আজ বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, ‘হ্যাঁ, আমরা যক্ষ্মা নির্মূল করতে পারি’। যক্ষ্মা রোগের ক্ষতিকর দিক, বিশেষ করে স্বাস্থ্য, সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিণতি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে প্রতিবছর এ দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯৯৩ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যক্ষ্মাকে গ্লোবাল ইমার্জেন্সি ঘোষণা করে। এরপর থেকেই বাংলাদেশ সরকার ও কিছু বেসরকারি সংস্থা যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। ২০১৫ সালের পর বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা যক্ষ্মাকে মহামারী হিসেবে উল্লেখ করে নতুন কর্মকৌশল অনুমোদন করে। যেখানে বলা হয়, ২০৩৫ সালের মধ্যে বিশ্ব থেকে যক্ষ্মা রোগে মৃত্যুহার ৯৫ শতাংশ কমিয়ে আনতে হবে। একই সঙ্গে যক্ষ্মায় আক্রান্তের হার ৯০ শতাংশ কমিয়ে আনতে হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে তিন লাখ ৬১ হাজার যক্ষ্মা রোগী রয়েছে। অপর দিকে যক্ষ্মায় বছরে প্রায় ৩৯ হাজার মানুষ মারা যায়। শনাক্ত হওয়া রোগীদের ৮১ শতাংশ চিকিৎসা পায়, অবশিষ্ট ১৯ শতাংশ চিকিৎসার বাইরে থেকে যায়। এ দিকে দারিদ্র্যের কারণে অনেকেই এই রোগের লক্ষণ গোপন করে যায়। একজন রিকশাচালক বা বস্তিবাসী মনে করেন, অসুস্থ হয়ে চিকিৎসকের কাছে বা হাসপাতালে ঘোরাঘুরি করলে তার উপার্জনে ক্ষতি হবে। মূলত এসব কারণে বড় একটা অংশ লক্ষণ গোপন করে আরো অসুস্থ হচ্ছে এবং অন্যদের মধ্যে রোগ ছড়াচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রের পর প্রতিটি রোগীকে বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ করা হয়। পাশাপাশি নিয়মিত ওষুধ সেবনের জন্য প্রতি রোগীর জন্য একজন ডটস প্রোভাইডার নিশ্চিত করা হয়েছে। যার ফলে যক্ষ্মা রোগী শনাক্তকরণের পাশাপাশি এই রোগে মৃত্যুহার কমে এসেছে। চিকিৎসায় সাফল্যের হার বেড়েছে, যা সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ১৮৮২ সালের ২৪ মার্চ ডা. রবার্ট কক যক্ষ্মা রোগের জীবাণু মাইক্রোব্যাটেরিয়াম টিউবারকিউলসিস আবিষ্কার করেন। যক্ষ্মা রোগের জীবাণু আবিষ্কারের ১০০ বছর পর ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ জীবাণু আবিষ্কারের দিনটিকে স্মরণীয় করা ও যক্ষ্মারোগের চিকিৎসা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে প্রতিবছর এই দিনটিতে বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস পালিত হয়।