সংগঠন নিয়ে বিভক্ত চসিক কর্মকর্তারা

পাল্টাপাল্টি কমিটি

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ at ৬:০৩ পূর্বাহ্ণ

কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) সিনিয়র কর্মকর্তারা। ‘চসিক অফিসার্স এসোসিয়েশন’ নামে একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশকে কেন্দ্র করেই এর সূত্রপাত বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে সংগঠনটির নামে পাল্টাপাল্টি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে উভয় কমিটিতে আছেন অনেকে।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার সকালে চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তার দপ্তরে বৈঠক করেন কয়েকজন সিনিয়র কর্মকর্তা। এসময় তারা স্থায়ী কর্মকর্তাদের নিয়ে ‘চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন অফিসার্স এসোসিয়েশন’ নামে একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ করেন। প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরীকে সভাপতি ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিককে সাধারণ সম্পাদক করে ২৩ সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয় সংগঠনের।
কমিটি গঠনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সিটি কর্পোরেশনের সেবাধর্মী কার্যক্রম গতিশীল করা, উন্নয়ন অব্যাহত রাখা, স্থায়ী কর্মকর্তাদের স্বার্থসংরক্ষণসহ নাগরিক সেবার স্বার্থে এসোসিয়েশন দায়িত্ব পালন করবে।’
এদিকে গতকাল বুধবার একই নামে আরেকটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ করেন চসিকে কর্মরত অন্য সিনিয়র কর্মকর্তারা। অতিরিক্ত প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির চৌধুরীরকে সভাপতি ও অতিরিক্ত প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে গঠিত কমিটির আকারও ২৩ সদস্য বিশিষ্ট। চসিকে কর্মরত কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে চসিকের কাজের গতিশীলতা আনার লক্ষ্যেই এসোসিয়েশন গঠন করা হয় বলে সংগঠনটির প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
কমিটি গঠনের বিষয়ে একটি অংশের সাধারণ সম্পাদক মোরশেদুল আলম চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘ডা. সেলিম আকতার ও প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম যে কমিটি গঠন করেছেন সেখানে সব অফিসারকে সম্পৃক্ত করেননি। একটি কমিটির পদে সবাইকে রাখা সম্ভব না। কিন্তু সবার সঙ্গে অন্তত আলোচনা করা উচিত ছিল। সেটাও করেননি। তাই সবাই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ক্ষুব্ধদের বক্তব্য হচ্ছে, সৌজন্যের খাতিরে অন্তত মুঠোফোনে হলেও তাদের সাথে আলোচনা করতে পারতেন। তা না করে রাতের আধারে কমিটি গঠন করলে তো হবে না। এমন না যে এটা ব্যক্তি স্বার্থের কমিটি, যে জন্য তাড়াহুড়া করতে হবে। এ অবস্থায় সবার অনুরোধে আমি সংগঠনের দায়িত্ব নিয়েছি।
এ বিষয়ে অন্য অংশের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক আজাদীকে বলেন, আমাদেরটাই মূল কমিটি। সমন্বয়ে গ্যাপ থাকায় ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে। তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। কমিটি পূর্ণাঙ্গ করব। সেখানে সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তিনি বলেন, কমিটিতে তো সবাইকে রাখা সম্ভবও না। সামনে কোভিডের টিকা নিয়ে সেলিম ভাই ব্যস্ত হয়ে যাবেন। আবার নতুন মেয়র দায়িত্ব নিবেন। অন্য কর্মকর্তাদেরও ব্যস্ততা বাড়বে। তাই তার আগেই প্রাথমিকভাবে কমিটি করেছি। সব ভুল বুঝাবুঝির অবসান হবে।
দুই কমিটিতে আছেন যারা : ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী ও রফিকুল ইসলাম মানিক একটি কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হলেও হুমায়ুন-মোরশেদ কমিটিতে তাদের নির্বাহী সদস্য করা হয়েছে। একইভাবে সেলিম-রফিক কমিটির সহ-সভাপতি ডা. মোহাম্মদ আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক ঝুলন কুমার দাশ, সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদে উপ-সচিব আশেক রসুল চৌধুরী টিপু, যুগ্ম সম্পাদক আশিকুল ইসলাম ও যুগ্ম কোষাধ্যক্ষ নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাদাত মোহাম্মদ তৈয়বকে হুমায়ুন-মোরশেদ কমিটিতে যথাক্রমে নির্বাহী সদস্য, নির্বাহী সদস্য, সমাজকল্যাণ সম্পাদক, নির্বাহী সদস্য ও নির্বাহী সদস্য পদে রাখা হয়েছে। এছাড়া সেলিম-রফিক কমটির সদস্য প্রকৌশলী সুদীপ বসাককে হুমায়ুন-মোরশেদ কমিটির সদস্য রাখা হয়েছে।
হুমায়ুন-মোরশেদ কমিটিতে আরো যারা আছেন : প্রকৌশলী জয়সেন বড়ুয়াকে সহ-সভাপতি, মোহাম্মদ ইকবাল হাসানকে সাংগঠনিক সম্পাদক, প্রকৌশলী জসিম উদ্দীন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম চৌধুরীকে কোষাধ্যাক্ষ, প্রকৌশলী তৌহিদুল হাসানকে দপ্তর সম্পাদক, এ কে এম সালাউদ্দীনকে প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, সিদ্ধার্থ করকে সাংস্কৃতিক সম্পাদক করা হয়। নির্বাহী সদস্যরা হচ্ছেন- প্রকৌশলী আবু সাদাত মো. তৈয়ব, প্রকৌশলী ফারজানা মুক্তা, প্রকৌশলী মিজা ফজলুল কাদের, প্রকৌশলী রিফাতুল করিম, প্রকৌশলী আনোয়ার জাহান, মো. মহিউদ্দীন আহমেদ সরোয়ার চৌধুরী ও প্রকৌশলী রূপক দাশ।
সেলিম-রফিক কমিটিতে যারা আছেন : তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কামরুল ইসলামকে সহ-সভাপতি, প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনকে কোষাধ্যক্ষ, নির্বাহী প্রকৌশলী বিপ্লব দাশকে দপ্তর সম্পাদক, মেডিকেল অফিসার ডা. মোহাম্মদ তৌহিদুল আনোয়ার খানকে প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, জোনাল মেডিকেল অফিসার ডা. সুমন তালুকদারকে সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে রাখা হয়েছে। এছাড়া সদস্য পদে আছেন প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ শফিকুল মান্নান সিদ্দিকী, ডা নাছিম ভূঁইয়া, ডা, শাহীন পারভীন, প্রকৌশলী মো. আবু ছালেহ, প্রকৌশলী শাহীনুল ইসলাম ও প্রকৌশলী ফরহাদুল আলম।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগভীর নলকূপ বসিয়ে অবৈধ পানির লাইন
পরবর্তী নিবন্ধআন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদের উন্নয়নে ১৫০ কোটি টাকা