যানজট আরও বাড়াচ্ছে বাস বে

কাপ্তাই রাস্তার মাথায় নির্ধারিত লাইনে থামছে না বাস, বাড়ছে ভোগান্তি

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ২১ নভেম্বর, ২০২১ at ৯:১৮ পূর্বাহ্ণ

বাস-বে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় একটি আধুনিক ও জনপ্রিয় পদ্ধতি। গণপরিবহনের মধ্যে বাস চলাচলে নিয়ন্ত্রণ, যাত্রী নেওয়ার ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা আনার মাধ্যমে যানজট নিয়ন্ত্রণের জন্য বাস-বে পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। কিন্তু নগরীর কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকায় বাঁশ দিয়ে করা পরীক্ষামূলক বাস-বে যানজট কমার চেয়ে যেন জটই পাকাচ্ছে বেশি। তবে ট্রাফিক বিভাগ বলছে, যানজট কমানোর জন্যই বাস-বে করা হয়েছে। এখানে বাসগুলোকে নিয়ম মানতে বাধ্য করা হবে।
শনিবার বিকেল পৌনে চারটা। কাপ্তাই রাস্তার মাথা মোড়ে গিয়ে দেখা গেছে, বাঁশ দিয়ে তৈরি করা বে-তে দীর্ঘক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে আছে একটি বাস। আর পেছনের ছোট লেগুনা কিংবা মিনিবাসগুলো বাস-বে দিয়ে সামনে আসতে না পেরে বে’র বাইরে মূল সড়ক দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে এসে যাত্রী নিচ্ছে। এতে পুরো সড়কের একপাশ একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। পরে পেছনের অন্য যানবাহনগুলো অনেকটা বাধ্য হয়ে, আবার অনেকে প্রতিযোগিতা দিয়ে সামনে আসার জন্য বিপরীতমুখী সড়ক ধরে সামনে এগিয়ে চলছে। এভাবে ৫-১০ মিনিট পরপর একেকটি বাস বে ত্যাগ করলে আরেকটি বাস এসে দাঁড়ায়। একই সময় বাস-বে’র মধ্যেই একপাশ দখল করে রাইড শেয়ারের ১৫-২০টি মোটরসাইকেল অবস্থান নিয়ে আছে যাত্রীর জন্য। এসময় ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের কমপক্ষে ৫০ মিটার দূরের শ্যামলী বাস কাউন্টারের সামনে সিএনজি শ্রমিক, ট্রাফিকের স্থানীয় দালালদের সঙ্গে আড্ডা দিতে দেখা গেছে।
কথা হলে আবদুল গফুর নামের এক যাত্রী বলেন, প্রতিদিন যাতায়াত করতে হয় এই সড়ক দিয়ে। কাপ্তাই রাস্তার মাথায় গত কয়েকদিন ধরে লম্বা বাঁশ দিয়ে বাসের জন্য রাস্তা নির্ধারিত করে দিয়েছে। এখন নির্ধারিত স্থানে একটি বাস সবসময় দাঁড়িয়ে থাকে। যে কারণে পেছনের অন্যবাসগুলো এই লাইনে আসে না। পেছনের বাস, সিএনজি অটোরিকশাগুলো মূল সড়কের পুরোটাই দখল করে রাখছে। বাঁশ দিয়ে একটি আলাদা লাইন করার জন্য যানজট আরও বেড়েছে।
ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে চান্দগাঁও এরিয়ায় ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন আশিষ কুমার পাল। অতি সম্প্রতি তার স্থলে নতুন আরেকজন টিআই পদায়ন করা হলেও এখনো দায়িত্ব বুঝে নেননি। তাছাড়া কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকায় প্রতি সপ্তাহে নতুন নতুন সার্জেন্টদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। চলতি সপ্তাহে দায়িত্ব পালন করছেন সার্জেন্ট আরাফাত আহমেদ প্রণয়। তিনি দৈনিক আজাদীকে বলেন, ডিসি স্যারের নির্দেশনায় পরীক্ষামূলকভাবে বাস-বে করা করা হয়েছে। এখানে সুফল মিললে পর্যায়ক্রমে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বাস-বে করা হবে। বে কার্যকরে ট্রাফিক সদস্যদের নিষ্ক্রিয় ভূমিকার বিষয়ে জানতে চাইলে এ ট্রাফিক কর্মকর্তা বলেন, চালকদের নিয়ম মানানো কষ্টসাধ্য। আমরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ডিউটিতে আছি। তারপরেও আমরা এখানে এক সপ্তাহের জন্য দায়িত্বপালন করতে আসি। যেহেতু টিআই স্যার স্থায়ীভাবে দায়িত্বপালন করেন, তিনিই এ বিষয়ে স্পষ্ট করে বলতে পারবেন।
শনিবার বিকেলে কথা হলে চান্দগাঁও এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আশিষ কুমার পাল বলেন, কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকায় বাস-বে দেওয়া হলেও কার্যক্রম সঠিকভাবে হচ্ছে না। তারপরেও আমি ওখানকার দায়িত্বপালনকারী সার্জেন্ট আরাফাতকে বলে দিচ্ছি। আজ (শনিবার) সকালেও আমি ছিলাম, বেশ কয়েকটি যানবাহনকে মামলাও দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে সিএমপির উপ-কমিশনার (ট্রাফিক-উত্তর) মোহাম্মদ আলী হোসেন বলেন, কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকায় দিনের বেশিরভাগ সময় যানবাহনের চাপ থাকে। এখানে পরিদর্শন করে দেখেছি- মোড়েই কিছু গাড়ি সবসময় দাঁড়িয়ে জটলা তৈরি করে রাখে, যে কারণে আমরা প্রাথমিক পর্যায়ে বাঁশ দিয়ে বাসের জন্য একটি বেই তৈরি করে দিয়েছি। পর্যায়ক্রমে এখানে আরসিসি রোড ডিভাইডার বসিয়ে বাস-বে করে দেওয়া হবে। তিনি বলেন, আমরা এখানে বাস-বে কার্যকর করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। স্পটে যখন ট্রাফিকের কোনো সদস্য না থাকে তখন চালকেরা আবারো জটলা সৃষ্টি করে। আমরা এখন থেকে বাসগুলোকে নিয়ম মেনে বাস-বে ব্যবহার করতে বাধ্য করব। বাসগুলো শৃক্সখলায় চলে আসলে ছোট অন্য যানবাহনগুলোও আর জটলা তৈরি করার সাহস পাবে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধস্যার চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রামন : নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী