তাপদাহের ফলে রেললাইন বেঁকে যাওয়ায় বিপত্তি দেখা দিয়েছে। তীব্র গরমে গত ১৫ দিনে দেশে বিভিন্ন স্থানে রেললাইন বেঁকে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। যখন–তখন রেললাইন বেঁকে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। যোগাযোগ স্বাভাবিক রাখতে তাই চিন্তায় পড়েছে তারা। কর্তৃপক্ষ এখন গরম কমা এবং বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করছে। এদিকে কোথায় কখন রেললাইন বেঁকে গিয়ে ট্রেন দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে তা নিয়ে যাত্রীদের মাঝেও আতংক বিরাজ করছে।
তীব্র গরমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের দাড়িয়াপুর এলাকায় দুদিনের ব্যবধানে আবারো রেললাইন বাঁকা হয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রেললাইনটি বাঁকা হওয়ার খবর পান ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার। রেলওয়ে সূত্র জানায়, তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে গেলে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। এর আগে গত ২৭ এপ্রিল বেলা ১টার দিকে তীব্র গরমে একই স্থানের রেললাইন বাঁকা হয়ে মালবাহী ট্রেনের সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়। তবে একটি লাইনে আপ–ডাউন ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক ছিল।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) জাহাঙ্গীর হোসেন আজাদীকে বলেন, যখন দীর্ঘ সময় ধরে বৃষ্টি হয় না, একটানা তীব্র তাপদাহ চলতে থাকে, তখন রেললাইন বেঁকে যায়। এটা হয়। এবারও হয়েছে। এ রকম তীব্র গরম পড়লে আমাদেরকে একটু সতর্ক থাকতে হয়। কোথায় কখন লাইন বেঁকে যায় সেটা বলা যায় না। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কয়েকদিন আগে গরমে রেললাইন বাঁকা হয়ে মালবাহী ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত হয়েছিল। সে জায়গায় আজকে (গতকাল) আবার হয়েছে।
ডাবল লাইন বেঁেক যায় কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, হ্যাঁ, ডাবল লাইনও বেঁকে যায়। গতবারের মতো আজকেও (গতকাল) ব্রাক্ষণবাড়িয়ার যেখানে লাইন বেঁকে গেছে সেটা ডাবল লাইন। তবে গরম কমলে আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে।
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৭ এপ্রিল রেললাইন বাঁকা হয়ে মালবাহী ট্রেনের সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়। মেরামতের ২৪ ঘণ্টা পরে তীব্র গরমে সেই এলাকায় গতকাল সকালে একই ঘটনা ঘটেছে। ২৮ এপ্রিল লাইনচ্যুত হওয়া বগিগুলো উদ্ধার করে মেরামতের পর ঢাকাগামী লাইনটি দিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার রফিকুল ইসলাম বলেন, শনিবার সকাল পৌনে ১০টায়ও এই লাইন দিয়ে উপকূল এঙপ্রেস ঢাকায় গেছে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে খবর পেয়েছি, তীব্র গরমে সেই লাইনটি ফের বাঁকা হয়ে গেছে। এবার লাইনের সমস্যাটি আগেভাগে ধরা পড়েছে। এরপর সতর্কতার অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম ও সিলেট থেকে ওই লাইনে ঢাকামুখী ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রুটে এখন দুটি রেললাইন থাকার কারণে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ও সিলেটগামী ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক আছে।