যা পেয়েছি এটাই অনেক বেশি : সাদ

| রবিবার , ১১ জুলাই, ২০২১ at ১০:২৯ পূর্বাহ্ণ

স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরের ইতিহাসে কান চলচ্চিত্র উৎসবের মূল আয়োজনে প্রথমবার বাংলাদেশকে নিয়েছেন নির্মাতা আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ। বিশ্ব চলচ্চিত্রের এ মর্যাদাপূর্ণ আসরে অফিসিয়াল সিলেকশনে জায়গা পেয়েই ইতিহাসে নাম উঠেছে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ ছবির; তার উপর দর্শকদের ‘স্টান্ডিং ওভেশন’ আবেগতাড়িত করেছে ছবির নির্মাতা-অভিনয়শিল্পীকে। খবর বিডিনিউজের।
শুক্রবার ডয়চে ভেলে বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নির্মাতা সাদ বলছেন, যেটা পেয়েছি সেটাই অনেক বেশি হয়ে গেছে আমার জন্য। ভিডিও সাক্ষাৎকারে গণমাধ্যমের সামনে না আসা, ছবিটি নিয়ে ভাবনা ও পরিকল্পনাসহ নানা বিষয়ে কথা বলেছেন এ নির্মাতা।
গণমাধ্যমের সামনে না আসার কারণ
আমি খুবই অস্বস্তিবোধ করি। মনোযোগ সামলানো আমার জন্য খুব কঠিন। আমি মনে করি, আমার পুরো টিমের মনোযোগ পাওয়া উচিত। পুরো টিম অনেক কষ্ট করেছে। ছবিটা মনোযোগ পেলে আমার ভালো লাগে। আমার অগোচরে থাকতে ভালো লাগে।
কানে এসে যেমন লাগছে
কানে ছবিটির প্রদর্শনীর আগ পর্যন্ত সত্যি আমি খুবই উদ্বিগ্ন ছিলাম। আমরা সবাই খুব মানসিক চাপে ছিলাম, ভাবছিলাম, দর্শকরা কেমন প্রতিক্রিয়া জানাবে। প্রদর্শনীর পর যেমন প্রতিক্রিয়া পেয়েছি সেটা চিন্তাও করিনি। ডিসেন্ট একটা স্ক্রিনিং হলেই আমরা খুশি হতাম।
সত্যজিৎ রায়ের পর অফিসিয়াল সিলেকশনে সাদ
এটা আসলে অনেক বিশাল পওয়া। ছবি বানানোর সময় আমরা আসলে ওভাবে চিন্তাই করিনি। ছবিটি বানানোটাই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এখন যা হচ্ছে, তাতে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। এখন অনেক কিছুই ঘটতেছে। আমি সৌভাগ্যবান ও সম্মানিতবোধ করছি। সর্বোচ্চটুকু দিয়ে নিজেদের মতো করে ছবিটাই বানাতে চেয়েছি আমরা।
ছবি বানানো একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া। ছবিটা বানাতে চাই-এটা চিন্তা করতেও একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। আমি কী চাই, কোন প্রশ্নগুলো তুলতে চাই, কোন জটিল চরিত্র নিয়ে কাজ করতে চাই-এটা খোঁজাও একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়ার অংশ। ফলে আমার বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ।
বাজারে কী হবে, মানুষ কোন স্টোরিতে কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে-এভাবে চিন্তা করে আমার পক্ষে চলচ্চিত্র বানানো সম্ভবপর নয়। আমি কোন ছবি বানাতে চাই, সেটা বুঝতে দুই-আড়াই বছর চিন্তাই করতে হয়েছে। একের পর এক খসড়ার পর, ছবিতে যুক্তর পর বাঁধনের সঙ্গেও আলোচনা করেছি। ছবির গল্প ডেভলপ করতে করতে অবশেষে মনে হয়েছে, এই ছবিটা আমি বানাতে চাই। এখানে বাইরের প্রভাব কিংবা অন্য কোনো চেষ্টা করতে গল্পটা বলতে চাইনি।
অভিজ্ঞতার বাইরে লিখতে পারেন না
ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার বাইরে আমি লিখতে পারি না। আমি যদি লিখি কোনোভাবে তাতে আমার ব্যক্তিগত জীবনের পর্যবেক্ষণ উঠে আসে। আমার চিন্তা-ভাবনা রেহানার মধ্য দিয়ে তুলে আনতে চেয়েছি-বাপারটা তেমন না। তবে ডেফিনেটলি একটা একটা পার্সোনাল প্রসেস। আমি আমার জীবনে যেভাবে রেহানা দেখেছি সেভাবেই তুলে এনেছি। কীভাবে তুলে আনলে দর্শকদের মাঝে প্রভাব তৈরি করতে সেই হিসাব করে গল্পটা আসলে লেখা হয়নি। ওভাবে আমি আমার ক্যারেক্টারকে আপ্রোচ করি না। আমি ছোটবেলা থেকেই স্কার্ফ পড়তে দেখেছি, আজান দিলে আপুদের মাথায় কাপড় দিতে দেখেছি-এসব ছোটখাট ডিটেলস জীবন থেকেই নেওয়া।
রাজনৈতিক চলচ্চিত্র নির্মাতা নন
আমি নিজেকে রাজনৈতিক চলচ্চিত্র নির্মাতা মনে করি না। পলেটিক্যাল স্টেটমেন্ট দেওয়ার উদ্দেশ্য থেকে ছবিটি লিখি নাই কিংবা বানাইনি। আমি রেহানাকে অনুসরণ করছিলাম। ওকে বিভিন্ন পরিস্থিতির মুখোমুখি করতে গিয়ে যে প্রশ্নগুলো তুলে আনা উচিত সেটাই করেছি। আমার মনে হয় ছবিটি তখনই সফল হবে যখন এটি কাউকে চিন্তা করতে সহায়তা করবে। ছবিটি কোনো উত্তর দিয়ে নয়, প্রশ্ন দিয়ে শেষ হয়।
ছবিটি নিয়ে কতদূর যেতে চান
সন্তুষ্ট মানে, যেটা পেয়েছে সেটাই অনেক বেশি হয়ে গেছে আমার জন্য। এটা ডিল করতে আমার টাইম লাগবে। সত্যি বললে বলতে চাই, আমি চিটাগাং ফিরতে চাই। আমার জন্য অনেক বেশি। কিন্তু মানুষ তো পাইলে আরও পাইতে চায়। কোনো অ্যাওয়ার্ডস পেলে তো অবশ্যই ভালো লাগে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিশেষ টেলিছবিতে আফজাল-মৌ
পরবর্তী নিবন্ধসরকারি ডেটাবেজ বলছে চলে আসছে পিক্সেল ৫এ