লালুটিয়া ও ধোপাছড়ি ঘিরে পর্যটনের স্বপ্ন

বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্কের দাবি

চন্দনাইশ প্রতিনিধি | সোমবার , ৭ নভেম্বর, ২০২২ at ১০:১২ পূর্বাহ্ণ

উঁচু-নিচু পাহাড়ের সারি। সেগুন, গর্জন, অর্জুন, করই, জারুলসহ নানা প্রজাতির বৃক্ষ। বিচিত্র রকমের পাখি, মায়া হরিণ, সজারু, বানর, খরগোশসহ নানা বন্যপ্রাণী। আছে পেয়ারা, লেবু, কলাসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলদ বাগান। পাহাড় ঘেঁষে বয়ে চলা শঙ্খ নদ, পাহাড়ি ছড়া ও ঝরনা-সবই রয়েছে বনবিভাগ দোহাজারী রেঞ্জের আওতাধীন দোহাজারী লালুটিয়া ও ধোপাছড়ি ইউনিয়নে। দেশের বৃহত্তম সেগুন বাগানের অবস্থানও রয়েছে ধোপাছড়িতে। এছাড়া ধোপাছড়ি ইউনিয়নে রয়েছে দুটি বিট অফিস। বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্ক গড়ে তোলার সমস্ত উপকরণ ধোপাছড়ি ও দোহাজারী লালুটিয়া পাহাড়ি অঞ্চলে বিদ্যমান বলে মনে করছেন এখানকার জনপ্রতিনিধিরা। সরকার পুরো ধোপাছড়ি ইউনিয়নকে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে। বাঙালি ও উপজাতি সম্প্রদায়ের লোকজনের বসবাস রয়েছে এই ইউনিয়নে। এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের স্বপ্ন ছিল এখানে বিনোদনের জন্য একটি বোটানিক্যাল গার্ডেন বা ইকোপার্ক প্রতিষ্ঠা করা হবে। কিন্তু এখনো হয়নি।

জানা যায়, সরকারিভাবে সীতাকুণ্ড বোটানিক্যাল গার্ডেন অ্যান্ড ইকোপার্ক, ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক, রাঙ্গুনিয়া শেখ রাসেল এভিয়ারি পার্ক, বাঁশখালী ইকোপার্ক, ঢাকা বোটানিক্যাল গার্ডেন ও বলধা গার্ডেন, গাজীপুর ন্যাশনাল পার্ক গড়ে তোলা হয়েছে। ধোপাছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আবদুল আলীম জানান, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ঘেঁষে এই পাহাড়ি অঞ্চলের অবস্থান। ভ্রমণ পিপাসুদের আকর্ষণের সমস্ত উপকরণ বিদ্যমান রয়েছে ধোপাছড়ি ইউনিয়নে। নিজ উদ্যোগে এখানে বেড়াতে আসেন পর্যটকরা।

তিনি আরও জানান, স্থানীয় সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরী এই অঞ্চলে বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্কের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বরাবর একটি ডিও লেটার প্রদান করেছেন।

সংসদ সদস্য মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বনবিভাগ দোহাজারী রেঞ্জের আওতাধীন দোহাজারী লালুটিয়া ও ধোপাছড়ি পাহাড়ি অঞ্চলে প্রকৃতি তার সমস্ত সৌন্দর্য অকৃপণভাবে ঢেলে দিয়েছে। এই অঞ্চলে বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্ক গড়ে তোলা আমার স্বপ্ন। বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্ক প্রতিষ্ঠা করা হলে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও পর্যটকদের জন্য সৃষ্টি হবে বিনোদনের ক্ষেত্র। এখানে আছে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা। চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের আওতাধীন দোহাজারী রেঞ্জে হাজার হাজার একর বনভূমি রয়েছে। ফলে বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্ক প্রতিষ্ঠা করতে আলাদা জায়গার প্রয়োজন হবে না।

তিনি বরেন, ছড়ায় বাঁধ দিয়ে কৃত্রিম লেক সৃষ্টি করা যাবে। ছোট ছোট পাহাড়ের টপ কাটিংয়ে কটেজ, রেস্ট হাউজ, অর্কিড হাউজ, ক্যাকটাস হাউজ ও পিকনিক স্পট নির্মাণ করা যাবে। উঁচু পাহাড়গুলোতে পর্যটকদের জন্য হিল টু হিল স্কাই কার স্থাপন করা যাবে। এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে ঝুলন্ত সেতু নির্মাণ করারও সুযোগ রয়েছে।

তিনি জানান, দেশ-বিদেশের পর্যটকদের আকর্ষণের জন্য ছোট টিলার গায়ে ফুট ট্রেইল নির্মাণ করা সম্ভব। তাছাড়া বিশাল জায়গা জুড়ে মিনি চিড়িয়াখানা নির্মাণ করা যায়। এ অঞ্চলে বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্ক প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধযুক্তরাজ্যে গোল্ডেন কালেকশন অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন হাকিম আলী
পরবর্তী নিবন্ধএকদিনে ১ কোটি ২৩ লাখ টাকা আয়কর জমা