চট্টগ্রামে নিউমার্কেট স্টেশন রোড চট্টগ্রামের অত্যন্ত ব্যস্ততম একটি সড়ক। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করি সড়কটাতে যানজট সর্বদা লেগেই থাকে। ফলে নষ্ট হয়ে মানুষের মূল্যবান সময়। ওই স্থানের ছিনতাই চাঁদাবাজির ইতিহাস দীর্ঘদিনের। তাছাড়া যানজটের কারণে গুরুত্বপূর্ণ রিয়াজউদ্দিন বাজারে পণ্য আনা নেওয়া কঠিন হয়ে যায়। রেলস্টেশনে আসা–যাওয়ার জন্য যাত্রীদের পোহাতে হয় দুর্ভোগ। এই যানজটের কারণে কত রেল যাত্রী নির্দিষ্ট সময়ে ট্রেন মিস করেছে তার ইয়ত্তা নেই। কিন্তু যারা রাস্তা ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করে তাদের এ বিষয়ে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। সিটি কর্পোরেশন, পুলিশ, র্যাব যৌথ উদ্যোগে অভিযান পরিচালনার পর পুনর্দখল ঠেকাতে রক্ত ঝরল চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা কর্মচারীসহ পুলিশের যা কখনো কাম্য ছিল না। সড়ক অকার্যকর করে হকারদের সুযোগ দেওয়া মোটেও কাম্য নয়। রাস্তা দখল করে ব্যবসা করা কোন নাগরিক মেনে নিতে পারে না। বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। কিন্তু উদ্দেশ্যবিহীনভাবে শহরমুখী হওয়ার কারণে কৃষি শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না যা বাংলাদেশের উৎপাদনে বিঘ্ন সৃষ্টি করছে। হকারদের উচিত রাস্তায় অবৈধভাবে ব্যবসা না করে গ্রামে গিয়ে চাষাবাদ করা। এতে নিজেদেরও মঙ্গল দেশের অর্থনীতিও মজবুত হবে। বর্তমান সরকার কৃষকদেরকে প্রণোদনাসহ সহজ শর্তে কৃষি ঋণ বিতরণ করছে। হকারদের কারণে শহরের বড় বড় বাজারগুলো ক্রেতা শূন্য হয়ে যাচ্ছে। ঠিকমতো ব্যবসা করতে না পারায় তারা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। অনেকে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে বাজারে দোকান নিয়ে ওই দোকানগুলো বিক্রি করে দিতে চাচ্ছে। প্রকৃত ব্যবসায়ীদের মধ্যে সৃষ্টি হচ্ছে দারুণ হতাশা। যেহেতু হকারদের রাস্তায় দোকান বসাতে বিপুল অংকের চাঁদা দিতে হয় হকারদের কারণে দ্রব্যমূল্যও বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাস্তায় ব্যবসা করে হকাররা তেমন লাভবান হচ্ছে মনে হচ্ছে না। লাভবান হচ্ছে এক শ্রেণীর চাঁদাবাজ ও প্রশাসনের দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তি। অবৈধ হকারদের কারণে পথচারী চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীরা নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারছে না, হচ্ছে ইভটিজিং ও প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার। শুধু হকার নয়, যত্রতত্র রাস্তার উপর বাস,ট্রাক নানা গাড়ি পার্কিং করেও যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে চট্টগ্রাম শহরের জনগণ। যা কোনভাবেই সহ্য করা যায় না। তাই সবাই চাঁদাবাজ, হকারদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ঠেকাতে সোচ্চার হতে হবে। শহরকে বাসযোগ্য রাখতে এক্ষেত্রে কোন ছাড় দেয়া যাবে না।
সুমন দত্ত
শিক্ষক ও সংস্কৃতি কর্মী