শিক্ষা দিয়ে পৃৃথিবী পাল্টে ফেলা যায়

কাপ্তাইয়ে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আজাদী সম্পাদক

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ১৬ মার্চ, ২০২২ at ১০:২৭ পূর্বাহ্ণ

একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সংবাদপত্র দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক বলেছেন, লেখাপড়ার কোনো বিকল্প নেই। একমাত্র শিক্ষা, শিক্ষাই পারে পিছিয়ে পড়া একটি জাতিকে এগিয়ে নিতে।
গতকাল দুপুরে কাপ্তাইয়ের বড়ইছড়ি নুরুল হুদা কাদেরী উচ্চ বিদ্যালয় আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। একুশে পদকে ভূষিত হওয়ায় তাকে এই সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। নেলসন ম্যান্ডেলাকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, শিক্ষা হচ্ছে এমন একটা অস্ত্র, যা দিয়ে পৃথিবীকে পরিবর্তন করে দেয়া সম্ভব। আর নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাইকে উদ্ধৃত করে বলেন, একটি কলম, একটি সন্তান এবং একটি বই পৃথিবী পাল্টে দিতে পারে। তিনি বলেন, সর্বক্ষেত্রে শিক্ষার জয়গান রচিত হয়েছে এবং জগতের সব উন্নত দেশ কেবলমাত্র শিক্ষাকে পুঁজি করেই উন্নত হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আজাদী সম্পাদক বলেন, তোমরা আমাদের বর্তমান। এই বর্তমানই আমাদের সবকিছু। এই বর্তমানকে কাজে লাগিয়ে তোমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে হবে।
তিনি বলেন, পৃথিবীতে মাত্র তিনজন মানুষ কোনো স্বার্থ ছাড়া তোমাদের ভালোবাসেন। তোমাদের কল্যাণ কামনা করেন। তোমাদের উন্নতিতে খুশি হন। এই তিনজনের একজন হচ্ছেন তোমার মা, দ্বিতীয়জন তোমার বাবা এবং তৃতীয়জন তোমার শিক্ষক। এই তিনজনই পূজনীয়। তাদের অবাধ্য হইও না। শিক্ষকদের সবসময় শ্রদ্ধা করবে, সম্মান করবে। বই পড়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, তোমরা বই পড়বে। বই পড়লে জ্ঞান বৃদ্ধি পাবে। ফলে নতুন নতুন জিনিস জানতে পারবে। জীবনে স্বপ্ন দেখতে হবে। তবে ঘুমে নয়, জেগে জেগে স্বপ্ন দেখতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী। স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক রাজেশ ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন লায়ন্স ক্লাবস ইন্টারন্যাশনাল ডিস্ট্রিক্ট ৩১৫বি৪ এর সাবেক গভর্নর লায়ন কামরুন মালেক, কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির জাহান, কর্ণফুলী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ এ এইচ এম বেলাল চৌধুরী, দৈনিক আজাদীর চিফ রিপোর্টার হাসান আকবর, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের মাসুদ, স্কুলের দাতা সদস্য মোরশেদুল আলম কাদেরী ও খোরশেদুল আলম কাদেরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক জয়সীম বড়ুয়া।
স্রোতের মতো মানুষ বাড়ছে উল্লেখ করে বিশেষ অতিথি লায়ন কামরুন মালেক বলেন, কিন্তু প্রকৃত মানুষ বাড়ছে না। আমাদের প্রকৃত মানুষ দরকার। তিনি ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার প্রতিযোগিতার চেয়ে মানবিক মানুষ হওয়ার প্রতিযোগিতা করা বেশি দরকার বলে মন্তব্য করেন। তিনি বিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রীর চোখের সমস্যা দেখতে পেয়ে তাদেরকে লায়ন্স চক্ষু হাসপাতালে অপারেশনের মাধ্যমে সুস্থ করে তোলার আশ্বাস দেন। এজন্য প্রয়োজনীয় অর্থ নিজস্ব তহবিল থেকে প্রদান করবেন বলেও জানান।
পরে সংবর্ধিত অতিথি এম এ মালেক ও কামরুন মালেক স্কুলের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উদ্বোধন করেন। প্রতিযোগিতার বিভিন্ন ইভেন্টে শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এর আগে স্কুলের সঙ্গীত শিক্ষক জ্যাকলিন তনচংগ্যা ও ঝুলন দত্তের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৯২ সালে ১৩ জন শিক্ষার্থী নিয়ে প্রতিষ্ঠিত বড়ইছড়ি নুরুল হুদা কাদেরী উচ্চ বিদ্যালয় বর্তমানে কাপ্তাইয়ের অন্যতম শীর্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅন্য দেশের তুলনায় দ্রব্যমূল্য ‘কমই বেড়েছে’: তথ্যমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