লোকসাহিত্যের গবেষক মুহাম্মদ ইসহাক চৌধুরী

নেছার আহমদ | মঙ্গলবার , ২৩ নভেম্বর, ২০২১ at ৬:১৮ পূর্বাহ্ণ


প্রাচীন ও লোকসাহিত্যের গবেষক হিসেবে ইতিহাসে যে কয়জন মহান ব্যক্তিত্বের সন্ধান মিলে তাঁরা হলেন হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ, দীনেশ চন্দ্র সেন, নীহার রঞ্জন রায়, স্যার যদুনাম সরদার, রাখাল দাশ বন্দোপাধ্যায়, নলিনীকান্ত ভট্টশীল, ড. আহাম্মদ হাসান দানী, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, আর. সি মজুমদার, অধ্যাপক মনসুর উদ্দীন, ড. এনামুল হক, অধ্যাপক সালাহউদ্দীন আহমদ, অধ্যাপক মমতাজুর রহমান তরফদার, ড. মোহর আলী, ড. আব্দুল গফুর, ড. আব্দুল করিম, আশুতোষ চৌধুরী, ড.আহম্মদ শরীফ, ড. আবদুল হক চৌধুরী মতো প্রাতঃস্মরণীয় মহাপুরুষদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে পুঁথি সাহিত্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে অন্যতম পুরোধা শিক্ষক আবদুস সাত্তার চৌধুরীর ছত্রছায়ায় ও স্নেহধন্যে শেষ মাইল ফলক বা গবেষক হিসেবে খ্যাত হয়ে আছেন হাজার বছরের লোকসাহিত্যের ধারক চট্টগ্রামের পটিয়ার কৃতী সন্তান মুহাম্মদ ইসহাক চৌধুরী।
ইসহাক চৌধুরী একাধারে লেখক, গবেষক, পুঁথি সাহিত্যের বিশেষজ্ঞ ও ইতিহাসের মহান ব্যক্তিত্ব। বিশিষ্ট পুঁথি গবেষক মুহাম্মদ ইসহাক চৌধুরী ১৯৫২ এর ৩০ জুনে পটিয়া উপজেলার দক্ষিণ হুলাইন গ্রামের প্রসিদ্ধ প্রাচীন ও সাহিত্যিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা পুঁথিবিশারদ আবদুস সাত্তার চৌধুরী, মা ছবিলা খাতুন পটিয়া জিরি গ্রামের করম আলী সুবেদার বংশের অভিজাত পরিবারের মেয়ে। আবদুস সাত্তার চৌধুরী সাহিত্য বিশারদের অনুপ্রেরণায় পুঁথি সংগ্রাহক হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন এবং বাংলা একাডেমি নিয়োজিত পুঁথি ও লোক সাহিত্যের সংগ্রাহক ও গবেষক হিসেবে কাজ করেন।
ইসহাক চৌধুরী স্থানীয় স্কুলে লেখাপড়ার হাতেখড়ি। পরবর্তীতে ১৯৭২ সালে হুলাইন ছালেহ নূর ডিগ্রী কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বি.এ অনার্স (বাংলা) ভর্তি হন। ১৯৭৭ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘরে পুরাকীর্তি সংগ্রহে অনিয়োজিত সংগ্রাহক হিসেবে কাজ করেন।
১৯৭৯ সালে হাটহাজারী লালিয়ারহাট সিনিয়র মাদ্রাসায় প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের মধ্য দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে গবেষণা ও লোকসাহিত্যের প্রতি আগ্রহ এবং পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরী অফিসার, লোকসাহিত্যে ও প্রাচীন সাহিত্য সংগ্রাহক ও গবেষক হিসেবে কাজ করেছেন।
১৯৭০ সালের ছাত্রাবস্থা থেকেই পিতা আবদুস সাত্তার চৌধুরীর হাতে প্রাচীন পুঁথি পাণ্ডুলিপি ও লোকসাহিত্য সংগ্রহ কাজের হাতেখড়ি। পিতার লোকসাহিত্য প্রীতি, দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগের সাধনাকে ধারণ করে নিজেকে পরিচিত ও প্রতিষ্ঠিত করে তোলার চেষ্টা করেছেন এবং সে হিসেবে নিজেকে গড়ে নিয়েছেন। একটি মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক হিসেবে জীবন শুরু করেও তিনি বৃহত্তর চট্টগ্রামের অঞ্চলে অঞ্চলে, মাঠে মাঠে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন হারানো মানিক বা অবলুপ্ত প্রায় সম্পদের নষ্টোদ্বারে। তাঁর দায়িত্বকালীন সময়ে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘরে ও গ্রন্থাগারে প্রাচীন পুঁথি ও পাণ্ডুলিপি ছাড়াও বহু পুরোকীর্তি সংগ্রহ করে বিশ্ববিদ্যালয়কে সমৃদ্ধ করেছেন।
