না সকল নারীকে নিয়ে নয়, বলতে চাই কর্মজীবী কিংবা এখনো পড়াশোনা করছে এমন নারীদের নিয়ে। নারীদিবস উদযাপনের চেয়ে ঘরের বাইরে বের হওয়া নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বেশি জরুরী। কোনো তাত্ত্বিক কথা নয়, একজন কর্মজীবী নারী হিসেবে প্রতিদিন বাইরে বের হলে নিজের সাথে ঘটে যাওয়া দু একটা ঘটনার কথা বলি। আজ সকালেই অফিসে আসার পথে গাড়ির জন্য দাঁড়িয়েছি। আমার মতো আরো অনেকেই দাঁড়িয়ে। কিন্তু সেই অনেকের মধ্যে আমিই একমাত্র যে একা একজন নারী দাঁড়িয়ে। হঠাৎ এক মধ্যবয়স্ক লোক প্রাইভেট কার থেকে জিজ্ঞেস করলেন কোথায় যাবো, আর চোখে কেমন এক লোভাতুর দৃষ্টি যেন এখনই বোরখার ভেতরে আমার শরীরটা গিলে খাবে। বললাম গাড়িতে কেন যাবো। বলে ভাড়া মারছে। উত্তর দিলাম আমার সামর্থ নেই, সামনে আরো অনেকে আছে তাদের বলেন। তারপরও গাড়িতে উঠতে আবার বললেন, তার চোখ দেখে মনে হচ্ছিলো ধর্ষণের জন্য তর সইছে না। এই ঘটনা আজ প্রথম না, এর আগেও ঘটেছে বেশ কয়েকবার।
আরেকদিন রিকশায় করে যাচ্ছি হঠাৎ পাশ দিয়ে গাড়ির ননস্টপ হর্ন শুনে বাধ্য হয়েই পাশে তাকালাম। ট্রাক ড্রাইভার উড়ন্ত চুমু ছুড়ে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করছিলো। সেদিনও বোরখা আর বোরখার উপরে বড় শাল গায়ে জড়ানো ছিলো। কেমন ঘৃণা হচ্ছিলো সমাজটার উপর। প্রায়দিনই লোকাল গাড়িতে এত সংকীর্ণ হয়ে বসতে হয়। তাও যেন মেয়েদের গা ঘেঁষে বসতে পারলেই তাদের শান্তি। কিংবা মোবাইল চালানোর ভং ধরে কনুই দিয়ে একটু ছোঁয়ার চেষ্টা তা সে পুরুষ যে বয়সেরই হোক না কেন কিংবা পরনে তার টি–শার্ট জিন্স বা পাঞ্জাবী পায়জামা থাকুক না কেন স্বভাব একই।
তবে হ্যাঁ আমি কখনোই বলছিনা সবাই একরকম। অনেক পুরুষই আছেন যারা চলার পথে নারীকে সম্মান দেন। তবে ভালোর অনুপাত এতটাই কম যে প্রতিনিয়ত খারাপ অভিজ্ঞতাগুলোর ভীড়ে ভালোদের মনে রাখা একটু কঠিন বৈকি। তাই এবারের নারীদিবস থেকে এই ভালোর অনুপাত বৃদ্ধি পাক যেন প্রতিটা দিন আতংক নিয়ে ঘর থেকে বের হতে না হয়।