শেষ বিকেলের কথাগুলো জমা হয়ে আছে।
মানুষের দ্রুততালের পদশব্দ শুনি, মৃদুলয়ে মিলিয়ে যেতে যেতে দেখি বন্ধুর ফ্যাকাশে মুখ, প্রেমিকার অব্যক্ত কান্না, স্বজন হারিয়ে সব-শেষের নিঃসীম নিথরতা।
এই জীবনের বৃত্তে যারা এসেছিল, তাদের সুখি সুখি মুখ দেখে আমি কি ঈর্ষাকাতর? আমি কি চেয়েছিলাম তারা আমার মত ডানাভাঙা ঈগল হয়ে ঝুলে থাকুক অশ্বত্থের উঁচুডালে, উড়ালপথে উদ্যমী পাখিসব তাদের ভাঙা পালকের ওপর বিষ্ঠা ছড়িয়ে দিক, অহঙ্কারীরা মুখ গুঁজে থাকুক পরাজয় ও পতিতের গ্লানিতে!
আমি না চাইলেও শেষ বিকেল ছানিপড়া চোখের মত ঘোলাটে, হাঁটুভাঙা স্মৃতিতে আহত আর ফেলে আসা দুস্তর পথের দিকে চেয়ে থাকা বৃদ্ধের দীর্ঘশ্বাসে ধূসর।
তবু, আসন্ন অন্ধকারে সন্ধ্যাকাশের তারা সুবহে সাদেকের আকাশে শুকতারা হয়ে জ্বলজ্বল করে বুঝিয়ে দেয়, সমাগত ভোর।
আমি, আমরা বেঁচে আছি আজও।
মৃত্যুর মিছিলকে পাশ কাটিয়ে দ্রুত হাঁটছি একটি ঘাটে অপেক্ষমান নৌকার দিকে, যেটি নূহের নৌকার যাত্রাপথ চিনে রেখেছে।