শিক্ষাবোর্ডের তদন্ত কমিটি, থানায় জিডি

মোট নম্বর ২০০, পেল ২১৮!

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ৫:৪৮ পূর্বাহ্ণ

রোববার এইচএসসির ফল প্রকাশের পর চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের ওয়েবসাইটে পরীক্ষার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর প্রদর্শনে অসঙ্গতির ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ। গতকাল সোমবার শিক্ষাবোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল আলীম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ কমিটি গঠনের তথ্য জানানো হয়।
পটিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ মোজাম্মেল হককে প্রধান করে গঠিত কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এ এইচ এম সাজেদুল হক ও চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সহকারী সচিব সম্পাতা তালুকদার। বিষয়টি তদন্ত পূর্বক সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে কমিটিকে।
এদিকে, একই ঘটনায় পাঁচলাইশ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছে শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ। গতকাল বিকেলে শিক্ষাবোর্ডের পক্ষ থেকে এ জিডি করা হয়। জিডির তথ্য নিশ্চিত করে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল কবির আজাদীকে বলেন, এইচএসসির ফল প্রকাশের পর বোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রদর্শন করা পরীক্ষার্থীদের প্রাপ্ত নম্বরে ব্যাপক অসঙ্গতি ধরা পড়ে। যা চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড তথা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার ষড়যন্ত্র বলে অভিযোগ শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষের। এমন অভিযোগেই শিক্ষাবোর্ডের পক্ষ থেকে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। জিডি তদন্তে আদালতের অনুমতির প্রয়োজন হয় জানিয়ে ওসি জাহিদুল কবির বলেন, আমরা অনুমতি চেয়ে আদালতের কাছে লিখবো। অনুমতি পেলে এ বিষয়ে আমাদের তদন্ত শুরু হবে।
থানায় জিডি ও তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের তথ্য নিশ্চিত করেছেন শিক্ষাবোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল আলীম।
প্রসঙ্গত, এবার (২০২১ সালে) তিনটি বিষয়ে পরীক্ষায় বসতে হয়েছে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের। গ্রুপ ভিত্তিক যে তিনটি বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হয়েছে, এর প্রতিটিতে দুটি করে পত্র রয়েছে। প্রতি পত্রে একশ করে দুটি পত্র মিলে একটি বিষয়ে মোট নম্বর (মার্কস) ২০০। অর্থাৎ একটি বিষয়ে ২০০ নম্বরের মধ্য থেকেই শিক্ষার্থীদের নম্বর দেয়া হয়। কিন্তু মোট নম্বর ২০০ হলেও দুই পত্র মিলে একটি বিষয়ে দুইশর বেশি নম্বরও পেয়েছে একাধিক শিক্ষার্থী। এক বিষয়ে ২১৮ নম্বর পাওয়া একাধিক শিক্ষার্থীর নম্বর ফর্দ আজাদীর হাতে এসেছে। এছাড়া দুপুরে ফল প্রকাশের পরপর ওয়েবসাইটে পাওয়া নম্বর ফর্দে প্রাপ্ত নম্বর সন্ধ্যা গড়াতেই পাল্টে গেছে। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশের ক্ষেত্রে এই নম্বর পাল্টে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
কোনো কোনো নম্বর ফর্দে আবার প্রাপ্ত নম্বর ‘এ’ প্লাসের হলেও গ্রেড উল্লেখ করা হয়েছে ‘এ’ মাইনাস। এইচএসসির মতো পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলে এমন হ-য-ব-র-ল অবস্থায় যারপরণাই ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। শিক্ষাবোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অদক্ষতা ও অব্যবস্থাপনার কারণেই এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করেন তারা। বহু অভিভাবক এ নিয়ে চরম উৎকন্ঠা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এ নিয়ে গতকাল দৈনিক আজাদীর প্রথম পাতায় ‘মোট নম্বর ২০০, পেল ২১৮! দুপুরে প্রাপ্ত নম্বর পাল্টে গেল সন্ধ্যায়’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদন প্রকাশের পর গতকালই এ বিষয়ে থানায় জিডির পাশাপাশি ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করল শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রকাশিত ছবির দুজন অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধপ্রেমিকের সন্দেহ থেকেই খুন