তাঁর সংগ্রহের মধ্যে ফতেয়াবাদস্থ ফকির তাকিয়া থেকে প্রাপ্ত (তাঁর আবিস্কৃত) সম্রাট আওরঙ্গজেবের নামাঙ্কিত একটি মধ্যযুগীয় শিলালিপি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এ পর্যন্ত দু’হাজারের অধিক পুঁথির পাণ্ডুলিপি তিনি সংগ্রহ করেছেন। তিনি বাংলা ভাষা ভিন্ন দ্বিভাষী পুঁথিও সংগ্রহ করেছেন। এ দ্বিভাষী পুঁথির সংখ্যা প্রায় পাঁচশত। এগুলোর মধ্যে কিছু কিছু এখনও বিভিন্ন নামী ব্যক্তিদের কাছেই জমা পড়ে আছে। কিছু কিছু তাঁর পিতা আবদুস সাত্তার চৌধুরীর নামে প্রতিষ্ঠিত সংগ্রহ শালায় সংরক্ষিত আছে। সংগৃহীত এসব পুঁথির রচনাকাল ষোড়শ শতক থেকে পরবর্তী কয়েক শতক বলে প্রতিয়মান। পাণ্ডুলিপি এবং প্রাচীন কিছু দুর্বোধ্য ও মূল্যবান দলিলের পাঠোদ্বার ইসহাক চৌধুরীর অনন্য কীর্তি। এ সবের ভিত্তিতে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ছড়িয়ে থাকা তাঁর অগণিত প্রবন্ধ সংখ্য দুই শতাধিক। (লোকসাহিত্যের ভিতর ও বাহির, দ্বিতীয় সংস্করণ ২০২০ : ১৬৩ পৃষ্ঠা)। ইসহাক চৌধুরীর সংগৃহীত পুঁথি পাণ্ডুলিপি ও লোকসাহিত্য সমূহ বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, বাংলা একাডেমি, লোক কারুশিল্প ফাউন্ডেশন, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘর সহ আবদুস সাত্তার চৌধুরী পুঁথিশালায় এগুলো সংরক্ষিত আছে। তিনি নিজ প্রচেষ্টায় তাঁর সংগৃহীত এসব প্রাচীন দুস্প্রাপ্য পুঁথি পাণ্ডুুলিপি, দলিল-দস্তাবেজ, দুর্লভ মুদ্রা ও গ্রন্থ সাময়িকী সহ আরো অনেক দুর্লভ সামগ্রী’র প্রদর্শনীয় আয়োজন করেছেন বেশ ক’বার। প্রথমবার ৮ মার্চ ১৯৯৬ পটিয়াস্থ নিজ গ্রামে, ২০০১ সালে বৃহত্তর চট্টগ্রাম উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির উদ্যোগে মুসলিম হলে, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৩ সালে পটিয়াস্থ হুলাইন গ্রামে, চট্টগ্রাম ডিসি হিলে লোক উৎসব ও পুরাতনী মেলা-২০০৬ ও ২০১০ সালে, ১৪-১৫ মে ২০১৫ সালে চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমিতে।
একজন ফোকলোরিস্ট হিসেবেও দেশে তাঁর বিশেষ খ্যাতি রয়েছে। মুহাম্মদ ইসহাক চৌধুরী সংগৃহীত পবিত্র কোরানের পাণ্ডুলিপি প্রায় অর্ধশতাধিক। যার মধ্যে সর্বপ্রাচীন ১০৯৫ হিজরী ও ১০৯৪ হিজরী সনের মোগল যুগের। ১৯৭৩ হতে ১৯৮৩ সময়কালের মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘরে প্রাচীন পুঁথি ও পাণ্ডুলিপি ছাড়াও প্রচুর চট্টল পুরাকীর্তি তিনি সংগ্রহ করে দেন। ১৯৭৬ সালে হাটহাজারীর ফতেয়াবাদস্থ ফকিরতাকিয়া থেকে ফার্সি হরফে সম্রাট আওরঙ্গজেবের নামঙ্কিত একটি প্রাচীন শিলালিপি আবিষ্কার করেন যা আমি ইতিপূর্বে উল্লেখ করেছি। এটিও তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জাদুঘরে সংরক্ষণ ও গবেষণার জন্য উপহার দেন।
