রোজার প্রতিটি মুহূর্ত কাজে লাগাতে হবে

আ ব ম খোরশিদ আলম খান | রবিবার , ২ এপ্রিল, ২০২৩ at ৪:২১ পূর্বাহ্ণ

মাহে রমজানের রহমতের দশক পূর্ণ হচ্ছে আজ। কাল থেকে শুরু হবে দ্বিতীয় দশক মাগফিরাত। এই দশটি দিনে সিয়াম সাধনা ও ইবাদত বন্দেগির মাধ্যমে আল্লাহ পাকের কাছে মাগফিরাত তথা ক্ষমার জন্য ফরিয়াদ জানাতে হবে। মাহে রমজান ঈমানদার জনতার জন্য বড় সৌভাগ্যের ও রহমতের উসিলা। এজন্যই এ মাসের প্রতিটি মুহূর্তকে কাজে লাগাতে হবে। আজ দশম রোজা পালনের মুহূর্তে আমাদের আত্মজিজ্ঞাসা করতে হবে ভালোয় ভালোয় রোজার দিনগুলো আমরা পার করতে পারছি কিনা। মুত্তাকি রোজাদাররা নিঃসন্দেহে রোজা, তারাবিহ, তাহাজ্জুদ, দানসদকাহ, দরুদ শরিফ পাঠ, কুরআন তিলাওয়াতসহ নানাভাবে ইবাদতে রত থেকে আল্লাহর অনুগ্রহসিক্ত হবার সতত প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। পাপেতাপে দগ্ধ, অনুশোচনায় কাতর মানুষের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা লাভের সুযোগ এখন দোরগোড়ায়। পবিত্র রমজান মাসের পূণ্য মুহূর্তগুলো দ্রুতই পার হয়ে যাচ্ছে। প্রতিটা মুহূর্ত সদ্ব্যবহারে সচেষ্ট হতে হবে। বিগত দিনে কোনো শৈথিল্য ও স্খলন হয়ে থাকলে শোধরাতে হবে। মাহে রমজানের মাহাত্ম্য ও ফজিলতের ভাগিদার হতে নিবিষ্ট মনে আল্ল্লাহর স্মরণে নিবেদিত হতে হবে। রহমত বা করুণার দশকে যারা নিবিষ্ট চিত্তে সিয়াম সাধনা ও সৎকাজে সম্পৃক্ত ছিল নিঃসন্দেহে তারা সৌভাগ্য ও করুণার ভাগিদার। কাল থেকে শুরু হওয়া মাগফেরাত তথা ক্ষমার দশকেও ইবাদতসাধনায় আরও বিশেষ মনোযোগী হওয়া দরকার।

মানুষের দৈনন্দিন বেঁচে থাকার জন্য জৈবিক চাহিদার জোগান দরকার পড়ে। শরীরের চাহিদা খাদ্যপানীয় দ্বারা মেটানো যায়। মানুষের দেহ ও রুহের খোরাক ভিন্ন ভিন্ন, খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে দেহের প্রয়োজন পূরণ হলেও রুহ বা আত্মার যে চাহিদা তা মেটাতে জিকরুল্ল্ল্লাহ বা আল্লাহর জিকিরের বিকল্প নেই। বলা হয়েছে– ‘আলা বিযিকরিল্ল্ল্লাহি ওয়ালি তাতমায়িন্নাল কুলুব’ অর্থাৎ আল্ল্ল্লাহর স্মরণেই প্রশান্তি মিলে। লক্ষণীয় যে, মাহে রমজানে কিন্তু আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস, চলাফেরা ইত্যাদিতে পরিবর্তন দেখা যায়। তেমনিভাবে আমাদের ইবাদত বন্দেগিতেও দেখা যায় বিভিন্ন আমলের সংযোজন, সাধনার নানা কর্মকৌশল। হাদিসে আছে, যে ব্যক্তি কোনো পাপ কাজে নিয়োজিত হয়, তখন তার কলবে পাপের একটি কালো চিহ্ন অঙ্কিত হয়। যদি সে পবিত্র চিত্তে তওবা অর্থাৎ এ কাজ আর করবে না বলে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয় এবং কৃতকার্যের জন্য অনুশোচনা করে তবে উক্ত কালো চিহ্ন ধৌত হয়ে যায়। প্রিয় নবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, রমজান মাসের প্রত্যেক দিন ও রাতে বহু জাহান্নামীকে মুক্ত করা হয় এবং প্রত্যেক মুসলমানের প্রত্যেক দিন ও রাতে (কমপক্ষে) একটি দোয়া কবুল হয়।

আরেকটি হাদিস থেকে জানা যায়, যে ব্যক্তি রমজান মাস পাওয়ার পরও নিজের গুনাহ মাফ করাতে পারেনি তার ধ্বংস হওয়ার জন্য জিব্রাইল (.) দোয়া করেন। তাই প্রত্যেক মুসলমানকে বেশি বেশি পুণ্যকর্মে শামিল হয়ে রোজার মাসের প্রতিটি মুহূর্তকে কাজে লাগাতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধস্বর্ণের দামে রেকর্ড, ভরিতে লাখ ছুঁই ছুঁই
পরবর্তী নিবন্ধবাংলাদেশের প্রশংসা করে মার্কিন কংগ্রেসে প্রস্তাব উত্থাপন