শিক্ষা হোক আনন্দের

নাজনীন আমান | সোমবার , ২ অক্টোবর, ২০২৩ at ৪:৪১ পূর্বাহ্ণ

শিক্ষা একজন মানুষের মৌলিক অধিকার। আর সেই শিক্ষা যদি হয় আনন্দের সাথে তাহলে সেটির ফলাফল হয় চমৎকার। বিদ্যালয় কিংবা স্কুল যে নামেই ডাকা হোক না কেন সেটি হল শিক্ষা আদান প্রদানের প্রতিষ্ঠান। এখান থেকে একজন শিশুর বিভিন্ন রকম শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, আচার আচরণ, ব্যবহার, চারিত্রিক গঠন বলতে গেলে সকল কিছুই প্রস্ফুটিত হয় যা তার পরবর্তী জীবন গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। ক্যান্টনমেন্ট ইংলিশ স্কুল এন্ড কলেজ চট্টগ্রামের একটি স্বনামধন্য ও সুপরিচিত স্কুল। যার অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক পরিবেশ যে কাউকে মুগ্ধ করতে বাধ্য। এর শিক্ষাগত মান, শিক্ষকদের পাঠদানের বৈশিষ্ট্য ও নৈপুন্যতা, অধ্যক্ষ মহোদয়ের বিচক্ষণতা ও দক্ষ ব্যবস্থাপনা এই স্কুলকে সেরা স্কুলের সফলতা এনে দিয়েছে। সেপ্টেম্বর মাস জুড়ে এই স্কুলে অনুষ্ঠিত হয়েছে এক ভিন্নধর্মী আয়োজন আর তা হল আনন্দের সাথে শিখন। এটি প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের খেলার ছলে ছোট ছোট কাজগুলো শেখানোর একটি প্রচেষ্টা। এটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিখন কার্যক্রমকে আনন্দমুখর করে তোলার উদ্দেশ্যে শ্রেণিভিত্তিক দলীয় প্রতিযোগিতা। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের ছোট ছোট কাজগুলোই কিন্তু ছিল খেলার আইটেম হিসেবে। যেমন : স্কুলের ব্যাগ গুছানো, জুতার ফিতা বাঁধা, কাপড় ভাঁজ করা, পাউরুটিতে জ্যাম বা বাটার লাগানো, সুঁইয়ে সুতা লাগানো, ঝুটি বাঁধা, সেদ্ধ ডিমের খোসা ছাড়ানো ইত্যাদি। এগুলো কিন্তু আমরা অভিভাবকরা কম বেশি বাচ্চাদের শিখাতে পারি না কিংবা করতে দিই না। কিন্তু এগুলো করতে পারা বা জানা ভীষণ দরকার। এতে করে বাচ্চা পরনির্ভরশীল না হয়ে আত্মনির্ভরশীল ও আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠে। স্কুল থেকে যখন জানানো হল এই রকম একটি কার্যক্রমের কথা বাচ্চারা এতে আনন্দ অনুভব করল। বাসায় অবসর সময়ে বিষয় গুলো চর্চাও করতে লাগলো। যা সত্যিই ছিল দারুণ। শরতের রোদের চোখ রাঙানো কিংবা হঠাৎ বৃষ্টির খেলাকে, উপেক্ষা করে যার যার শ্রেণির নির্দিষ্ট দিনে শিক্ষার্থীরা ছিল ভীষণ উৎফুল্ল ও সতেজ এবং তাদের উপস্থিতির হারও ছিল আশাতীত। ভীষণ উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে। শ্রেণির যেই শাখার শিক্ষার্থীরা বেশি কর্মদক্ষ তাদেরকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। আর সেই পুরস্কার পুরো শাখার যা শিক্ষার্থীরা তাদের শ্রেণিকক্ষেই রেখেছে। এই অর্জন তাদের সবার। পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, সুআচরণ, ভ্রাতৃত্ববোধ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, দলীয় ভাবে কোনও কাজ করলে তার ফলাফল যে কত ইতিবাচক এবং মসৃণ হয় তাই তারা শিখল এই খেলা থেকে যা তাদের পরবর্তী জীবনকে সুচরিত করবে। পরিশেষে বলি এই ধরনের আনন্দময় শিক্ষা কিংবা খেলার ছলে শিক্ষা আরও চালু হোক যাতে শিক্ষার্থীরা শুধু শিক্ষাই নয় বরং প্রকৃত জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হয়। জীবনকে বুঝতে শিখুক, জানতে শিখুক এবং আত্মপ্রত্যয়ী ও নিজস্ব বুদ্ধিমত্তা দিয়ে জীবনের সকল পদক্ষেপে সফলতা অর্জন করুক। শৈশব যা হারিয়ে যাচ্ছিল মোবাইল, ইন্টারনেটের মোহে, তা ফিরে আসুক উৎফুল্ল, উল্লাসে; স্মৃতিময় করে রাখুক তাদের মনের ডায়েরীতে। স্কুলের সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তাকর্মচারীদের জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ যাঁরা সব কিছু অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে আয়োজনটিকে সফল করেছেন। অধ্যক্ষ লে.কর্নেল মোহাম্মদ তানভীর হোসেন ও প্রত্যেক শ্রেণির বিজয়ী দল ও শিক্ষার্থীদের জানাই অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাঁশখালীতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় চাই
পরবর্তী নিবন্ধআমার দেশ আমার শহর