ময়লার ভাগাড়ে, খালে পচা পেঁয়াজ

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তের সামনেও স্তূপ পাইকারিতে দর নিম্নমূখী

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ৩০ অক্টোবর, ২০২১ at ৬:৩১ পূর্বাহ্ণ

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের অধিকাংশ আড়তের সামনে সারি সারি পচা পেঁয়াজের স্তূপ। এসব পেঁয়াজের উৎকট গন্ধ জনসাধারণের বমির উদ্রেক করছে। বাধ্য হয়ে তাই পথচারী ও ক্রেতা-বিক্রেতারা নাকে হাত চেপে হাঁটছেন। গত তিন সপ্তাহ ধরে এই দৃশ্যটা যেন স্বাভাবিক। ব্যবসায়ীরা বর্তমানে দোকান গুদামে পচে যাওয়া এসব পেঁয়াজ ময়লার ভাগাড় ও চাক্তাই খালে সরাসরি ফেলে দিচ্ছেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মিয়ানমার থেকে আমদানি হওয়া বেশিরভাগ পেঁয়াজই এসেছে পচে যাওয়া অবস্থায়। এরমধ্যে বেছে বেছে ব্যবসায়ীরা আলাদাভাবে সেগুলো বস্তা পুরে বিক্রি করছিলেন। একটি ৫০ কেজি বস্তা থেকে মোটামুটি ভালো পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে ২০ কেজির মতো। আবার নষ্ট ও পচে যাওয়া এসব পেঁয়াজ ভ্রাম্যামাণ হকাররা ভ্যানে বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছেন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পচা পেঁয়াজের গুণগত মান নষ্ট হয়ে যায়। তাই এসব পেঁয়াজ খেলে খাদ্যে বিষক্রিয়া হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
গতকাল সরেজমিনে মধ্যম চাক্তাইয়ের পইলার পুল ব্রিজের নিচে দেখা মিলেছে পচে যাওয়া বস্তার স্তূপের। ময়লার ভাগাড় থেকে কয়েকজন পথশিশু পেঁয়াজ সংগ্রহ করছে। এছাড়া অনেক ব্যবসায়ী এসব পেঁয়াজ বস্তা থেকে খুলে সড়কে শুকাতে দিয়েছেন।
পচে যাওয়া পেঁয়াজ শুকাতে ব্যস্ত সৈয়দ হোসেন নামের একজন শ্রমিক জানান, মিয়ানমার থেকে ট্রলারে আসার পথে বস্তায় পানি প্রবেশ করায় পচে যায় বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ। নষ্ট পেঁয়াজের সংস্পর্শে ভালো পেঁয়াজও খারাপ হয়ে যায়। এছাড়া গত দুই সপ্তাহ আগে খুব বেশি গরম পড়েছিল, গরমেও পেঁয়াজ পচে যায়। শুকানোর পরে বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ ফেরিওয়ালারা ভ্যানে বিক্রি করার জন্য পেঁয়াজগুলো ৫-৭ টাকা কেজি দরে নিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে গতকাল চাক্তাই ও খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে মিয়ানমারের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় এবং ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকায়।
হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস আজাদীকে বলেন, বর্তমানে পেঁয়াজের বাজার নিম্নমুখী। বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ সংকট নেই। সরকার শুল্ক কমানোর পর বাজারে প্রচুর পেঁয়াজ এসেছে। তবে মিয়ানমার থেকে যেসব পেঁয়াজ এসেছে তার ৭০ শতাংশই নিম্নমানের। অনেক বস্তা পেঁয়াজ আসার পথেই নষ্ট হয়ে গেছে। তাই ব্যবসায়ীরা বাধ্য হয়ে ময়লার ভাগাড়ে ফেলে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।
জানা গেছে, বর্তমানে দেশে তাহেরপুরী, বারি-১ (তাহেরপুরী), বারি-২ (রবি মৌসুম), বারি-৩ (খরিপ মৌসুম), স্থানীয় জাত ও ফরিদপুরী পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। ফলে বছরজুড়েই কোনো না কোনো জাতের পেঁয়াজ উৎপাদন হচ্ছে। দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২২ লাখ টন। এর মধ্যে ১৮ লাখ টন স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা হয়। আর আমদানি করা হয় বাকি চার লাখ টন। মূলত এই আমদানিকৃত চার লাখ টন পেঁয়াজ বাজারের ওপর খুব বড় প্রভাব ফেলে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৫-১৬ বছরের ১৯ লাখ শিশুকে ওষুধ খাওয়ানো হবে চট্টগ্রামে
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