তিনি বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশ লোক-সংস্কৃতির বিকাশ’ ২০১২ এ প্রকল্পের অধীনে চট্টগ্রামে সংগ্রাহক হয়ে কাজ করেছেন। ঢাকায় জাতীয় গ্রন্থাগার বর্ষ উপলক্ষ্যে ‘প্রাথমিক শিক্ষায় দুস্প্রাপ্য পাঠ্যপুস্তক : দেশী ও বিদেশী’ শীর্ষক সেমিনারে সভাপতির দায়িত্ব পালন ও ‘বাংলা পুঁথির সংগ্রহ ও সংগ্রাহক শতবর্ষের শ্রদ্ধাঞ্জলি’ শীর্ষক সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। ২০১১ সালের ১৪ মে চট্টগ্রাম সমিতি ঢাকার উদ্যোগে চট্টল লেখক সম্মেলনের সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপনসহ আরো অনেক সংগ্রহ ও লোকসাহিত্য বিষয়ক সভা-সেমিনারে তিনি নিয়মিত অংশগ্রহণ করেন।
১৯৯২ সালে চট্টগ্রাম বেতারে মুন্সী আব্দুল করিম সাহিত্যবিশারদের ব্যক্তিজীবন শীর্ষক প্রবন্ধ পাঠ, ২০১১ সালে বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রে মরমী কবি আস্কর আলী পণ্ডিতের জীবন ও কর্ম শীর্ষক সভায় অতিথি আলোচক, ২০১২ সালে বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রে শ্রদ্ধাঞ্জলির ’ ৯২ তম পর্বে আলোচনা সভায় আলোচক হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ লোকসংগীত সম্মেলন ২৯ ফেব্রুয়ারী ২০০৮ সালে এশিয়াটিক সোসাইটি মিলনায়তনে মুহাম্মদ ইসহাক চৌধুরী ও তাঁর দলের পুঁথি আসরে পুঁথি পাঠ করে সকলকে হতবাক করে দেন। সে সময় এটি খুবই আলোচিত হয়।
তিনি প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ গুণীজন স্মৃতি পরিষদ, পটিয়া। প্রতিষ্ঠাতা আবদুস সাত্তার চৌধুরী পুঁথিশালা, পটিয়া। সাবেক সভাপতি ও আজীবন সদস্য সৃজনশীল সাহিত্য গোষ্ঠী (মালঞ্চ), পটিয়া। সাধারণ সম্পাদক সাহিত্যরত্ন নূর মোহাম্মদ চৌধুরী স্মৃতি পরিষদ, চট্টগ্রাম। উপদেষ্টা সদস্য চট্টগ্রাম একাডেমি সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সমাজসেবক ও সংগঠক হিসেবে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন।
তাঁকে নিয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় আলোচনা প্রবন্ধ ও প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে এবং বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে তাকে নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হয়েছে। এছাড়াও The Man with 2000 Puthis শিরোনামে The Daily tar- এ একটি মূল্যায়ণ প্রতিবেদন, You Tube Video (Star Live) ২৩ এপ্রিল ২০১৬ ইং ০২-০৩ এপ্রিল ২০১৫ ইং চ্যানেল ৭১ টিভিতে ‘পুঁথি বন্ধনা’ স্বল্প দৈর্ঘ্যের প্রতিবেদন ও ২০০৭ সালে ঊঞঠ-তে মুহাম্মদ ইসহাক চৌধুরীর সংগ্রহ নিয়ে সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়। যা দেশব্যাপী ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়।
তিনি একজন নীরব সাধক, নিভৃত গবেষক, শান্ত, ধীর, অপ্রকাশী স্বভাব এবং নির্লোভ মানুষের প্রতিচ্ছবি। তিনি সম্মান পাওয়ার জন্য আদৌ প্রত্যাশী ছিলেন না। প্রচুর মূল্যবান কাজ থাকা সত্ত্বেও খুব সাধারণভাব থাকতেন। তাঁকে দেখে বুঝা যেত না তিনি কত নিবিষ্ট গবেষক. যাকে বলা যায়, লো-প্রোফাইলে থাকা, তিনি সে ভাবেই থাকতেন বা চলতেন। ভিড়ের মাঝে তাঁকে কখনই পাওয়া যেত না। অথচ কোনোও সভায় তাঁর উপস্থিতি সভাকে উজ্জ্বল করতো। সুধীবর্গ তাতে আনন্দিত হতেন। যে কোনো তথ্যের জন্য তিনি হতেন তাৎক্ষণিক রেফারেন্স বুক, বিশেষত মধ্যযুগ বা লোকসাহিত্য কিংবা লোকজ কবি বা সাহিত্য এবং প্রাচীন বা লোকধর্মী কোনোও শব্দ সংক্রান্ত বিষয়ে