রাসবিহারী ঘোষ (১৮৪৫–১৯২১) আইনজীবী, সমাজকর্মী, জনহিতৈষী। রাসবিহারী ঘোষ ২৩ শে ডিসেম্বর ১৮৪৫ খ্রিষ্টাব্দে পূর্ব বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষ এলাকার তোরকোনা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বিশ শতকের প্রথম দিকে আইন পেশায় তিনি ছিলেন এক কিংবদন্তিতুল্য ব্যক্তি। আইন ব্যবসার দ্বারা তিনি বিস্ময়করভাবে ভাগ্যোন্নয়ন করেন এবং উপার্জিত অর্থের বেশিরভাগই দরিদ্রসেবায় ও বৃত্তিদানে ব্যয় করেন। ১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞানচর্চার জন্য বৃত্তি প্রদান করেন। তিনি ১৮৬০ খ্রিষ্টাব্দে বাঁকুড়া হাই স্কুল থেকে এন্ট্রান্স পাশ করেন, এরপর ১৮৬৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে থেকে বিএ পাশ করেন। ১৮৬৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি এমএ পরীক্ষায় ইংরেজিতে প্রথম স্থান অর্জন করেন। এফএ থেকে এমএ পর্যন্ত সকল সাধারণ পরীক্ষায় সর্বোচ্চ স্থান অধিকারসহ শিক্ষাজীবনে তিনি বিশেষ প্রতিভার স্বাক্ষর রাখেন। ১৮৬৭ খ্রিষ্টাব্দে স্বর্ণপদকসহ আইন পাশ করে বহরমপুর কলেজে অধ্যাপনা করেন। ১৮৭১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি আইন পরীক্ষায় পাশ করেন এবং ১৮৮৪ খ্রিষ্টাব্দে ডক্টর অব ল‘স ডিগ্রিতে সম্মানিত হন। রাসবিহারী ঘোষ বঙ্গীয় আইন পরিষদের সদস্য (১৮৯১–৯৪, ১৯০৬–১৯০৯) এবং ভারতীয় কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন। ১৮৯৬ খ্রিষ্টাব্দে নববর্ষ সম্মাননায় তিনি ‘অর্ডার অফ দ্যা ইন্ডিয়ান এম্পায়ার‘(সিআইই) এর সহচরী হিসাবে নিযুক্ত হন এবং ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দে জন্মদিন সম্মাননায় ‘অর্ডার অফ দ্যা স্টার অফ ইন্ডিয়া‘ (সিএসআই) এর সহচরী হিসাবে নিযুক্ত হন। ১৪ই জুলাই ১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দে নাইট উপাধিতে সম্মানিত হন। রাসবিহারী ঘোষ ছিলেন একজন মধ্যপন্থী কংগ্রেসকর্মী। প্রগতিতে গভীর বিশ্বাস থাকা সত্ত্বেও তিনি ছিলেন আমূল সংস্কারের বিরোধী। যোগ্যতা ও অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের Tagore Law Professorship (১৮৭৫–৭৬) ও সম্মানসূচক ডি.এল ডিগ্রি (১৮৮৪), বঙ্গীয় আইন পরিষদের সদস্যপদ (১৮৯১–৯৪, ১৯০৬–০৯) এবং ইংরেজ সরকারের নাইট (১৯১৫) উপাধি লাভ করেন। ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ ফেব্রুয়ারি তাঁর মৃত্যবরণ করেন। গতকাল ছিলো তার ১০৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী।