রেকর্ড জয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজও বাংলাদেশের

ক্রীড়া প্রতিবেদক | সোমবার , ২৬ জুলাই, ২০২১ at ৬:০৪ পূর্বাহ্ণ

অনেকটা ফাইনাল ম্যাচের মতোই ছিল বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয় ম্যাচটি। আগের দুটি ম্যাচে দুই দলেই ১টি করে ম্যাচ জিতে সিরিজ সমতায় এনেছিল। গতকাল রোববার সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ৫ উইকেটে জিতেছে বাংলাদেশ। আর সে সাথে ২-১ ব্যবধানে জয় করে নিয়েছে টি-টোয়েন্টি সিরিজ। সিরিজ জিততে রেকর্ড গড়ার চ্যালেঞ্জ দিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। সম্মিলিত ব্যাটিংয়ে সেই বড় রান টপকে যায় বাংলাদেশ। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে শুরুতে পথ দেখান সৌম্য সরকার, শেষটায় বিস্ফোরক ইনিংসে বাকিটা সারেন শামীম হোসেন পাটোয়ারী। সফরে তৃতীয় ট্রফি পেল বাংলাদেশ। দেশের মাঠে সর্বোচ্চ রান করেও টি-টোয়েন্টিতে প্রথম সিরিজ জিততে পারেনি জিম্বাবুয়ে। তাদের বিপক্ষে নিজেদের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে এই সংস্করণে চতুর্থ সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের আগের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয় ছিল দেশের মাটিতে, ২০১৬ সালে ১৬৩ রান পেরিয়ে। হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে শুরুতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৯৩ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় জিম্বাবুয়ে। জবাবে ৪ বল হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। এই জয়ে টেস্ট ও ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজও জিতে নেয় সফরকারী টাইগাররা। ফলে এক সফরে তিনটি সিরিজ জয়ের স্বাদ পায় তারা। বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় নেমে দলীয় ২০ রানের মাথায় ওপেনার নাঈম শেখ সাজঘরে ফেরেন ৩ রান করে। বেশিক্ষণ খেলতে পারেননি সাকিবও। ১৪ বলে ১ চার ২ ছক্কায় ২৫ রানের ছোট ক্যামিও খেলে তিনিও সাজঘরের দিকে হাঁটেন। তবে বিদায়ের আগে সৌম্যর সঙ্গে তার জুটিতে আসে ৩২ বলে গুরুত্বপূর্ণ ৫০ রান। এরপর মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে লড়াই শুরু সৌম্য সরকারের। শুরুটা ধীরগতির হলেও সময়ের সঙ্গে হাত খুলে খেলতে থাকেন সৌম্য। ৪০ বলে তুলে নেন ফিফটিও। এরপর দ্রুতগতিতে রান তুলতে গিয়ে লুক জঙওয়ের বলে লং অফে থাকা বদলি খেলোয়াড় মুসাকান্দার হাতে ক্যাচ তুলে দেন সৌম্য। তবে বিদায়ের আগে তিনি ৪৯ বলে ৯ চার ও ১ ছক্কায় খেলেন ৬৮ রানের দারুণ এক ইনিংস। রিয়াদের সঙ্গে গড়েন ৩৫ বলে ৬৩ রানের জুটি। বাংলাদেশের ইনিংসের ১৫তম ওভারে আসে মাত্র ২ রান। মুজারাবনির করা ওভারের প্রথম দুই বলে সিঙ্গেল আসার পর ওই আর কোনো রান নিতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। পরের ওভারে ছক্কা হাঁকানোর পর ওয়েলিংটন মাসাকাদজার বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন আফিফ হোসেন। দুই ছক্কায় ৪ বলে ১৪ রান করেন এই বাঁ-হাতি। আফিফের পর ক্রিজে নামা শামীম হোসেনকে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যান মাহমুদউল্লাহ। দুজনে মিলে ১৭তম ওভারে ১২ রান তোলে ব্যবধান কমিয়ে আনেন। শেষ ১৮ বলে দরকার ছিল ২৮ রান। ১৮তম ওভারে রিয়াদ সিঙ্গেল নেওয়ার পর শেষ তিন বলে তিন চার হাঁকান শামীম। ওভারে আসে ১৫ রান। ফলে শেষ দুই ওভারে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৩ রান। মুজারাবানির করা ইনিংসের ১৯তম ওভারেও শামীম ঝলকের দেখা মেলে। তরুণ এই ব্যাটসম্যান ওভারের দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারি হাঁকান। কিন্তু চতুর্থ বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে বিদায় নেন মাহমুদউল্লাহ। টাইগার দলপতি ২৮ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ৩৪ রান করেন। শেষ ওভারে বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৫ রান। শামীম প্রথম বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে স্কোরে সমতা টানেন। পরের বলে সিঙ্গেল নিয়ে জয় নিশ্চিত করেন তিনি। শামীম মাত্র ১৫ বলে ৬ চারে ৩১ রানে অপরাজিত থাকেন। তার ইনিংসে ছিল ৬টি চারের মার। জিম্বাবুয়ের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন মুজারাবানি ও জংউই। এর আগে হারারেতে আগে ব্যাট করে বাংলাদেশের সামনে পাহাড়সম লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় স্বাগতিকরা। ওপেনার ওয়েসলে মাধেভেরের ৫৪, রেগিস চাকাভার ৪৮, তিদওয়ানশে মারুমানির ২৭, ডিওন মায়ার্সের ২৩ ও শেষদিকে রায়ান বার্লের অপরাজিত ৩১ রানে ভর করে ১৯৩ রান তোলে দলটি। বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি ব্যয়বহুল বোলার সাইফ। তিনি ৪ ওভারে ১ উইকেটের বিনিময়ে দিয়েছেন ৫০ রান। সৌম্য ৩ ওভারে ১৯ রান দিয়ে নেন ২টি উইকেট। শরিফুল ২৭ রানে একটি ও সাকিব ২৪ রানে নিয়েছেন একটি উইকেট। ম্যাচ ও সিরিজ সেরা নির্বাচিত হন বাংলাদেশের সৌম্য সরকার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাগরে জাল সনদে চলছে অসংখ্য নৌযান
পরবর্তী নিবন্ধসিআরবি ও আমার মেয়ে