শিরোপা জিতল কামাল এ খান একাদশ

মুজিব বর্ষ ফুটবল

ক্রীড়া প্রতিবেদক | সোমবার , ১৯ অক্টোবর, ২০২০ at ৪:৫৯ পূর্বাহ্ণ

মুজিব বর্ষ ফুটবল টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতেছে ডা. কামাল এ খান একাদশ। দীর্ঘদিন পর আয়োজিত কোন টুর্নামেন্টের ফাইনাল ঘিরে উৎসাহ উদ্দিপনার কমতি ছিল না। পুরো ৯০ মিনিটের ম্যাচে তেমন উত্তেজনা ছড়াতে না পারলেও ফলাফল নির্ধারণের শেষ অস্ত্র টাইব্রেকারকে ঘিরে ছিল টান টান উত্তেজনা। ডা. কামাল এ খান একাদশের ফুটবলাররা টাইব্রেকারের স্নায়ু চাপকে জয় করে জিতে নেন মুজিব বর্ষ ফুটবল টুর্নামেন্টের শিরোপা। টাইব্রেকারে তারা জিতেছে ৩-১ গোলে। ফলে অজেয় থেকে শিরোপা জেতা হলো না পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলা আবু তাহের পুতু একাদশের। শেষ ভাল যার সব ভালো তার। সে প্রবাদেরই যেন সত্যতা প্রমাণ করলো ডা. কামাল এ খান একাদশ। দেশের সেরা গোল রক্ষক আবু তাহের পুতু একাদশের শহীদুর রহমান সোহেল পারলেন না দলকে ট্রফি জেতাতে। অপরদিকে শতভাগ ফিট না থাকায় ফাইনালেও মাঠে নামেননি কামাল এ খান একাদশের অধিনায়ক এবং বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম। কিন্তু মাঠের বাইরে থেকে যেন দলকে দারুনভাবে উজ্জীবিত করতে পেরেছেন তিনি। যার ফল এই শিরোপা জয়। করোনাকালে দেশে প্রথমবারের মত আয়োজিত এই টুর্নামেন্টের ফাইনাল দেখতে মাঠে ছিলেন প্রায় ৬/৭ হাজার দর্শক। সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রামের কোন ফুটবল টুর্নামেন্টে এমন দর্শক খুব কমই দেখা গেছে।
খেলার শুরু থেকে বেশিরভাগ সময় বল ঘুরাফেরা করেছে মাঝ মাঠে। গোল করার মত তেমন আক্রমণ করতে পারেনি দু দলের কেউই। দুর থেকে দু একটা শট নিয়েছে এই যা। তবে প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে গোল করার মত একটি শট নিয়েছিল ডা. কামাল এ খান একাদশের এয়াছিন। আবু তাহের পুতু একাদশের ডি বক্সের সামনে ফ্রিকিক লাভ করে কামাল এ খান একাদশ। তৌহিদের নেওয়া কিকটি মানব দেওয়ালে লেগে ফিরে এলে ফিরতি বলে দারুন এক শট নিয়েছিলেন এয়াছিন। কিন্তু তার সে শট ক্রসবারে বাতাস লাগিয়ে চলে যায় বাইরে। প্রথমার্ধের ৪৫ মিনিটে সুযোগ বলতে সে একটিই। ফলে গোলশূন্য সমতায় শেষ হয় প্রথমার্ধ।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই দুদল ম্যাচে গতি ফেরানোর চেষ্টা করে। তবে মাঠে বল দখলের লড়াইয়ের চাইতে শরিরী লড়াইয়ের প্রবনতাটা যেন একটু বেশি দেখা গেছে। যার প্রমাণ মেলে এই অর্ধের ২৩ মিনিটে কামাল এ খান একাদশের মুন্না লাল কার্ড দেখে মাঠ ত্যাগ করলে। পরপর দুই হলুদ কার্ডের কারণে তাকে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয়। ম্যাচের বাকি সময়টা কামাল এ খান একাদশ দশজন নিয়ে খেললেও সে সুযোগটাকে কাজে লাগাতে পারেনি আবু তাহের পুতু একাদশের স্ট্রাইকাররা। যদিও ২৮ মিনিটে ভাল একটা সুযোগ এসেছিল পুতু একাদশের সামনে। কিন্তু ডি বক্সের বাইরে থেকে সাহেদ যে শট নেন তা ক্রসবার ঘেষে চলে যায় বাইরে। ৪১ মিনিটে এগিয়ে যেতে পারতো ডা. কামাল এ খান একাদশও। কিন্তু ডান প্রান্ত থেকে মহিবুল্লাহর বাড়ানো বলে জাহেদ যে শট নেন তা গোল রক্ষক সোহেল অসাধারন দক্ষতায় কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করে। ইনজুরি টাইমে মুহিবুল্লার আর একটি কোনাকোনি শট ক্রসবার ঘেষে বাইরে চলে গেলে অমিমাংসিতই থেকে যায় দুই দলের ৯০ মিনিটের লড়াই। ফলে ম্যাচ গড়ায় সরাসরি টাইব্রেকারে।
স্নায়ুক্ষয়ী সেই টাইব্রেকারে দু দলই শুরুটা করেছিল গোল দিয়ে। পুতু একাদশের শুভ এবং কামাল এ খান একাদশের জমির দুজনই লক্ষ্য ভেদ করেন। কিন্তু দ্বিতীয় শটেই ছন্দ পতন। পুতু একাদশের সাহেদের শট রুখে দেন গোল রক্ষক উত্তম। আর কামাল এ খান একাদশের জাহেদুল মেরে দেন ক্রসবারের উপর দিয়ে। তবে পরের দুই শটে আবু তাহের পুতু একাদশের রহিম এবং মানিক মেরে দেন ক্রসবারের উপর দিয়ে। অপরদিকে ডা. কামাল এ খান একাদশের পাভেল এবং সজিব কোন ভুল করেননি। দেশের সেরা গোল রক্ষক সোহেল পারেননি এই দুজনের শট রুখে দিতে। ফলে সজিবের শট জালে জড়ানোর সাথে সাথেই শিরোপা জয়ের উল্লাসে মাতে ডা. কামাল এ খান একাদশের খেলোয়াড় কর্মকর্তারা।
খেলা শেষে পুরষ্কার বিতরণ করেন সিজেকেএস সাধারণ সম্পাদক আ.জ.ম. নাছির উদ্দিন। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নব নির্বাচিত সভাপতি কাজি মোঃ সালাহউদ্দিন প্রধান অতিথি হিসেবে আসার কথা থাকলেও অসুস্থাতার কারণে তিনি আসতে পারেননি বলে জানান আয়োজকরা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন টুর্নামেন্ট কমিটির সম্পাদক মোঃ শাহজাহান। বক্তব্য রাখেন মধ্যে উপস্থিত ছিলেণ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও সিজেকেএস সহ সভাপতি আবু হাসান সিদ্দিক, সহ সভাপতি দিদারুল আলম চৌধুরী, এহছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল, যুগ্ম সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, মশিউর রহমান চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন মোঃ জাহাঙ্গীর, ফুটবল সম্পাদক মোঃ ইউসুফ সহ জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সিজেকেএস নির্বাহি সদস্য হাসান মুরাদ বিপ্লব।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএলেন না কাজি সালাহউদ্দিন
পরবর্তী নিবন্ধভাসানচরে কেন যায় না রোহিঙ্গারা