রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী বলেছেন, “রাঙামাটি পর্যটন শিল্প উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট সকলের সমন্বয়ে জেলা পরিষদের উদ্যোগে প্রশাসনিক মনিটরিং কমিটির গঠনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। একই সাথে পর্যটন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে।”
আজ সোমবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে রাঙামাটি জেলা পরিষদের এনেক্স ভবনের সম্মেলন কক্ষে ‘সিএইচটি ট্যুরিজম এন্ড কালচার রিসার্চ সেন্টার’-এর আয়োজনে পার্বত্য চট্টগ্রামের পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনা ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান
অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চেয়ারম্যান বলেন, “রাঙামাটি পর্যটনের বিকাশ ও তথ্য কম সময়ের মধ্যে পর্যটকদের কাছে পৌঁছানোর জন্য জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে শহরের প্রবেশ দ্বারে নয়নাভিরাম গেইট ও ট্যুরিস্ট তথ্যসেবা কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। এছাড়াও পর্যটকদের সুবিধার্থে রাঙামাটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আধুনিক গণ শৌচাগার নির্মাণ করা হবে। শুভলং ঝর্ণাকে আরো আধুনিকায়ন করার চিন্তাভাবনাও রয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “পর্যটক সহ সকল বাসিন্দার নিরাপত্তার স্বার্থ চিন্তা করে পৌরশহরকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হবে।এর জন্য ইতোমধ্যে ৩০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সন্ধ্যাকালীন সময়ে পর্যটকদের বিনোদনের কথা মাথায় রেখে ভর্তুকি দিয়ে হলেও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ইন্সটিটিউটে প্রতিদিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। পর্যটন সংশ্লিষ্ট সেবাদানকারী প্রতিটি সেক্টরের লোকজনদেরকে নিয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।”
সিএইচটি ট্যুরিজম এন্ড কালচার রিসার্চ সেন্টার-এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোলায়মানের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য অংসুছাইন চৌধুরী, রাঙামাটি ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কৃঞ্চ কুমার সরকার, পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া ও দৈনিক গিরিদর্পণ সম্পাদক একে এম মকছুদ আহমেদ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা পরিষদের সদস্য অংসুছাইন চৌধুরী বলেন, “পাহাড়ের পর্যটন উন্নয়নে বড় বাধা হচ্ছে চাঁদাবাজি ও অস্ত্র। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যতদিন উন্নয়ন ঘটবে না ততদিন পাহাড়ে পর্যটন খাতে উন্নয়ন দৃশ্যমান হবে না।”
তিনি আঞ্চলিক সংগঠনগুলোকে সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন পর্যটন উন্নয়ন কর্মী ও রাইন্যা টুগুন রিসোর্টের পরিচালক ললিত সি চাকমা।
সংগঠনের পরিচালক মো. হান্নানের সঞ্চালনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক বিজয় ধর, পরিচালক উছিংচা রাখাইন কায়েস ও নুরুল আমিন।
সেমিনারে পর্যটন উদ্যেক্তা, রিসোর্ট মালিক, রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি, ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতি, বাস মালিক সমিতি, হোটেল মালিক সমিতি, আসবাবপত্র ব্যবসায়ী সমিতি, উইমেন্স চেম্বার, জনপ্রতিনিধি, সংবাদকর্মী, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও সুশীল সমাজের প্রধিনিধিরা অংশ নেন।
পার্বত্য চট্টগ্রামের পর্যটন শিল্প বিকাশে সিএইচটি ট্যুরিজম এন্ড কালচার রিসার্চ সেন্টার গবেষণা ও সচেতনতামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে অবদান রাখতে চায়। তারই ধারাবাহিকতায় সেমিনার, প্রচারাভিযান, পর্যটন সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ সহ নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়।