লেখক রশীদ হায়দার আর নেই

| বুধবার , ১৪ অক্টোবর, ২০২০ at ৫:২১ পূর্বাহ্ণ

প্রখ্যাত লেখক, মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ও বাংলা একাডেমির সাবেক পরিচালক রশীদ হায়দার (৮০) আর নেই। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর ফুলার রোডে মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শাওন্তী হায়দারের বাসায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। রশীদ হায়দারের ছোট ভাই আরিফ হায়দার এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, তিনি বেশ কিছুদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা অসুস্থতায় ভুগছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে রশীদ হায়দারের জানাজা সম্পন্ন হয়। পরে তাকে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়। খবর বাংলানিউজের।
রশীদ হায়দার নামে পরিচিত হলেও তার পুরো নাম শেখ ফয়সাল আবদুর রশীদ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দীন হায়দার। ডাক নাম দুলাল। তিনি ১৯৪১ সালের ১৫ জুলাই পাবনার দোহাপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫৯ সালে গোপালগঞ্জ ইনস্টিটিউশন থেকে মাধ্যমিক ও ১৯৬১ সালে পাবনা অ্যাডওয়ার্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। ১৯৬৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
বড় ভাই জিয়া হায়দারের উৎসাহে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থায় তিনি কাজ শুরু করেন চিত্রালী পত্রিকায়। ১৯৬৪ সালে পাকিস্তান রাইটার্স গিল্ডের মুখপত্র পরিক্রম পত্রিকার সহকারী সম্পাদক হিসেবে কাজ শুরু করেন। ১৯৭২ সালে তিনি বাংলা একাডেমিতে যোগ দেন এবং ১৯৯৯ সালে পরিচালক হিসেবে অবসর নেন। পরে তিনি নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধ গবেষক হিসেবে তার সবচেয়ে বড় কাজ ১৩ খণ্ডে ‘স্মৃতি : ১৯৭১’। দেশের আনাচে-কানাচে থাকা মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবার খুঁজে খুঁজে বের করে তাদের পরিবারের কোনো সদস্য বা কোনো ঘনিষ্ঠজনদের দিয়ে স্মৃতিকথা লিখিয়েছেন তিনি।
রশীদ হায়দার গল্প-উপন্যাস, নাটক, অনুবাদ, নিবন্ধ, স্মৃতিকথা ও সম্পাদনা সব মিলে সত্তরের অধিক বই রচনা করেছেন। যার মধ্যে রয়েছে চিম্বুকের নিচে আলোর প্রভা, বাংলাদেশের খেলাধুলা, মুক্তিযুদ্ধের নির্বাচিত গল্প, শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষগ্রন্থ। তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৪), একুশে পদক (২০১৪), হুমায়ুন কাদির পুরস্কার এবং অগ্রণী ব্যাংকসহ বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রাথমিকের সব শিক্ষকের বেতন ত্রয়োদশ গ্রেডে দেওয়ার নির্দেশনা
পরবর্তী নিবন্ধস্বামীর লাথির আঘাতে প্রাণ গেল স্ত্রীর