শিশিরকুমার দাশ। কবি, গদ্যকার, নাট্যকার, অনুবাদক শিশুশাহিত্যিক। অনেকের মতে, তিনি ভারতীয় সাহিত্যের ইতিহাস লেখার ক্ষেত্রে প্রায় সম্পূর্ণ একক প্রচেষ্টায় তার লেখা তিন খণ্ডে ভারতীয় সাহিত্যের ইতিহাস, সাহিত্যের ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে এক অন্যতম মাইলফলক। এ ছাড়াও সাহিত্য অকাদেমি প্রকাশিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ইংরেজি রচনা সম্পাদনার কৃতিত্ব–ও তার। শিশির কুমারের জন্ম ১৯৩৬ সালের ৭ মে কলকাতায়। তার স্কুলজীবন কাটে কলকাতায়। ১৯৫১ সালে সাউথ সাবারবন (মেন) স্কুল থেকে ম্যাট্রিক; কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে সাম্মানিক স্নাতক হন ১৯৫৫ সালে । ১৯৫৬ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম কবিতার বই ‘জন্মলগ্ন’। তার পরের বছরেই ১৯৫৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হন। ডক্টরাল ডিগ্রি পান যুগপৎ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। প্রথম কয়েক বছর পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি কলেজে পড়ানোর পরে ১৯৬০ থেকে ১৯৬৩ সাল অবধি লন্ডনের স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজে শিক্ষকতা করেন। ভারতে ফিরে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্যস্থাপিত আধুনিক ভারতীয় ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে ২০০১ সালে তার অবসরের আগে অবধি অধ্যাপনা করেন। ভারতীয় তুলনামূলক সাহিত্য সংস্থার সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন বেশ কয়েক বছর। গ্রিক ভাষা থেকে তিনি একাধিক নাটক ও অ্যারিস্টটলের কাব্য গ্রন্থ অনুবাদ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলো হচ্ছে– কবিতা; ‘জন্মলগ্ন’, ‘হয়তো দরজা আছে অন্যদিকে’, ‘অবলুপ্ত চতুর্থ চরণ’, ‘বাজপাখির সঙ্গে কিছুক্ষণ’, শিশুসাহিত্য; ‘সোনার পাখি’, ‘তারায় তারায়’, ‘আর্গোস’, ‘মাইকেল’, ‘চিংড়ি’, ‘চাঁদমামা ও বাঘের মাসি’। প্রবন্ধ সংগ্রহ; ‘মধুসূদনের কবিমানস‘, ‘বাংলা ছোটগল্প‘, ‘চতুর্দশ‘, ‘গদ্য ও পদ্যের দ্বন্দ্ব’, ‘বিতর্কিত অতিথি’, ‘শাশ্বত মৌচাকঃ রবীন্দ্রনাথ ও স্পেন’, ‘কবিতার মিল ও অমিল’। তিনি ২০০৩ সালের ৭ মে মৃত্যুবরণ করেন।