লকডাউনে গার্মেন্টস খোলা

‘চালু রাখার অনুমতি’র কথা বলছেন উদ্যোক্তারা

আজাদী অনলাইন | রবিবার , ১১ এপ্রিল, ২০২১ at ৮:১৮ অপরাহ্ণ

করোনাভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে দেশে ‘সর্বাত্মক ও কঠোর লকডাউন’ কার্যকরের কথা চললেও সেই সময় উৎপাদনমুখী কারখানা ‘চালু রাখার অনুমতি মেলার’ কথা বলছেন উদ্যোক্তারা।
লকডাউনের প্রস্তুতিতে আজ রবিবার (১১ এপ্রিল) বিকালে সরকারের কয়েকটি দপ্তরের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এবং নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে ব্যবসায়ী নেতাদের বৈঠক হয়। সেখানেই উৎপাদনমুখী কারখানা ‘চালু রাখার বিষয়ে সম্মতি মিলেছে’ বলে জানান বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সহসভাপতি ফজলে শামীম এহসান। বিডিনিউজ
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউস, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, শিল্প সচিব, বাণিজ্য সচিব, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ আরও কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ঐ ভার্চুয়াল বৈঠকে উপস্থিতি ছিলেন।
বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব কে এম আলী আজম বলেন, “লকডাউনে শিল্প কারখানা খোলা রাখার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে এবং সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। কী সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে এ মুহূর্তে প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত আমাদের পক্ষে বলা কঠিন।”
তিনি বলেন, “প্রজ্ঞাপন জারি হবে। এরপরই এ বিষয়ে বিস্তারিত জানবেন আপনারা। দুয়েকদিনের মধ্যে প্রজ্ঞাপন হবে। সিদ্ধান্তগুলো প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হবে।”
তবে বৈঠকে উপস্থিত ফজলে শামীম এহসান বলেছেন, “কঠোর লকডাউন আসছে, এ সময় কেবল রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানা নয় অন্যান্য শিল্প কারখানা এবং নির্মাণ শিল্পের কাজও চালু থাকবে। আর এসব শিল্পের জন্য পণ্য পরিবহনও চালু থাকবে।”
এসব কারখানা চালু রাখার যৌক্তিকতা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “এসব খাতে ঢাকা ও এর আশপাশে এক কোটির বেশি শ্রমিক কর্মরত। কারখানা বন্ধ করলে তারা গ্রামে ছুটতে শুরু করবে যা ঠেকানো কঠিন হবে। তাই ভাইরাসের বিস্তার কমিয়ে রাখার কৌশল হিসাবে কারখানা চালু রাখা হবে।”
এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, “বিজিএমইএ নেতারা আজকে কেবিনেট সেক্রেটারিসহ সরকার পক্ষের সঙ্গে বসেছিলেন। সেখানে লকডাউনের মধ্যে উৎপাদনমুখী কারখানাগুলো খোলা রাখার পক্ষে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত এসেছে। আমি এমনটাই শুনেছি। এখন হয়তো দুয়েকদিনের মধ্যে প্রজ্ঞাপন আকারে সেই সিদ্ধান্ত প্রকাশ করা হবে।”
দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে রোগী ও মৃত্যু লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ার কারণে আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে কঠোর ‘লকডাউনের’ পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, “এক সপ্তাহ জরুরি সেবার প্রতিষ্ঠান ছাড়া আর সব কিছুই বন্ধ থাকবে।”
কিন্তু পোশাক শিল্প মালিকরা ‘লকডাউনের’ মধ্যেও কারখানা খোলা রাখার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএসহ আরও কয়েকটি সংগঠন রবিবার ঢাকায় এক যৌথ সংবাদ সম্মেলন থেকেও এ দাবি তুলে ধরেন।
এ বিষয়ে ‘ইতিবাচক সাড়া’ মেলার পর বিজিএমইএ’র নবনির্বাচিত সভাপতি ফারুক হাসান কারখানা মালিকদের উদ্দেশে এক বার্তায় বলেন, “লকডাউনের সময় কারখানা বন্ধ রাখলে যে সঙ্কট হবে তা মোকাবেলায় গত ৯ এপ্রিল বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, ব্যবসায়ী নেতা শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, সালাম মুর্শেদী, বিকেএমইএ সভাপতি একেএম সেলিম ওসমান, বিটিএমএ’র সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকনসহ একটি বৈঠক হয়। এই টিম কারখানা খোলা রাখার পক্ষে যুক্তিগুলো সফলভাবে মুখ্য সচিব, মন্ত্রি পরিষদ সচিব এমনকি প্রধানমন্ত্রীকেও বোঝাতে সক্ষম হন। এসব তৎপরতার পরিপ্রেক্ষিতে কেবিনেট সেক্রেটরির সভাপতিত্বে কোভিড-১৯ আন্তঃমন্ত্রণালয় টাস্কফোর্স সভায় একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত এসেছে। এটা একটা বড় সাফল্য, এত বড় সঙ্কট থেকে শিল্প কিছুটা হলেও রক্ষা পাবে। বিজিএমইএ’র সব সদস্যকে সামনের দিনগুলোতে কঠোরভাবে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নীতিগুলো মেনে চলার অনুরোধ করছি।”

পূর্ববর্তী নিবন্ধটেকনাফে কোটি টাকার ইয়াবা সহ দোকানদার আটক
পরবর্তী নিবন্ধকঠোর লকডাউনে সব ফ্লাইট বন্ধ