বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় রাজিয়া খাতুন আর নেই। সন্তান প্রসবের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে অনূর্ধ্ব–১৯ জাতীয় নারী ফুটবল দলের সদস্য ফুটবলার রাজিয়ার মৃত্যু হয়েছে। গত বুধবার দিনগত রাত ৩টার দিকে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার মৌতলা ইউনিয়নের লক্ষ্মীনাথপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। রাজিয়া সুলতানা লক্ষ্মীনাথপুর গ্রামের নুর আলী সরদারের মেয়ে।
বুধবার রাতে পুত্র সন্তানের জন্ম দেন ২০১৮ সালে অনূর্ধ্ব–১৮ সাফ জয়ী রাজিয়া খাতুন। সাতক্ষীরার কালীগঞ্জে লক্ষীনারায়নপুর গ্রামে ফুটফুটে শিশুর আগমনে বাড়িতে ছিল সীমাহীন আনন্দ। কিন্তু ভোর হতেই তা রূপ নেয় বিষাদে। অসুস্থ হয়ে ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন মা রাজিয়া সুলতানা। রাজিয়ার খালাতো ভাই মো. রোকোনুজ্জামান মোড়ল বলেন, ‘বুধবার রাত ১০টায় রাজিয়া গ্রামের বাড়িতে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। এরপর তার কিছু জটিলতা দেখা দেয় এবং ভোর ৪টার দিকে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।’ অবস্থা খারাপ হওয়ায় রাতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও রাজিয়াকে বাঁচানো যায়নি। রোকনুজ্জামান আরও বলেন, ‘জটিলতা দেখা দেওয়ার পর রাতে অ্যাম্বুলেন্স আনা হয়েছিল। কিন্তু একটা সময় অবস্থা ভালো হওয়ায় সেই অ্যাম্বুলেন্স ফেরত পাঠানো হয়। এরপর ভোরের দিকে হঠাৎ করেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন রাজিয়া। পরে আবার অ্যাম্বুলেন্স এনে তাকে সাতক্ষীরা হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।’ বৃহস্পতিবার বাদ আসর রাজিয়াকে দাফন করার কথা। রাজিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের সাবেক কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। তিনি বলেন, ‘রাজিয়া অত্যন্ত ভালো একজন মানুষ ছিল। খেলতোও দারুণ। আমি তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করছি।’ ২০০১ সালের ২৫ জানুয়ারি জন্ম নেওয়া রাজিয়া বাংলাদেশের নারী ফুটবলের উত্থানের শুরুর দিকের একজন। এএফসি অ–১৪ রিজিওনাল (সেন্ট্রাল ও দক্ষিণ এশিয়া) চ্যাম্পিয়নশিপে ২০১৩ ও ১৫ সালে চ্যাম্পিয়ন দলে ছিলেন তিনি। ২০১৭ সালে থাইল্যান্ডে এএফসি অনূর্ধ্ব–১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের মূল পর্বে রাজিয়া খেলেছিলেন। এরপর অনূর্ধ্ব–১৯ দলেও খেলেছেন। ২০১৮ সালে ভুটানে অনূর্ধ্ব–১৮ সাফজয়ী দলের সদস্য ছিলেন তিনি। পারফরম্যান্স অবনতির জন্য ২০১৯ সালের দিকে ক্যাম্প থেকে বাদ পড়েন।