সংযমের মাস মাহে রমজান

মর্জিনা হক চৌধুরী পপি | সোমবার , ১১ এপ্রিল, ২০২২ at ৬:৩২ পূর্বাহ্ণ

মুসলমানদের সংযম সাধনার মাস রমজান মাস। সমাজের অসহায় দরিদ্রের দুঃখ, ব্যথা কষ্ট অনুধাবন করার মাস। মুসলিম বিশ্বে সর্বত্র ছড়িয়ে দিয়ে যায় অনাবিল ভ্রাতৃত্ব আর সহমর্মিতার সুবাতাস। পূণ্যময় এই মাস রহমত, বরকত ও মুক্তির বার্তা নিয়ে আসে, হৃদয়কে প্রশান্তি করে। বিশ্ব মুসলিমকে সংযত – সুন্দর জীবন যাপনের শিক্ষা দেয়। মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় মুসলমানরা শ্রদ্ধা ও নির্মল ভালোবাসায় বরণ করে এই মাসকে। পবিত্র এই মাসেই নিহিত রয়েছে দুনিয়া ও পরকালের অশেষ কল্যাণ। রমজানের শিক্ষাই হলো সকল পাপ কাজ থেকে বিরত থাকা এবং আত্মশুদ্ধি অর্জন করা। নিজের ওপর এবং অন্যের ওপর জুলুম করা, অপচয় করা থেকে বিরত থাকা। অথচ আমাদের বাংলাদেশের চিত্র ভিন্ন। এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী আছে রোজার মাসকে টার্গেট করে সব পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। রোজার মাসকে সর্বোচ্চ মুনাফার মূখ্য সময় হিসেবে বেছে নেয়। তাদের কাছে মানুষ, মানবতা সহমর্মিতা কেবলই কতগুলো ঠুনকো শব্দ মাত্র। এই বরকতময় মাসে ব্যবসায়ীদের ইহ ও পরকালীন মুক্তি ও কল্যাণ অর্জনের সম্ভাবনা যতটা রয়েছে, অন্যদের ততটা নেই। ইসলামে ব্যবসায়কে অনুৃমোদন দেয়া হয়েছে ; রূপরেখা ও দেয়া হয়েছে। সততা এ ক্ষেত্রে প্রধান মাপকাঠি। প্রতারণা, ভেজাল, ওজনে কম দেয়ার ব্যাপারে ইসলাম অত্যন্ত কঠোর। সুরা মুতাফফিফিনে আল্লাহ স্বয়ং বলেন, যারা মাপে কম দেয়, তাদের জন্য দুর্ভোগ। অন্যত্র আল্লাহ তায়ালার নির্দেশ, তোমরা সঠিক ওজন কায়েম করো এবং ওজনে কম দিও না। ( সুরা আর রহমান, আয়াত ৭- ৯)।
ব্যবসায় সততা নিয়ে নবী করিম সাঃ বলেন সৎ ব্যবসায়ী শেষ বিচারের দিন মুমিন এবং শহীদদের সাথে আমার সাথে সাক্ষাৎ করবে। যে ব্যক্তি পণ্য মজুদ করে রাখবে আল্লাহ তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবেন। তাছাড়া পণ্যে অধিক লাভ না করে কম লাভ করে পণ্য বিক্রি করাকে তিনি সদকার সাথে তুলনা করছে। তাই অন্তত রোজার মাসে যেনো ব্যবসায়িরা পণ্যমূল্যকে স্থিতিশীল রাখেন। তাহলে সাধারণ মানুষগুলো উপকৃত হবে। মাহে রমজানে সমাজের স্থিতিশীলতা, শান্তি সম্প্রীতি ও নিরাপত্তার সুদূর প্রসারী প্রভাব বিদ্যমান সমাজের প্রত্যেক ধর্ম প্রাণ মানুষ যদি রমজানের মত অন্যান্য মাসেও আত্মসংযমের সঙ্গে জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও দল মত নির্বিশেষ সব ধরনের বিরোধ এড়িয়ে যেতো তাহলে সমাজে কোনো বিশৃঙ্খলাই সৃষ্টি হত না।
তাই সমাজ জীবনে পরস্পরের প্রতি সাহায্য, সহযোগিতা, সহানুভূতি ও সহমর্মিতা প্রদর্শনের ক্ষেত্রে এবং সাম্য, ঐক্য, ভ্রাতৃত্ব বন্ধনের ক্ষেত্রে রোজার ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাছাড়া সারাবছরই হতদরিদ্র ও আর্তমানবতার প্রতি সমবেদনা, সহানুভূতি ও সহমর্মিতা প্রকাশ মাহে রমজানের মহান শিক্ষা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধযানজট নিরসনে দ্রুত উদ্যোগ নিন
পরবর্তী নিবন্ধপবিত্র রমযান মাসে দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণ জরুরি