রোহিঙ্গা ক্যাম্পকেন্দ্রিক তৎপর মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর আরসা ও আরএসওর মধ্যে গোলাগুলিতে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুমের তুমব্রু শূণ্যরেখার রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এতে হামিদ উল্লাহ (২৭) নামে ১ রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকে। আহত ১ জনের নাম জানা গেছে। তার নাম মহিদ উল্লাহ (২৫)। তিনি শূন্যরেখার ক্যাম্পের রোহিঙ্গা। এ সময় ৫ আরসা সদস্যকে বন্দি করে রোহিঙ্গা সলিটরিটি অর্গনাইজেশনের (আরএসও) সদস্যরা। তাদের নাম জানা যায়নি।
এদিকে গোলাগুলির পর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন লেগেছে। এতে শত শত বসতঘর পুড়ে গেছে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে।
দুপুরে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোমেন শর্মা সাংবাদিকদের বলেন, সকাল থেকে তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায় থেমে থেমে গোলাগুলির খবর স্থানীয়দের মাধ্যমে জেনেছি। তিনি বলেন, ঘটনাটি যেহেতু শূন্যরেখায় সেখানে আন্তর্জাতিক রীতিমতে বিজিবিসহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ করার এখতিয়ার নেই। তারপরও সীমান্তের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। প্রশাসন এ ব্যাপারে সার্বক্ষণিক খোঁজ–খবর রাখছে।
উখিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, দুপুরের দিকে শূন্যরেখার রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে দুজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় কুতুপালং আশ্রয়শিবির সংলগ্ন এমএসএফ হাসপাতালে আনা হয়। তিনি বলেন, এ সময় হাসপাতালের চিকিৎসক একজনকে মৃত ঘোষণা করেন। অপরজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে কঙবাজার জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহত রোহিঙ্গার নাম হামিদ উল্লাহ। আহত হয়েছেন মহিদ উল্লাহ।
তুমব্রু বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, গতকাল সকাল সোয়া ৬টায় হঠাৎ গোলাগুলির আওয়াজে কেঁপে ওঠে বাজার। উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ চলতে থাকে। এক পর্যায়ে পুরো রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
শূন্যরেখায় আশ্রিত রোহিঙ্গা আবদুল মাজেদ ও রশিদ আহমদ জানান, আরসার উপর প্রথম হামলা শুরু করে আরএসওর সদস্যরা। সোয়া ৬টায় শুরু হওয়া প্রথম হামলায় আরসার ২ সদস্য আহত হন। নিরীহ অনেক লোক আঘাত পান। পরে পিছু হটে আরসা বাহিনী।
তুমব্রু গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, তুমব্রু শূন্যরেখার রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ পুরো এলাকা সারা দিন রণক্ষেত্র ছিল। গোলাগুলির আওয়াজে আতংকগ্রস্ত স্থানীয় অনেকে নিরাপদ স্থানে চলে গেছে। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন জ্বলতে দেখেন তারা।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, সকাল থেকে অব্যাহত গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। সেখানে কী হচ্ছে বলা যাচ্ছে না। ঘটনায় স্থানীয়রা আতঙ্কে রয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে কঙবাজার ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম চৌধুরীকে মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।