তাঁর অধিকার ছিল ঈর্ষণীয়। স্থানীয় অনেক লোক কবিকেও তিনি যথার্থভাবে চিহ্নিত করে গেছেন। আস্কর পণ্ডিতকে তিনি না হলে এভাবে তাঁর মূল্যায়ন হতো কিনা সন্দেহ। চট্টগ্রামের বিশ্ববিদ্যালয়ের পুঁথি সংগ্রহের বৃত্তান্ত এবং পুঁথির তালিকাটি তাঁর উপস্থিতির কারণেই লিপিবদ্ধ করা ও প্রকাশ করা সহজ হয়েছে। যে কোনোও বিভাগের গবেষকদের তিনি প্রয়োজন মত সাহায্য সহযোগিতা করছেন। রিসার্চ পেপারের জন্য ছাত্রদেরও তিনি সাহায্য ও সহযোগিতা করছেন। তিনি তাঁদের নির্ভরতা, সহযোগী ও পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছেন।
তিনি প্রায়শঃ বলতেন, ‘পুঁথি আমার প্রথম প্রিয় বিষয়, কিন্তু লোক বিষয় তা থেকে দূরের নয়’। তিনি মজা করে বলতেন, ‘সাহিত্য চিন্তা মানুষের মৌলিক চিন্তা, এটা লোকজীবনের প্রথম যাত্রা’।
চট্টগ্রামের প্রাচীন ও লোকসাহিত্যের গবেষক ইসহাক চৌধুরী ২০২০ এর ২৩ নভেম্বর সোমবার স্থানীয় একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। তাঁর অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত চলে যাওয়া আমাদের বিশেষত চট্টগ্রামের গবেষণা জগতে একটা কালো পর্দা টেনে দিয়েছে।
চট্টগ্রামের তাত্ত্বিক গবেষক অনেকেই আছেন। কিন্তু লোকজ সম্পদের মাঠ ভিত্তিক তথ্য সংগ্রহের ও পাঠোদ্ধারের এমন লোক এখন বিরল। ইসহাক চৌধুরী সেই পথের শেষ গবেষক। তাঁর সরল আন্তরিকতা ও গভীর অভিনিবেশ এবং মমতা আর কারো মঝে পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ। বিশ্বস্থ সূত্রে জানা যায়, বাংলা একাডেমিতে চট্টগ্রামের ৪১ টি লোকগীতির টেকস্‌ অনালোচিতভাবে পড়ে আছে। এ কথা প্রায়শ তিনি দুঃখের সাথে বলতেন। বহু গবেষণা তিনি আরদ্ধ, অসমাপ্ত ও অপ্রকাশিত রেখে গেছেন। তিনি চলে গেলেন অকালে এবং আকস্মিকভাবে।
আজ ইসহাক চৌধুরী নেই। কীর্তিমানদের কথা স্মরণীয় মানুষদের মূল্যায়ণ করার লোকের অভাব অপূরণীয়। চট্টগ্রামের হাজারো বছরের কৃতী সন্তানদের কথা হয়তো শুধু কিংবদন্তী হয়েই থাকবে। আমরা আশাবাদী চট্টগ্রামে ইসহাক চৌধুরীর পদাঙ্ক অনুসরণ করে তাঁর আদর্শকে ধারণ করে অনেক অনেক মেধাসম্পন্ন গবেষক তৈরি হবে যাদের মাধ্যমে হাজার বছরের কীর্তিমানদের কীর্তিগাথা ইতিহাসে সংরক্ষিত হবে।
তাঁর কর্মের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি ১৯৯৯ সালে মাসিক তরজুমান ‘লেখক সম্মাননা’, ২০১৮ সালে পটিয়া ক্লাব মিলনাায়তনে সাহিত্যবিশারদ স্মৃতি সংসদ কর্তৃক ‘সাহিত্যবিশারদ স্বর্ণপদক’, ২০১৯ সালে জেলা শিল্পকলা একাডেমি, চট্টগ্রাম লোক সংস্কৃতিতে জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা-২০১৭ প্রদান, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০০৩ সালে পটিয়াস্থ সৃজনশীল সাহিত্যগোষ্ঠী মালঞ্চ’র প্রদত্ত লেখক সম্মাননা ও সংবর্ধনা। ২০০৭ সালে ‘প্রিন্সিপাল আবুল কাসেম সাহিত্য একাডেমি, বাংলাদেশ’ লেখক সম্মাননা সহ বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননার মাধ্যমে সম্মানীত হয়েছেন। ইসহাক চৌধুরীর স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা।
লেখক : প্রাবন্ধিক; সম্পাদক-শিল্পশৈলী

পূর্ববর্তী নিবন্ধপৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম শব্দ ‘মা’ : আমার চেতনায়, আমার অস্তিত্বে
পরবর্তী নিবন্ধভূগোলের গোল