যে কারণে বারবার দুর্ঘটনা

মীরসরাই প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ২১ জুন, ২০২২ at ৬:১৫ পূর্বাহ্ণ

মীরসরাই উপজেলার ১২ নম্বর খৈয়াছরা ইউনিয়নের খৈয়াছরা ঝর্ণা ও নাপিত্তাছরা ঝর্ণা, ১৫ নম্বর ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের রুপসী ঝর্ণা এবং মীরসরাই সদর সংলগ্ন বোয়ালিয়া ঝর্ণা দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন অনেক দর্শনার্থী। এখানকার অব্যবস্থাপনা দেখে অসন্তোষ হলেও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রকৃতি প্রেমিরা যেন জীবনের ঝুঁকিটাই নিয়ে ফেলেন। নানা প্রতিকূলতা ও অব্যবস্থাপনায় পড়ে গত ১০ বছরে এসব ঝর্ণায় অন্তত অর্ধশত দর্শনার্থীর প্রাণ যায়। তবু এতে টনক নড়েনি প্রশাসন কিংবা কর্তৃপক্ষের।

স্থানীয়দের ভাষ্য, বর্ষা মৌসুমে এখানকার পাহাড়ি মাটি ও শ্যাওলাযুক্ত পাথরগুলো অনেক বেশি পিচ্ছিল হয়ে যায়। তবে বর্ষায় জলের স্তর অনেক বেড়ে যায় বলে ঝর্ণাগুলো দেখতে ভারী সুন্দর দেখায়। মূল ঝর্ণাস্থলে যাওয়ার রাস্তা অধিকাংশই ছড়া পথ। তাই অনেক সময় দেখা যায় ঝর্ণায় পৌঁছানোর সেই পুরো ছড়া পথটাই হাঁটু সমান পানিতে ডুবে থাকে। আবার ভারী বৃষ্টি চলে আসায় সেই ছড়ায় এখন কোমর বা তারও অধিক পানি। পথগুলো হয়ে গেছে দর্শনার্থীদের চলাচলে ভয়ংকর রকমের পিচ্ছিল। এখানে যেকোনো সময় ঘটে যায় কোনো না কোনো দুর্ঘটনা। এসব ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি লোকেশনে নেই কোনো নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, নেই পর্যাপ্ত সতর্কবার্তা, নেই গাইড দ্বারা নিয়ন্ত্রণ, নেই নির্দেশনা সতর্কীকরণ ব্যবস্থা। এসব ঝুঁকিপূর্ণ পথে দর্শণার্থী আগন্তুকদের অসতর্কতার জন্য প্রতিবছর ৫-৭ জন করেই মৃত্যুবরণ করছে। গত দশ বছরে প্রায় অর্ধশত মানুষ এসব ঝর্ণায় মৃত্যুবরণ করা ছাড়াও এসময়ে আহত হয়েছেন অন্তত হাজার সংখ্যক দর্শণার্থী। এছাড়া ছোট-বড় নানান প্রতিকূলতার মুখোমুখি তো প্রায় সব দর্শণার্থীকেই হতে হয় বেড়াতে এসে। দুবছর আগে ২০ জনের একটি শিক্ষার্থীর দল বোয়ালিয়া ঝর্ণা দেখতে গিয়ে আটকা পড়ার পর ৯৯৯ এ কল দিলে অবশেষে রাতে তাদের পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার করে।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে মীরসরাইয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিনহাজুর রহমান বলেন, আমরা ইতিমধ্যে বনবিভাগের ইজারা বন্ধ করে পর্যটন বিভাগের মাধ্যমেই এখন দর্শনীয় স্পটগুলোর সঠিক ব্যবস্থাপনার জন্য প্রস্তাবনা দিয়েছি। আশা করছি শীঘ্রই নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব ভাল ব্যবস্থাপনা উপহার দিতে পারব।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজুল হক জুনু বলেন, টানা বৃষ্টি ও কখনো ভারী বৃষ্টির দরুন ঝর্ণা ও ছড়াগুলোয় অস্বাভাবিক পানি বেড়ে যাওয়ার এই সময় মানুষকে ঝর্ণা দেখতে না যাওয়ার বিষয়ে শীঘ্রই নোটিশ জারি করা হবে। এমন দুর্ঘটনা সত্যিই অপ্রত্যাশিত। শীঘ্রই উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় সময়োপযোগী উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রদীপ ও চুমকির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ
পরবর্তী নিবন্ধলোহাগাড়ায় পাঁচটি ওয়ান শুটার গানসহ যুবক আটক