রহস্যময় স্ক্রিমিং টানেল

আরিফ রায়হান | বুধবার , ২৭ জুলাই, ২০২২ at ৪:৫৩ পূর্বাহ্ণ

রহস্যের পেছনে ছুটতে আমাদের কার না ভালো লাগে। আর পুরো পৃথিবীটাই তো রহস্যময়। এই পৃথিবী যত না সুন্দর তারচেয়ে বেশি রহস্যে ভরপুর। রহস্যের পেছনে ছুটতে গিয়ে মানুষ আবিস্কার করে অনেক কিছু। তেমনি স্ক্রিমিং টানেলে রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করেছে মানুষ।
স্ক্রিমিং টানেল। এ কেমন সুড়ঙ্গ? ওই সুড়ঙ্গে কি কারো চিৎকার কিংবা আর্ত্মনাদ শোনা যায়? মনে মনে এ প্রশ্ন জাগাটা খুবই স্বাভাবিক। অনেকেই এ দাবি করেন। আসলে এখানে একটি মেয়ের করুণ আর্ত চিৎকার শোনা যায়।
আমেরিকা-কানাডার বিশ্বখ্যাত নায়াগ্রা জলপ্রপাতের পাশে গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রেলওয়ে যা বর্তমানে কানাডিয়ান ন্যাশনাল রেলওয়ে টানেল হিসেবে পরিচিত এই স্ক্রিমিং টানেল। নায়াগ্রা জলপ্রপাত, অন্টারিও, কানাডার উত্তর-পশ্চিম কোণে একটি ছোট চুনাপাথর নির্মিত এই টানেল ১৬ ফুট (৪.৯ মিটার) উচ্চ এবং ১২৫ ফুট (৩৮ মিটার) দীর্ঘ। এটি ১৮০০’র দশকের প্রথম দিকে নির্মিত হয়। স্ক্রিমিং টানেলকে বলা হয় চিৎকার টানেল বা চিৎকার সুড়ঙ্গ। এই স্থানে যেতে পারে তারাই যারা খুবই সাহসী ও নির্ভীক। একই সাথে যারা ভয়-ডরহীনভাবে প্রেতাত্মাদের সন্ধান করতে পারে। নায়াগ্রা জলপ্রপাত হতে নিউইয়র্কের টরেন্টো পর্যন্ত যে রেললাইন চলে গেছে সেটার পাশে এই টানেলের অবস্থান।
রহস্যময় এই সুড়ঙ্গকে অনেকেই ‘নীলভূত সুড়ঙ্গ’ বলে থাকে। এটা আসলে হাঁটচলা করার দুই মুখ খোলা কোনো সুড়ঙ্গ নয়। বন্যা বা বৃষ্টির জমে থাকা পানিতে যাতে রেলপথ ডুবে না যায়, এ জন্য পানি নির্গমনের পথ হিসেবে এই সুড়ঙ্গ তৈরি করা হয়। চুনাপাথরের ইট দিয়ে তৈরি এই সুড়ঙ্গটি। এই সুড়ঙ্গ নিয়ে নানাজনে নানা কথা শোনা যায়। কেউ কেউ বলে, বহু বছর আগে এক রাতে ওই সুড়ঙ্গের কাছে কোনো খামার বাড়িতে আগুন ধরে যায়। সেখান থেকে চিৎকার দিতে দিতে জ্বলন্ত অবস্থায় অল্প বয়সী একটি মেয়ে বেরিয়ে আসে। দৌড়াতে দৌড়াতে ওই সুড়ঙ্গে ঠিক মাঝখানে গিয়ে সে পুড়ে শেষ হয়। আর ওই মেয়েটির প্রেতাত্মাই সুড়ঙ্গের ভেতর চিৎকার করে বেড়ায়।
আবার শোনা যায়, ক্রোধে উন্মত্ত এক বাবা তাঁর তরুণী মেয়েকে পুড়িয়ে মারেন সুড়ঙ্গের ভেতর। তারই দুঃখী আত্মা চিৎকার করে এখনও। এ ছাড়া এ ধরনের আরও কিছু কাহিনি শোনা যায় ওই সুড়ঙ্গ সম্পর্কে। তবে সব ভৌতিক কাহিনিতেই এক তরুণীর কথাই রয়েছে।
শতবর্ষী এই সুড়ঙ্গ ছাতলা আর লতাগুল্ম জমে এমনিতেই ভুতুড়ে দেখায়। তার ওপর প্রচলিত এসব কাহিনি পর্যটকদের জন্য বাড়তি আকর্ষণ যোগ করেছে। অনেকেই সেখানে ছুটে যান রহস্যের গন্ধ পেয়ে। তবে কর্তৃপক্ষ রাতের বেলা সেই সুড়ঙ্গে অবস্থান নিষিদ্ধ করেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতৃণমূল নেতাকর্মীদের জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে
পরবর্তী নিবন্ধভুতোর গায়ে জ্বর