আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজপথসহ দেশে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো। নাশকতা ও নৈরাজ্যের আশঙ্কায় সরকার ইতোমধ্যে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছে। সারা দেশে পুলিশ বাহিনীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। থানাগুলোতে অস্ত্র, গোলাবারুদ যথেষ্ট আছে কিনা তা সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি), সহকারী কমিশনার (এসি) ও উপ–পুলিশ কমিশনারদের (ডিসি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারকে (লজিস্টিক) নিয়মিত অবহিত করতে বলা হয়েছে। এদিকে বিগত নির্বাচনগুলোর আগে–পরে ‘নৈরাজ্যকারীদের’ বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো সচল ও দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, গত ৩১ আগস্ট রাজারবাগ পুলিশ লাইনে পুলিশ সদস্যদের এক সভায় আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন বলেছেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে এবং দেশবিরোধী যেকোনো চক্রান্ত রুখে দিতে সব পুলিশ সদস্য প্রস্তুত রয়েছে। দেশের আইনশৃক্সখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে যা যা করা দরকার তাই করা হবে। তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজপথে আন্দোলন– সংগ্রামের নামে নৈরাজ্য চলতে পারে। এছাড়া এ সুযোগে উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদীরাও মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। সবকিছু মাথায় রেখেই সরকার আইনশৃক্সখলা রক্ষায় এখন থেকে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি নিতে শুরু করেছে।
গত ৩ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি মো. জাহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সরকারি আদেশে জানা গেছে, লং রেঞ্জের ৯০ হাজার টিয়ার গ্যাস শেল আনা হচ্ছে তুরস্ক থেকে। টিয়ার শেল আনার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এস এম ফেরদৌস, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের ডিআইজি কুসুম দেওয়ান এবং আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়নের পুলিশ সুপার মনজুর আহমেদ সিদ্দিক তুরস্ক গেছেন। তারা সেখানকার টিয়ার গ্যাস শেলের ফ্যাক্টরি পরিদর্শন ও এসবের কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখবেন।
পাশাপাশি এ মাসের শেষে কিংবা আগামী অক্টোবরের মধ্যে তুরস্ক থেকে আনা হচ্ছে ১২ বোরের শটগানের দুই লাখ রাবার বুলেট। গত মাসেও একই দেশ থেকে ১০ হাজার রাবার বুলেট আনা হয়েছিল বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। এ মাসের শেষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ধনঞ্জয় কুমার দাসসহ তিনজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার তুরস্ক সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে। ২৮ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের তিন দিনের ওই সফরে এসব কর্মকর্তা সেখানকার কারখানা পরিদর্শন ও কার্টিজ পরীক্ষা করে দেখবেন। এরপরই স্বল্প সময়ে সেগুলো বাংলাদেশে নিয়ে আসা হবে।