যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি চাপ হিসেবে দেখছে না সরকার : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

যথেচ্ছ ব্যবহার যেন না হয় নতুন নীতির : প্রতিমন্ত্রী

| শুক্রবার , ২৬ মে, ২০২৩ at ৫:০৪ পূর্বাহ্ণ

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতিকে সমর্থন করে। কারণ দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিতে যারা সুষ্ঠু নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করবে ওয়াশিংটন এমন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করার জন্য একটি আগাম সতর্কতা জারি করেছে। বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের ঘোষণার প্রতি ঢাকার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, নতুন মার্কিন নীতি বরং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমাদের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করেছে। খবর বাসসের। তিনি বলেন, নীতিটি ভালো, এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। তিনি আরো বলেন, এটি বাংলাদেশ সরকারের ওপর কোনো বাড়তি চাপ সৃষ্টি করেনি যখন ওয়াশিংটনের সঙ্গে ঢাকার সম্পর্ক চমৎকার রয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা করছেন যে, নতুন মার্কিন ভিসা নীতি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে নির্বাচন নিয়ে কোনও সহিংসতা না করতে সতর্ক করবে। কারণ এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র ক্ষমতাসীন দলের জন্য নয়, বরং বিরোধীদের জন্যও। তিনি বলেন, সরকার অগ্নিসংযোগ, সহিংসতা ও ধ্বংসযজ্ঞ চায় না।

মোমেন বলেন, ব্লিঙ্কেন একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করলে তার মার্কিন সমকক্ষ তাকে সপ্তাহ আগে নতুন ভিসা নীতি সম্পর্কে অবহিত করেছিলেন। মোমেন তাকে পাঠানো ব্লিঙ্কেনের চিঠির উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, এই নীতি বাংলাদেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রধানমন্ত্রী হাসিনার বিবৃত প্রতিশ্রুতিকে সমর্থন করে এবং বাংলাদেশী নাগরিক বা সকল রাজনৈতিক দলের কর্মকর্তারা গণতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ দাবিকে ক্ষুণ্ন করলে যুক্তরাষ্ট্র পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে। মোমেন বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময় ভোটারদের ওপর বিশ্বাস রাখে।

এদিন পররাষ্ট্র দফতরের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর অধীনে একটি গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিকভাবে স্থিতিশীল দেশ হিসেবে জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে ধারাবাহিক নির্বাচন অনুষ্ঠানের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের রয়েছে। জনগণের ভোটাধিকারের অধিকারকে আওয়ামী লীগ সরকার একটি রাষ্ট্রীয় পবিত্রতা হিসাবে বিবেচনা করে যে দলের সেই অধিকার রক্ষার জন্য নিরলস সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের রাজনৈতিক উত্তরাধিকার রয়েছে। সরকার সব শান্তিপূর্ণ ও বৈধ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য সমাবেশ ও সংঘটনের স্বাধীনতাকে গুরুত্ব দেয়।

এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, এটা যুক্তরাষ্ট্রের একটি নতুন সংযোজন। যেকোনো নতুন প্রভিশনেই একটা সংশয় থাকে, প্রশ্ন থাকে। তবে একটা সময় পার হলে এটা পরিপূর্ণ হয়। যুক্তরাষ্ট্রের সংশোধিত আইনটি মাত্র এক বছর আগে করা হয়েছে। যেটা তারা মাত্র দুইএকটি দেশে প্রয়োগ করেছে। সেই কারণে আমরা বলেছি, এটার যথেচ্ছ ব্যবহার যেন না হয়, যোগ করেন প্রতিমন্ত্রী। গতকাল সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

যুক্তরাষ্ট্র কেন বাংলাদেশকে নিয়ে এই সিদ্ধান্ত নিলএমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটা বোধ হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে জিজ্ঞাসা করলে জানা যাবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র গত ৩ মে এক বৈঠকে আমাদের বিষয়টি জানিয়েছিল। এই বার্তাটি যেন ভুলভাবে না যায়। সঠিকভাবে ধারণাটি যায়। আপনারা গত ৫৭ দিনের ঘটনা প্রবাহ দেখেছেন, এটা নিয়ে জাতীয়তাবাদী দল অপব্যবহারের চেষ্টা করেছে। তবে দুই বছর আগে যেটা ঘটেছিল, এটা ঠিক তেমনটি নয়। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটাতে খুশি অখুশির কোনো বিষয় নেই। তারা বলেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সেটাকে আমলে নিয়েই তারা এটা (নতুন ভিসানীতি) দিয়েছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্যই নতুন ভিসানীতি : পিটার হাস
পরবর্তী নিবন্ধশান্তিপূর্ণ ভোটে ইসিতে স্বস্তি