রংমালা লামচিতা বানরের চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড

চকরিয়া বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক

চকরিয়া প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ১ মার্চ, ২০২২ at ১০:৫৫ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারায় অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে বয়সের ভারে নানা রোগে আক্রান্ত সেই মাদী হাতি রংমালার চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছে পার্ক কর্তৃপক্ষ। গতকাল সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা হাতিটিকে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসা প্রদান কার্যক্রম শুরু করেছে। একইসাথে মৃত্যুপথযাত্রী লামচিতা ও আসামি বানরের চিকিৎসা কার্যক্রমও শুরু হয়েছে। চিকিৎসার আওতায় নেওয়া হয়েছে পার্কের ওয়াইল্ডবিস্ট ও গয়ালকে। পার্কের বন্য প্রাণী হাসপাতালের সামনে ও কোয়ারেন্টাই শেডে এই চিকিৎসা কার্যক্রম চলে।
ধারণা করা হচ্ছে, প্রয়োজনীয় চিকিৎসায় অসুস্থ হাতিসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণী সুস্থ হয়ে উঠবে। এজন্য প্রাণীগুলোকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখবেন পার্ক কর্তৃপক্ষ। আর এসব বিষয়ে সার্বিক তদারকি করবেন মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা।
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক এবং বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রামের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রফিকুল ইসলাম চৌধুরী পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করে দেন। এতে আহবায়ক করা হয়েছে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারী ও অ্যানিমেল সাইয়েন্স বিশ্ববিদ্যালয় মেডিসিন ও সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ড. বিবেক চন্দ্র সূত্রধরকে। তিন সদস্য যথাক্রমে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ভজন চন্দ্র দাস, ঢাকা প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (অব.) ডা. মো. ফরহাদ হোসেন, চকরিয়া উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুপন নন্দী। বোর্ডের সদস্য সচিব করা হয় পার্কের বন্যপ্রাণী চিকিৎসক হাতেম সাজ্জাদ মো. জুলকার নাইমকে।
মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক ড. বিবেক চন্দ্র সূত্রধর দৈনিক আজাদীকে বলেন, বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে পড়া সাফারি পার্কের মাদী হাতিটিকে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। আগামী একমাস পর্যন্ত এই হাতিটির সার্বিক চিকিৎসা চলবে। এজন্য বেশকিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর প্রয়োজনীয় ঔষুধ-সামগ্রী নিয়মিতভাবে হাতিটিকে দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী নিয়মিতভাবে হাতিটির চিকিৎসা চলমান রয়েছে কিনা তাও সার্বক্ষণিক তদারকি করা হবে। এজন্য পার্কের বন্যপ্রাণী চিকিৎসককে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তত্ত্বাবধায়ক) মো. মাজহারুল ইসলাম দৈনিক আজাদীকে বলেন, শুধু অসুস্থ মাদী হাতি ‘রংমালা’ নয়, পার্কে থাকা যেসব বন্যপ্রাণী বার্ধক্যের কারণে অসুস্থ অবস্থায় রয়েছে তাদেরও চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয়েছে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে। চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হওয়া প্রাণীর তালিকায় আরো রয়েছে লামচিতা, আসামি বানরও। এছাড়াও পার্কে থাকা আফ্রিকান প্রজাতির ওয়াইল্ডবিষ্ট এবং গয়ালের চিকিৎসাও চলছে। আগামী একমাস পর্যন্ত বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সমন্বয়ে গঠিত পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড এসব প্রাণীর চিকিৎসা কার্যক্রম তদারকি করবেন।
উল্লেখ্য, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি দৈনিক আজাদীর শেষ পৃষ্টায় ‘বার্ধক্যের ভারে তিন প্রাণী’ শিরোনামে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর পর গতকাল থেকে পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড প্রাণীগুলোর চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করে। যদিওবা পার্ক কর্তৃপক্ষ আগে থেকে এসব প্রাণীর সর্বশেষ অবস্থা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করাসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে নিচ্ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগাউসিয়া কমিটি পাহাড়তলী থানার মাহফিল
পরবর্তী নিবন্ধ১১ হাজার ভোল্টের বৈদ্যুতিক খুঁটিতে উঠে লোকটি যা করল