রাতের আঁধারে চট্টগ্রাম রেল স্টেশনের কেবিন এলাকা থেকে ৫শ’ লিটার ডিজেল এবং রেলওয়ের মার্শালিং ইয়ার্ড থেকে ৩৯টি মূল্যবান ব্যাটারি চুরির সময় রেলের পাঁচ কর্মচারীসহ ৭জনকে গ্রেপ্তার করেছে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী। গত শুক্রবার রাত ১২টায় এ ঘটনা ঘটে।
রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা জানান, চট্টগ্রাম রেলওয়ে মার্শালিং ইয়ার্ড থেকে শুক্রবার রাতে পাচার হওয়ার সময় একটি পিকআপ ভ্যানে ৩৯টি রেলওয়ের মূল্যবান ব্যাটারি আটক করে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি)। এ ঘটনায় মোট ৪ জনকে আটক করা হয়। তার মধ্যে ২ জন রেল কর্মচারী। এই ঘটনায় আরএনবি এসআই ইমন মজুমদার বাদী হয়ে আরএনবি চট্টগ্রাম জি চৌকিতে এজাহার দেয়ার পর আটককৃতদের বিরুদ্ধে রেলওয়ে সম্পদ উদ্ধার আইনে মামলা রজ্জু করে আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হল- মোহাম্মদ জাবেদ হোসেন(২৫), মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন (৩৫), মোহাম্মদ মামুন (২৫) ও মোহাম্মদ পারভেজ (২১)। এদের মধ্যে প্রথম দুইজন রেলওয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মচারী। উদ্ধারকৃত ৩৯ টি ব্যাটারি সেলের মূল্য প্রায় ৬ লক্ষ টাকা। এদিকে একই রাতে চট্টগ্রাম রেল স্টেশনের কেবিন এলাকায় স্পেশাল ব্যালেন্স ট্রেনের সংযুক্ত বগি থেকে পাচারের উদ্দেশ্য আনা মোট ১৮ টি কন্টেনার ভর্তি প্রায় ৫০০ লিটার রেলওয়ের ডিজেল তেল উদ্ধার করে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর বিশেষ দল। ঘটনার সাথে জড়িত মোট ৩ জন রেল কর্মচারীকে আটক করা হয়। উদ্ধারকৃত তেলের মূল্য প্রায় ৩৩ হাজার টাকা। এ ঘটনায় আটককৃতরা হল- সুমন শীল (৩৫), আমজাদ হোসেন (৬৭), মোহাম্মদ শহীদ (৪৯)। তিনজনের মধ্যে প্রথমজন লোকোমাস্টার, দ্বিতীয়জন ট্রেন পরিচালক এবং তৃতীয়জন খালাসি। সকলেই রেল কর্মচারী। ঘটনাস্থল থেকে একজন লোকোমাস্টার ও একজন ট্রেন পরিচালক পালিয়ে যান বলে জানান আরএনবি সিআই মোহাম্মদ সালামত উল্লাহ। পলাতকদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে এসআই রাজ্জাকুল হায়দার বাদী হয়ে এজাহার করেন আরএনবি চট্টগ্রাম জি চৌকিতে। পরে রেলওয়ে সম্পদ উদ্ধার আইনে মামলা রজ্জু হয় এবং গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হয়।
এই ব্যাপারে আরএনবির এসিস্ট্যান্ট কমান্ড্যান্ট সত্যজিৎ দাশ আজাদীকে জানান, লকডাউনে সকল আরএনবি সদস্যকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে রেলের সম্পদ রক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই মতে সকল আরএনবি সদস্য রেলসম্পদ সুরক্ষায় সব সময় সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনের কারণেই রেলের এতো বড়ো দুটি চুরির ঘটনায় জড়িতদের তাৎক্ষণিক মালামালসহ গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে।
