রুবেলের সাথে যোগাযোগ বন্ধ পরিবারের

তুরস্কে অপহরণ, দেশ থেকে মুক্তিপণ আদায়

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ৭ অক্টোবর, ২০২২ at ৭:৪২ পূর্বাহ্ণ

প্রায় এক যুগ আগে প্রবাস জীবন শুরু রুবেল মিয়ার। প্রথমে ওমান, পরে তুরস্কে গিয়ে থিতু হন। ওমানে করতেন নির্মাণ শ্রমিকের কাজ। তুরস্কে গিয়ে নেন একটি গেঞ্জির ফ্যাক্টরিতে কাজ, তাও শ্রমিকের কাজ। জীবিকার তাগিদে ভিন্ন দেশে পাড়ি জমিয়ে জীবন যুদ্ধে আত্মনিবেদনকারী সেই রুবেল মিয়ার সাথে যোগাযোগ বন্ধ পরিবারের। কোথায় আছে, কিভাবে আছে তা তারা বলতে পারছে না। বেঁচে আছে কী মারা গেছে তাও জানা সম্ভব হচ্ছে না। অন্যদিকে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে রুবেল মিয়াকে অপহরণ করা হয়েছে দাবি করে দেশে থাকা স্বজনদের কাছ থেকে দু’দফায় মুক্তিপণ আদায় করা হয়েছে। এ অবস্থায় কোনো ধরনের উপায় খোঁজে না পেয়ে প্রতিকার চেয়ে ২ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে মামলা করেছেন রুবেল মিয়ার ভাই মো. মফিজুল ইসলাম। আসামিরা হলেন, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড লাকসাম শাখার একাউন্টধারী আনোয়ার হোসেন ও সাতক্ষীরা জেলার দারোহাট থানার শ্রীপুর এলাকার আবু বকর মোল্লার ছেলে জাহাঙ্গীর। গতকাল চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেনের আদালতে দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় মামলাটি করা হয়। বাদীর আইনজীবী হোসাইনুল করিম আজাদীকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আদালত ভিকটিম রুবেল মিয়ার ভাইয়ের দায়ের করা মামলা গ্রহণ করে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, রুবেল মিয়াকে আটকে রেখে প্রথমে ৩ লাখ টাকা এবং পরে আরো আড়াই লাখ টাকা আদায় করে নেন অপহরণকারী চক্র। একপর্যায়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়। এখন রুবেল মিয়া কী অবস্থায় আছেন, বেঁচে আছেন কী মারা গেছেন তাও জানা সম্ভব হচ্ছে না। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা মামলা দায়ের করেছি। পাশাপাশি তাকে উদ্ধার চেয়ে পৃথক একটি আবেদনও করেছি। যেটি আদালত নজরে নিয়েছেন।
মামলার আরজিতে বলা হয়, গত ৭ সেপ্টেম্বর রাত ৮ টার দিকে +৩০৬৯৭১২৬৫৮৪৬৮ নম্বর থেকে হোয়াটসআপে ফোন করেন জাহাঙ্গীর নাম পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি। এসময় সে রুবেল মিয়াকে অপহরণ করার কথা ও তাকে মেরে ফেলবে এমন কথা জানায়।
বাঁচাতে চাইলে দাবি করা হয় ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ। এ সময় ভিকটিমের সাথেও কথা বলিয়ে দেয়া হয়। ভিকটিমের কণ্ঠে তখন শোনা যায়, আমি কষ্টে আছি। আমাকে আটকে রেখেছে। আমাকে মেরে ফেলবে। তারা যা চাই তা দিয়ে দাও বা পাঠানোর ব্যবস্থা কর। এরই ধারাবাহিকতায় অপহরণকারীদের দেওয়া আনোয়ার হোসেন নামীয় এক ব্যক্তির লাকসাম ইসলামী ব্যাংক শাখার হিসাব নম্বরে দাবিকৃত টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
আরজিতে আরো বলা হয়, পরবর্তীতে আসামিরা আরো টাকা দাবি করেন। দাবি অনুযায়ী পরদিন ৮ সেপ্টেম্বর তুরস্কে অবস্থানকারী ভিকটিমের বন্ধু সুলতান মানি ট্রান্সপার কোম্পানীর মাধ্যমে অপহরণকারীদের আড়াই লাখ টাকা দেয়া হয়। আরজির শেষে বাদী উল্লেখ করেন, বিভিন্নভাবে রুবেল মিয়ার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ব্যর্থ হয়। উল্লেখ্য, ভিকটিম যুবক রুবেল মিয়া চাঁদপুরের কচুয়া এলাকার বাসিন্দা হলেও তার ভাই নগরীর খুলশী এলাকায় বসবাস করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির অফিস হচ্ছে জঙ্গল সলিমপুরে
পরবর্তী নিবন্ধআল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ্‌ চট্টগ্রামে আসছেন আজ