প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির দামপাড়ার কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে ‘জ্বালানি সম্প্রসারণ: বাংলাদেশের অর্থনীতি, পরিবেশ ও ন্যায্য রূপান্তরের উপর প্রভাব’ শীর্ষক আলোচনা গত ২৬ আগস্ট অনুষ্ঠিত হয়। ইউনিভার্সিটির পরিবেশ বিষয়ক সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (উঐঙজঅ), আন্তর্জাতিক জলবায়ু সংগঠন থ্রি ফিফটি.ওআরজি এবং ওয়াটারকিপার্সের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশ নেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, গবেষক, শিক্ষক, জ্বালানি খাতের পেশাদার, জলবায়ু কর্মী এবং নীতিনির্ধারকগণ। অনুষ্ঠানটির সহযোগিতায় ছিল ক্লাইমেট অ্যাকশন এন্ড ইয়ুথ এম্পাওয়ারমেন্ট অর্গানাইজেশন, কসমিক স্পোর্টস এন্ড হেলথ, গ্রীন লীড, গ্লোবাল ইয়ুথ প্লাটফর্ম, মিশন গ্রিন বাংলাদেশ, নওজোয়ান, প্রাণপ্রকৃতি, উশার আলো যুব সংঘ, ইয়ুথ চেঞ্জ সোসাইটি, ইয়ুথ ইনোভেশন ফর অ্যাকশন ও ইয়ুথ ভয়েস ফর চেঞ্জ।
অনুষ্ঠানটির মূল উদ্দেশ্য ছিল পরিবেশ ও ন্যায়সঙ্গত পরিবর্তনের ওপর জ্বালানি শক্তি সম্প্রসারণের প্রভাব সম্পর্কে তরুণ প্রজন্মকে সচেতন করা এবং অর্থনৈতিক, বাস্তুতান্ত্রিক ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে জ্বালানি সম্প্রসারণের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা। প্রধান অতিথি ছিলেন প্রিমিয়ার উপাচার্য অধ্যাপক এস. এম. নছরুল কদির। তিনি বলেন, জ্বালানি সম্প্রসারণ ও সবুজ শক্তির ব্যবহার বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়। তবে আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত শুধুমাত্র জ্বালানির সম্প্রসারণ নয়, বরং তা যেন পরিবেশবান্ধব, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং ন্যায়সঙ্গত হয়। আজকের এই আলোচনা ভবিষ্যতের নেতৃত্ব তৈরিতে একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ ইফতেখার মনির উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, পরিবেশ সুরক্ষা এবং টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় সবসময় শিক্ষার্থীদের সচেতনতা ও অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করে। জ্বালানি ও পরিবেশের এই আন্তঃসংযোগ সম্পর্কে জানানো এবং আলোচনা করার জন্য এ ধরনের অনুষ্ঠান সময়োপযোগী উদ্যোগ।
বক্তব্য রাখেন ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিক্স এন্ড ফিন্যান্সিয়াল এনালাইসিসের (ওঊঊঋঅ) প্রধান বিশ্লেষক শফিকুল আলম। তিনি বলেন, জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের প্রতিটি সিদ্ধান্ত দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর গভীর প্রভাব ফেলে। অনাকাঙিক্ষত ও অদূরদর্শী শক্তি সম্প্রসারণ আমাদের অর্থনৈতিক চাপ বাড়াতে পারে। তাই জ্বালানির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় নবায়নযোগ্য উৎসে জোর দেওয়া প্রয়োজন।
বক্তব্য রাখেন ধরিত্রী রক্ষায় আমরার সদস্য সচিব শরীফ জামিল। তিনি বলেন, জ্বালানি প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় যদি বাস্তুতন্ত্রের প্রতি সম্মান না দেখানো হয়, তবে তা দীর্ঘমেয়াদে পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। এখনই আমাদের এমন শক্তি পরিকল্পনার প্রয়োজন, যা মানুষ ও প্রকৃতির মাঝে ভারসাম্য বজায় রাখে। তিনি সৌরবিদ্যুৎকে পরিবেশের উপযোগী ও কয়লা বিদ্যুৎকে পরিবেশ পর্যায়ের বিশাল কারণ বলেন উল্লেখ করেন।
তৃতীয় বক্তা ছিলেন ফসিল ফুয়েল নন–প্রলিফারেশন ট্রিটি ইনিশিয়েটিভের কৌশলগত উপদেষ্টা হারজিৎ সিং। তিনি বলেন, বিশ্ব এখন ধীরে ধীরে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে এসে নবায়নযোগ্য শক্তির দিকে এগোচ্ছে। কিন্তু এ পরিবর্তনটি যেন ন্যায়ভিত্তিক হয় এবং উন্নয়নশীল দেশগুলো যেন এতে পিছিয়ে না পড়ে, তা নিশ্চিত করাও জরুরি।প্রশ্নোত্তর পর্বে শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। শেষে কুইজ প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের হাতে সনদ তুলে দেন উপাচার্য। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আমানুল্লাহ পরাগ। অনুষ্ঠানে ডিরেক্টরেট অব স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ারের অ্যাডভাইজার ড. আবদুর রহিম ও প্রক্টর জনাব মোহাম্মদ সোলাইমান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।