে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এখনো তার সন্ধান মেলেনি।
পটিয়া থানার ওসি রেজাউল করিম মজুমদার জানান, পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা এলাকার কৃষক ও সাধারণ লোকজনকে অপহরণ করা এবং মুক্তিপণ আদায়ের বিষয়টির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। তাই র‌্যাব, পুলিশ ও পটিয়া সীমান্তের বান্দরবানের ডলু ক্যাম্পের সেনাবাহিনীর টিম একই সময়ে যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করেছে। তবে অভিযানে সন্ত্রাসীদের আস্তানা বা কোনো অস্ত্রের সন্ধান পাওয়া যায়নি। অভিযান অব্যাহত থাকবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমা মাছের বিচরণে হালদায় বেড়েছে চোরদের তৎপরতা
পরবর্তী নিবন্ধমামলা অবশেষে পিবিআইতে