বৌদ্ধদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা আজ। এর অপর নাম আশ্বিনী পূর্ণিমা। ‘প্রবারণা’ শব্দের অর্থ প্রকৃষ্টরূপে বরণ করা, নিষেধ করা ইত্যাদি। ‘বরণ করা’ অর্থে বিশুদ্ধ বিনয়াচারে জীবন পরিচালিত করার আদর্শে ব্রতী হওয়া, আর ‘নিষেধ’ অর্থে আদর্শ ও ধর্মাচারের পরিপন্থী কর্মসমূহ পরিহার করাকে বোঝায়। বর্ষাবাস সমাপনান্তে ভিক্ষুসংঘ আপন আপন দোষত্রুটি অপর ভিক্ষুসংঘের নিকট প্রকাশ করে তার প্রায়শ্চিত্ত বিধানের আহ্বান জানায়। এমনকি অজ্ঞাতসারে কোনো অপরাধ হয়ে থাকলে তার জন্যও ক্ষমা প্রার্থনা করতে হয়। অর্থাৎ দৈনন্দিন জীবনাচারের প্রতিটি মুহূর্তে সচেতনভাবে ঘটিতব্য সর্ববিধ দোষকে বর্জন করে গুণের প্রতি আকৃষ্ট থাকার চেতনা সৃষ্টি করাই প্রবারণার উদ্দেশ্য। শ্রাবস্তীর জেতবনে অবস্থানকালে গৌতম বুদ্ধ ভিক্ষুসংঘের পালনীয় হিসেবে এর প্রবর্তন করেন। বৌদ্ধরা শ্রদ্ধা–ভক্তি সহকারে প্রবারণা পূর্ণিমা পালন করে। এ উপলক্ষে আয়োজন করা হয় বুদ্ধপূজাসহ নানা পুণ্যানুষ্ঠানের। বাঙালি বৌদ্ধদের ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনে এ পূর্ণিমার আবেদন খুবই গভীর। প্রবারণা পূর্ণিমার অন্য একটি উৎসবময় দিক হলো ফানুস উত্তোলন। এ বছর বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ধর্মীয় কার্যাদি অনুষ্ঠিত হবে।
সম্মিলিত প্রবারণা পূর্ণিমা উদ্যাপন পরিষদ : সম্মিলিত প্রবারণা পূর্ণিমা উদ্যাপন পরিষদের উদ্যোগে আজ শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উদ্যাপিত হবে। সরকারি নির্দেশনা মেনে প্রশাসনের সহযোগিতায় সম্মিলিত প্রবারণা পূর্ণিমা উদ্যাপন পরিষদের উদ্যোগে এবং বিভিন্ন বৌদ্ধ যুব ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে সাড়ে ৭টা পর্যন্ত নগরীর বৌদ্ধ মন্দির চত্বরে সংক্ষিপ্ত পরিসরে ফানুস উত্তোলন করা হবে। এতে প্রধান অতিথি থেকে ফানুস উত্তোলন উদ্বোধন করবেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ–পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) এস এম মেহেদী হাসান। ফানুস উত্তোলনের সময় জনসাধারণকে প্রশাসন এবং সম্মিলিত প্রবারণা পূর্ণিমা উদ্যাপন পরিষদের পক্ষ থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় ও মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
কাতালগঞ্জ নবপণ্ডিত বিহার : কাতালগঞ্জ নবপণ্ডিত বিহারেও নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন করা হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ফানুস উত্তোলন করা হবে। এছাড়া মোমিন রোডস্থ সর্বজনীন বৌদ্ধ বিহার, মোগলটুলী শাক্যমুণি বিহারসহ নগরী ও জেলার প্রতিটি বিহারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন করা হবে।