শাহ আবদুল করিম : বাউল সম্রাট

| সোমবার , ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ৫:২০ পূর্বাহ্ণ

উস্তাদ শাহ আবদুল করিম। তিনি একজন কিংবদন্তী সংগীতশিল্পী, সুরকার, গীতিকার ও সংগীত শিক্ষক। তিনি বাউল সংগীতকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান। কর্মজীবনে তিনি পাঁচশো-এর উপরে সংগীত রচনা করেছেন। বাংলা সংগীতে তাঁকে ‘বাউল সম্রাট’ হিসাবে সম্বোধন করা হয়। শাহ আবদুল করিম ১৯১৬ সালের ১৫ ফেব্রুযারি সিলেটের সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম ইব্রাহিম আলী ও মায়ের নাম নাইওরজান। তিনি খুব ছোটবেলায় তার গুরু বাউল শাহ ইব্রাহিম মাস্তান বকশ থেকে সংগীতের প্রাথমিক শিক্ষা নেন। ভাটি অঞ্চলের মানুষের জীবনের সুখ প্রেম-ভালোবাসার পাশাপাশি তার গান কথা বলে সকল অন্যায়, অবিচার, কুসংস্কার আর সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে। তিনি তার গানের অনুপ্রেরণা পেয়েছেন প্রখ্যাত বাউলসম্রাট ফকির লালন শাহ, পুঞ্জু শাহ এবং দুদ্দু শাহ এর দর্শন থেকে। তিনি শরীয়তী, মারফতি, দেহতত্ত্ব, গণসংগীতসহ বাউল গান এবং গানের অন্যান্য শাখার চর্চাও করেছেন। শিক্ষিত বাউল শাহ আব্দুল করিম এ পর্যন্ত প্রায় পাঁচ শতাধিক গান লিখেছেন এবং সুরারোপ করেছেন। বাংলা একাডেমির উদ্যোগে তার ১০টি গান ইংরেজিতে অনূদিত হয়েছে। কিশোর বয়স থেকে গান লিখলেও কয়েক বছর আগেও এসব গান শুধুমাত্র ভাটি অঞ্চলের মানুষের কাছেই জনপ্রিয় ছিল। তার মৃত্যুর কয়েক বছর আগে বেশ কয়েকজন শিল্পী বাউল শাহ আবদুল করিমের গানগুলো নতুন করে গেয়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করলে তিনি দেশব্যাপী পরিচিতি লাভ করেন। বাউল শাহ আবদুল করিমের এ পর্যন্ত ৭টি গানের বই প্রকাশিত হয়েছে। শাহ আবদুল করিমের জীবনভিত্তিক প্রথম উপন্যাস সাইমন জাকারিয়া রচিত ‘কূলহারা কলঙ্কিনী’ প্রকাশিত হয়েছে ২০১৭ সালে। বাংলা একাডেমি তার দশটি গানের ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশ করে। শাকুর মজিদ তাকে নিয়ে নির্মাণ করেছেন ভাটির পুরুষ নামে একটি প্রামাণ্য চিত্র। বাউল শাহ আবদুল করিম ২০০১ সালে একুশে পদক লাভ করেন। ২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিম মৃত্যু বরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধদৈনিক আজাদীর পথচলা