শুধু এক্সরে সেবাতেই বছরে আয় আড়াই কোটি টাকা

চমেক হাসপাতাল রেডিওলজি বিভাগ

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ১৬ অক্টোবর, ২০২১ at ১০:৪৮ পূর্বাহ্ণ

শুধু এক্সরে সেবা বাবদ বছরে আড়াই কোটি টাকা আয় করেছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগ। ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত (এক বছরে) বিভাগটির সেবা ও আয় সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনায় এ তথ্য পাওয়া গেছে। তবে এক্স-রের পাশাপাশি আলট্রাসনোগ্রাম, সিটি স্ক্যান ও এমআরআই পরীক্ষাসহ বিভাগটির সেবা খাতে বছরে আয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় চার কোটি (৩ কোটি ৮৪ লাখ ৪৪ হাজার ৬২০) টাকা। অবশ্য বীর মুক্তিযোদ্ধা, আর্থিকভাবে অসচ্ছলসহ আরো কয়েক ধরনের রোগীদের বিশেষ ব্যবস্থায় বিনামূল্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ রয়েছে এখানে। এর আওতায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পরীক্ষা-নিরীক্ষা বিনামূল্যেও করা হয়েছে। অন্যথা আয়ের পরিমাণ আরো বাড়তো বলে জানান বিভাগের চিকিৎসকরা।
প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, এক বছরে মোট ১ লাখ ৪ হাজার ২৯২ জনের এক্স-রে (দাঁতের ওপিজিসহ) পরীক্ষা করা হয়েছে রেডিওলজি বিভাগে। এর মাঝে ১ লাখ ১ হাজার ৪৮৬টি এক্স-রে বাবদ ২ কোটি ৫১ লাখ ৮ হাজার ১০০ টাকা ফি আদায় করা হয়েছে। আর ২ হাজার ৮০৬টি এক্স-রে করা হয়েছে বিনামূল্যে। প্রতিটি এক্স-রে বাবদ রোগীদের কাছ থেকে ২০০ টাকা করে ফি নেয়া হয়। তবে দাঁতের ওপিজি এক্স-রে ফি নেয়া হয় ২৫০ টাকা করে। দৈনিক ৩ শতাধিক এক্স-রে করাতে হয় জানিয়ে রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সুভাষ মজুমদার আজাদীকে বলেন, এক্স-রে পরীক্ষার জন্যই সবচেয়ে বেশি রোগী আসে। তিন শিফটে দিনের ২৪ ঘন্টা এক্স-রে সেবা চালু থাকে। কিন্তু এক্স-রে ছাড়া অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ রয়েছে দুপুর ২টা পর্যন্ত। জনবল পাওয়া গেলে আলট্রাসনোগ্রাম, সিটি স্ক্যান ও এমআরআইসহ অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষাগুলোও তিন শিফট (২৪ ঘন্টা) চালু রাখা সম্ভব হতো বলে জানান তিনি।
রেডিওলজি বিভাগ সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এক বছরে আলট্রসানোগ্রাম করা হয়েছে ৩ হাজার ৮২৫টি। যদিও এর মাঝে ৫১৯টি করা হয়েছে বিনামূল্যে। হাসপাতালে আলট্রাসনোগ্রাম করাতে খরচ হয় ১১০ থেকে ২২০ টাকা। সবমিলিয়ে আলট্রাসনোগ্রাম সেবা বাবদ বছরে আয় হয়েছে ৫ লাখ ৮০ হাজার ৫২০ টাকা।
হাসপাতালের এই বিভাগে সিটি স্ক্যান করাতে খরচ পড়ে ২ হাজার থেকে চার হাজার টাকা। এক বছরে মোট ৪ হাজার ২৪ জনের সিটি স্ক্যান পরীক্ষা হয়েছে বিভাগে। এর মাঝে বিনামূল্যে করা হয়েছে ২৬৯টি। বিনামূল্যের হিসাব বাদ দিয়ে সিটি স্ক্যান সেবা বাবদ এক বছরে বিভাগের আয় দাঁড়িয়েছে ৮৮ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। অন্যদিকে, এমআরআই পরীক্ষা বাবদ বিভাগের আয় হয়েছে ৩৮ লাখ ৭১ হাজার টাকা। বছরে মোট ১ হাজার ২৭৬টি এমআরআই পরীক্ষা হয়েছে বিভাগে। এর মাঝে বিনামূল্যে হয়েছে ১৩৫টি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চমেক হাসপাতালের রেডিওলজি বিভাগে এক্স-রে বাবদ ফি নেয়া হয় ২০০ টাকা। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ফি চারশ থেকে ৬শ টাকা। আলট্রাসনোগ্রাম বাবদ রেডিওলজি বিভাগে ১১০ থেকে ২২০ টাকা খরচ পড়ে। বেসরকারি পর্যায়ে এ ফি ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা। সিটি স্ক্যান করাতে রেডিওলজি বিভাগে খরচ হয় ২ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা।
বাইরে এ খরচ ৩ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা। এমআরআই পরীক্ষায় রেডিওলজিতে খরচ পড়ে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা। কিন্তু একই পরীক্ষায় বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে খরচ পড়ে ৭ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা। তুলনামূলক অনেক কম খরচে পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুবিধা থাকায় রোগীরা হাসপাতালে বেশি আসেন বলে জানান রেডিওলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সুভাষ মজুমদার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচতুর্থ শিরোপা জিতল চেন্নাই
পরবর্তী নিবন্ধদেবপাহাড় বস্তিতে আগুন ১৪ ঘর পুড়ে ছাই