রেলের উচ্চতার ঝামেলা থেকে মুক্ত হচ্ছে ব্রিজ দুটি

দ্রুত কাজ শেষ করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দুই মাসের মধ্যে শেষ করার আশা সিডিএর

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ৬:৩৭ পূর্বাহ্ণ

প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে অবশেষে দুটি রেলওয়ে ব্রিজের কাজ শুরু হচ্ছে। উচ্চতার ঝামেলায় পড়ে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা বায়েজিদ লিংক রোড এবং পতেঙ্গা-ফৌজদারহাট আউটার রিং রোডের ৩ নম্বর ফিডার রোডে রেললাইনের উপরের ব্রিজ দুটির নির্মাণকাজ আগামী দুই মাসের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। গতকাল একনেকের বৈঠকে রেলওয়ের উচ্চতার ঝামেলা নিয়ে সিডিএর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। তিনি ব্রিজ দুটি নির্মাণের অনুমোদন প্রদানের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ডাবল ডেকার ট্রেন যখন আসবে তখন দেখা যাবে। এখন ব্রিজ হয়ে যাক। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর চলতি সপ্তাহ থেকে পুরোদমে ব্রিজ দুটির নির্মাণ কাজ শুরু করবে বলে জানিয়েছে সিডিএ।
জানা যায়, রেললাইনের উপর ব্রিজের উচ্চতা নিয়ে রেলওয়ে দুই বছর পর পর নতুন নির্দেশনা জারি করায় চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ দুটি প্রকল্প বাধাগ্রস্ত হয়। এর মধ্যে ফৌজদারহাট-বায়েজিদ লিংক রোডের ফৌজদারহাট অংশে প্রায় ৮৫০ মিটার দীর্ঘ একটি ব্রিজের কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালে। ওই সময় রেললাইনের উপর কোনো ব্রিজ নির্মাণ করতে হলে কমপক্ষে ৭.৫ মিটার উচ্চতা রাখতে হতো। সিডিএ ব্রিজটি নির্মাণকালে রেললাইনের উপর থেকে ৭.৬ মিটার উচ্চতা নিশ্চিত করে নির্মাণ কাজ শুরু করে। ব্রিজ নির্মাণের শেষ পর্যায়ে এসে রেলওয়ে ৮.৫ মিটার উচ্চতা নিশ্চিত করতে সিডিএকে পত্র দেয় এবং প্রকল্পটির কাজ বন্ধ করে দেয়। সিডিএ ব্রিজটির স্প্যানসহ নির্মাণ সম্পন্ন করেছে। শেষ পিলারটির নির্মাণও সম্পন্ন করেছে। শুধুমাত্র উচ্চতার জটিলতায় সেগুলো পিলারের উপর স্থাপন করা সম্ভব না হওয়ায় ব্রিজটি চালু করা যায়নি।
এদিকে পতেঙ্গা থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত আউটার রিং রোডের সাথে শহরের সংযোগ ঘটাতে ফিডার রোড-৩ নির্মিত হচ্ছে সাগরিকা জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের পাশ দিয়ে। দুই কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ রাস্তাটিতে ৮শ মিটারের মতো একটি ওভারপাস রয়েছে। এই ওভারপাসের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ হয় দুই বছর আগে। ৭.৬ মিটার উচ্চতা নিশ্চিত করে নির্মিত এই ওভারপাসে মাত্র ৪০ ফুটের একটি স্প্যান বসালে কাজটি শেষ হবে। অথচ রেলওয়ের অনুমোদন না পাওয়ায় এই ওভারপাসেও রেললাইনের উপর স্প্যান বসানো যায়নি। ফলে এই রাস্তাটিও ঝুলে রয়েছে। ব্রিজের অভাবে ফিডার রোড-৩ চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।
ব্রিজ দুটি নির্মাণের ব্যাপারে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মাঝে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। সারা দেশে রেললাইনের উপর ৪.৫ মিটার থেকে ৬.৫ মিটার উচ্চতার শত শত ওভারপাস এবং ব্রিজ থাকলেও এই দুটি ব্রিজের অনুমোদন দিতে রেল মন্ত্রণালয়ের গড়িমসির বিষয়ে প্রশ্ন ওঠে।
দুটি ব্রিজের কাজ ৯০ শতাংশের বেশি শেষ হওয়ার পরও উচ্চতার ঝামেলায় পড়ে কাজ শেষ করতে না পারার বিষয়ে গতকাল একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে সিডিএ। প্রধানমন্ত্রী দ্রুত ব্রিজ দুটির কাজ শেষ করার নির্দেশ দেন। এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় অনুমোদন দেয়ার জন্য তিনি রেলপথ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ প্রদান করেন। তিনি বলেন, ডাবল ডেকার রেল পরিচালনার প্রকল্পটি যখন বাস্তবায়িত হবে তখন ব্রিজের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে। এখন ব্রিজ নির্মাণ সম্পন্ন করে রাস্তা চালু করে দেয়া হোক।
সিডিএর চিফ ইঞ্জিনিয়ার কাজী হাসান বিন শামস বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি অনুধাবন করেছেন। তিনি প্রকল্প দুটির বর্তমান অবস্থা শুনেছেন এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি জানান, আমাদের প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে। দুই মাসের মধ্যে ব্রিজ দুটি পুরোদমে চালু করা সম্ভব হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধডলারের নতুন দর খরচ বাড়ল কার্ডে
পরবর্তী নিবন্ধদুই পুলিশের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা