সীতাকুণ্ডে আগাম জাতের রূপবান শিম চাষে লাভবান হয়েছেন তিন শতাধিক কৃষক। শিমের আশানুরূপ ফলন ও বাজারদর ভালো থাকায় খুশি তারা। ইতিমধ্যে উপজেলার হাট-বাজার দখল করে নিয়েছে রূপবান শিম। ফলনের প্রথম পর্যায়েই কৃষকেরা আবাদ খরচ তুলে লাভের দেখা পেয়েছেন। এদিকে মৌসুমের শুরুতে শিম কিনতে পেরে খুশি ক্রেতারাও।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ২৫ হেক্টর জমিতে ইপসা-১ ও ইপসা-২ আগাম জাতের রূপবান শিমের চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে উপজেলার বারৈয়ারঢালা ইউনিয়নের টেরিয়াইল ব্লকের ১০ হেক্টর ও সৈয়দপুর ইউনিয়নের ৫ হেক্টর জমিতে এই জাতের শিমের চাষ করা হয়েছে। সরেজমিন দেখা যায়, জমিতে শিমের লতা ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে। সেই সঙ্গে থোকায় থোকায় ঝুলছে শিম। জমিতে পরিচর্যার পাশাপাশি বাজারে বিক্রির জন্য কৃষকদের শিম তুলতে দেখা গেছে। এদিকে ফুল ও তাজা শিমের থোকা পথচারীদেরও মুগ্ধ করছে।
বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের হাতিলোটা এলাকার কৃষক জহিরুল আলম বলেন, আগাম জাতের এ রূপবান শিম বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে লাগানো হয়। আশ্বিন-কার্তিক মাসে গাছে ফলন আসে। শীতের আগে বাজারে আসায় এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তিনি বাজারে প্রতি কেজি শিম ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি করছেন বলে জানান।
পৌরসভার নুনাছড়া এলাকার কৃষক আরব আলী বলেন, এবার তিনি ১৬০ শতক জমিতে আগাম জাতের রূপবান শিম চাষ করেছেন। শিমের কঞ্চি, শ্রমিকের মজুরি ও কীটনাশক বাবদ তার ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আশ্বিন মাসের শুরু থেকে এরইমধ্যে তিনি লক্ষাধিক টাকার শিম বিক্রি করেছেন। শুরুতে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি শিম ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে তার জমি থেকে আরও দুই লাখ টাকার শিম বিক্রির আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
বারৈয়ারঢালা ইউনিয়নের টেরিয়াইল এলাকার কৃষক মানিক ও আজাদ হোসেন বলেন, তারা দুজনে ১০০ শতক জমিতে রূপবান শিম চাষ করেছেন। সপ্তাহে তিন দিন বা দুই দিন তুলে বাজারে বিক্রি করেন। শীতের আগে শিম আসায় বাজারে কদরও বেশি। তবে শীতকালীন শিম বাজারে এলে দাম কমে যাবে। এ সময় কৃষকেরা এ শিম না তুলে তার বিচি (খাইস্যা) সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করবেন।
টেরিয়াইল ব্লকের দায়িত্বরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা পিপাস কান্তি চৌধুরী বলেন, আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবং সঠিক পরিচর্যার কারণে পোকার আক্রমণ কম হয়েছে। এতে আশানুরূপ ফলন পেয়েছেন কৃষকেরা। এবার রূপবান শিমের বাজারদর ভালো। কৃষকেরা আগের চেয়ে লাভবান হয়েছেন বেশি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিব উল্ল্যা বলেন, শিমের জন্য দেশব্যাপী সীতাকুণ্ডের ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। এখানকার মাটি শিম চাষের উপযোগী হওয়ায় প্রতিবছর এখানে বিভিন্ন প্রজাতির শিম চাষ হয়। তবে শীতকালীন মৌসুমের শিমের পাশাপাশি আগাম জাতের শিম চাষে সফলতা পেয়েছেন এখানকার কৃষকেরা। এবার উপজেলার তিন শতাধিক কৃষক রূপবান শিমে লাভবান হয়েছেন।












