যুক্তরাষ্ট্রে সুপারমার্কেটে ঢুকে নির্বিচারে গুলি, নিহত ১০

হত্যাযজ্ঞের পেছনে সেই বর্ণবাদী বিশ্বাস

| সোমবার , ১৬ মে, ২০২২ at ৪:৫৩ পূর্বাহ্ণ

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক রাজ্যের বাফেলো শহরে কৃষ্ণাঙ্গ অধ্যুষিত এলাকার একটি সুপারমার্কেটে শ্বেতাঙ্গ এক অস্ত্রধারীর গুলিতে ১০ জন নিহত ও আরও তিনজন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। খবর বিডিনিউজের।
বিবিসি জানিয়েছে, এ ঘটনার পর পুলিশ পেইটন এস গেন্ড্রন নামে ১৮ বছর বয়সী একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃত পেইটন অনলাইনে যে বিদ্বেষপূর্ণ লেখাটি পোস্ট করেছেন, তার ১৮০ পৃষ্ঠার পুরোটাজুড়েই বারবার বোঝানো হয়েছে যে শ্বেতাঙ্গ মার্কিনিরা অন্য বর্ণের মানুষের সংখ্যাধিক্যের কারণে বিলুপ্ত হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। শ্বেতাঙ্গ ওই তরুণ শনিবার বিকালে বাফেলোর ব্যস্ত এক সুপারমার্কেটে ঢুকে গুলি চালানো শুরু করে। একটি ক্যামেরার মাধ্যমে সে পুরো হত্যাকাণ্ড অনলাইনে সরাসরি দেখায়। এ ঘটনাকে ‘সহিংস উগ্রবাদী’ কর্মকাণ্ড হিসেবে বর্ণনা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই। এফবিআই বাফেলো কার্যালয়ের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা স্টিফেন বেলনগিয়া সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, আমরা একে বিদ্বেষমূলক অপরাধ ও বর্ণবাদ-অনুপ্রাণিত সহিংস উগ্রবাদী ঘটনা উভয় আলোকেই তদন্ত করছি।
বাফেলো পুলিশ কমিশনার জোসেফ গ্রামাগলিয়া বলেছেন, ১৩ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই কৃষ্ণাঙ্গ। আহত তিনজনই সুপারমার্কেটে কাজ করতেন, তাদের আঘাত প্রাণ-সংহারী নয়।
নিহতদের মধ্যে সুপারমার্কেটটিতে নিরাপত্তা রক্ষী হিসেবে কাজ করা অবসরপ্রাপ্ত এক পুলিশ সদস্যও আছেন; নিহত হওয়ার আগে তিনি সন্দেহভাজন হামলাকারীর ওপর গুলি চালানোর চেষ্টা করেছিলেন বলে জানা গেছে।
হামলার সময় দোকানে কাজ করা শনেল হ্যারিস বাফেলো নিউজকে জানান, পেছনের দরজা দিয়ে ভবন থেকে দৌড়ে পালানোর সময় তিনি ৭০টিরও বেশি গুলির শব্দ শুনেছেন। দোকান পরিপূর্ণ ছিল, এটা উইকেন্ড (সাপ্তাহিক ছুটির আগে)। মনে হচ্ছে যেন দুঃস্বপ্ন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বজুড়ে একাধিক ম্যাস শুটিং বা সহিংসতায় জড়িত বন্দুকধারীরা ওই ‘রিপ্লেসমেন্ট থিওরি’ বা ‘প্রতিস্থাপন তত্ত্ব’ নামে পরিচিত বর্ণবাদী ধারণার উল্লেখ করেছেন।
ধারণাটি একসময় কট্টর ডানপন্থি অংশের মধ্যে জনপ্রিয় ছিল, কিন্তু ক্রমেই এটি যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারায় চলে আসছে; রাজনীতিকদের কথোপকথন এমনকি জনপ্রিয় টেলিভিশন অনুষ্ঠানগুলোতেও এই বর্ণবাদী ধারণা এখন নিয়মিতই আলোচিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস।
চরমপন্থি এই ধারণাটি থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই যুক্তরাষ্ট্র ও এর বাইরে একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটছে। ২০১৯ সালে ক্যালিফোর্নিয়ায় ইহুদিদের প্রার্থনালয় থেকে একই বছর নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুই মসজিদে ৫১ ব্যক্তিকে হত্যার পেছনেও ওই বিশ্বাস কাজ করেছে। বাফেলোর পেইটনের মত ক্রাইস্টচার্চের খুনিও শরীরে লাগানো ক্যামেরায় ওই হত্যাকাণ্ডের ভিডিও লাইভস্ট্রিম করেছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাসের ধাক্কায় পরিচ্ছন্নতাকর্মীর মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধভূমধ্যসাগর থেকে ৩২ বাংলাদেশি উদ্ধার