রোহিঙ্গাদের না ফেরালে নিরাপত্তা ঝুঁকি সারা বিশ্বের: প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা ও প্যারিসের মধ্যে ৩টি চুক্তি স্বাক্ষর

| শুক্রবার , ১২ নভেম্বর, ২০২১ at ৪:৫৯ পূর্বাহ্ণ

বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের দ্রুত মিয়ানমারে ফেরাতে না পারলে বাংলাদেশ থেকে নিরাপত্তা ঝুঁকি বিশ্বে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে হুঁশিয়ার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বৃহস্পতিবার ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত প্যারিস শান্তি সম্মেলনে তিনি বিশ্ব সমপ্রদায়কে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে এই সতর্কবার্তা শুনান।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৭ সালের অগাস্টে মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের সাময়িক আশ্রয় দিয়ে বড় ধরনের আঞ্চলিক সংকট এড়াতে সহায়তা করেছে। তাদের মধ্যে ১০ লাখের বেশি মানুষ এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি। এসব মানুষের দ্রুত মিয়ানমারে ফিরে যাওয়া নিশ্চিত করতে বিশ্বকে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে হবে। তা নাহলে এ সংকট থেকে উদ্ভূত নিরাপত্তা ঝুঁকি শুধু আমাদের সীমান্তে আবদ্ধ থাকবে না। আমরা এর মধ্যেই তার আলামত দেখেছি। খবর বিডি/বাসসের।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে অবশ্যই সবার জন্য শান্তি ও সমৃদ্ধির অঞ্চল হতে হবে। এই অঞ্চলের জন্য আমাদের লক্ষ্য হলো- একে অবাধ, উন্মুক্ত, শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক। তিনি বলেন, এই অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ অবদান যারা রাখে তাদের উচিৎ হবে অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিতে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করা। পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সমঝোতার ভিত্তিতে সকল অংশীদারের সঙ্গে কাজ করতে চায় বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসেবে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার উন্নয়নে ফ্রান্স অন্যন্য অবদান রাখছে বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।
ঢাকা ও প্যারিসের মধ্যে ৩টি চুক্তি স্বাক্ষর: এদিকে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স আর্থিক সহায়তা ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা সংক্রান্ত তিনটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। দেশটিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাষ্ট্রীয় সফর চলাকালে এসব চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। দু’টি চুক্তি অনুযায়ী, ফ্রান্স বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পে সহায়তা প্রদানে ঢাকাকে ৩৩০ মিলিয়ন ইউরো দেবে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)-র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন বুধবার সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বলেন, ৩৩০ মিলিয়ন ইউরোর মধ্যে এজেন্সি ফ্রান্স ডেভলোপমেন্ট (এএফডি) মহামারি করোনাভাইরাস মোকাবেলায় আর্থিক সহায়তার জন্য ২০০ মিলিয়ন ইউরো দেবে এবং ঢাকা এনভায়রনমেন্টালি সাসটেইনেবল ওয়াটার সাপ্লাই প্রজেক্টের জন্য দেবে ১৩০ মিলিয়ন ইউরো। প্রকল্পটি ইতোমধ্যে চালু করা হয়েছে এবং তা চলছে। তিনি এই ৩৩০ মিলিয়ন ইউরোর কথা প্রকাশ করে বলেন, এনিয়ে বাংলাদেশকে এএফডি’র দেয়া মোট সহায়তা ১ বিলিয়ন ইউরো ছাড়ালো। কেননা, এরআগে সংস্থাটি ৮০০ মিলিয়ন ইউরো দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ হচ্ছে এএফডি’র সবচেয়ে বেশি সহায়তা প্রাপ্ত দেশ। ইআরডি সচিব বলেন, তারা আগামীতে ফ্রান্সের সঙ্গে হোস্ট কান্ট্রি চুক্তি স্বাক্ষর করবে। বিষয়টির আলোচনা বর্তমানে চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়া, বেসামরিক বিমানপরিবহন ও পর্যটন সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন বলেন, বাংলাদেশ বেসামরিক বিমানপরিবহন কর্তৃপক্ষ তাদের কর্মচারিদের জন্য অভিজ্ঞতা বিনিময় ও প্রশিক্ষণের জন্য সহযোগিতা জোরদারে ফ্রান্সের বেসামরিক বিমানপরিবহন কর্তৃপক্ষের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআন্তর্জাতিক মানে কাটা হবে ১৬ পাহাড়, ডিজাইন চূড়ান্ত
পরবর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা