মুক্তিযুদ্ধে বাবার অবদান অভূতপূর্ব

রুমানা নাওয়ার | শুক্রবার , ৭ জানুয়ারি, ২০২২ at ৫:১৯ পূর্বাহ্ণ

বাবা নেই অনেকদিন হয়ে গেলো। প্রায়ই এগার বৎসর। একটা মানুষ কে ভুলে যাওয়ার জন্য এ দীর্ঘ সময়ই যথেষ্ট। দিনের পর দিন অদর্শনে অদেখায় চেনা মুখও নাকি অচেনা হয়ে যায়। কিন্তু এ কথাটা সবক্ষেত্রে যায় না। আমার বাবাকে চোখের দেখায় দেখি না বহু দিন। কিন্তু মনের চোখ দিয়ে প্রতিনিয়ত দেখছি। তাঁর চওড়া কপাল ব্যাক ব্রাশ চুল কপালের সে কালো সেজদার দাগটা জ্বলজ্বল করে চোখের সামনে। নামাজ শেষ করে জায়নামাজে হাঁটু গেড়ে বসে তসবিহ জপের দৃশ্যটা দেখি প্রতিরাতে। একজন দায়িত্ববান বাবাকে দেখি রোজ। পুরো সংসারকে কাঁধে তুলে নিয়ে উদয়াস্ত পরিশ্রম করা বাবা। সন্তানের পড়াশোনার জন্য সর্বোচ্চ কষ্ট স্বীকার করা বাবা। সন্তানের অসুখে নির্ঘুম রাত কাটিয়ে দেয়া বাবা। সন্তানের আরাম আয়েশ সুখের জন্য নিজের সর্বোচ্চ কষ্ট স্বীকার করা বাবা। একজন ভালো মানুষ আমার বাবা। শিক্ষার উন্নয়নে শিক্ষার প্রসারে আজীবন কাজ করে গেছেন। মুক্তিযুদ্ধে আমার বাবার অভূতপূর্ব অবদান ছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্নভাবে সাহায্য করেছেন। পাকিস্তনি মিলিটারিদের হাত থেকে আমাদের পুরো গ্রামসহ এলাকাকে রক্ষা করেছেন তাঁর সাহস এবং মেধা দিয়ে। সময়ের সাহসী সন্তান আমার বাবা আলহাজ্ব বজল আহমেদ সিকদার। গোঁড়ামি কুসংস্কার কুপমুণ্ডকতা এসবের ঘোর বিরোধী ছিলেন তিনি। সবসময় আধুনিক চিন্তা ভাবনা ধ্যান ধারণাই অভ্যস্ত ছিলেন। নিজের জীবন যাপনও ছিলো খুবই আধুনিক। আমার বাবা সংগ্রাম করেই বড়ো হয়েছেন। ধর্মীয় শিক্ষা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা সবকিছুই নিজের যোগ্যতা মেধায় অর্জন করেছেন। আমার বাবা প্রতিকূল পরিবেশে বেড়ে উঠা একজন ভালো মানুষ আলোর মানুষ। আলো বিলিয়েছেন আমাদের মাঝে আর নাজিরহাট কলেজের শতশত শিক্ষার্থীর মাঝে। পূর্ব শৈলকোপা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি পদে দীর্ঘসময় আসীন ছিলেন। আমার মরহুম বাবার এগারতম মৃত্যু বার্ষিকীতে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানাই-তিনি তাঁকে জান্নাতের মেহমান বানিয়ে নিক। লেখক: শিক্ষক

পূর্ববর্তী নিবন্ধআমেরিকার লজ্জাজনক দিন
পরবর্তী নিবন্ধইসলামের দৃষ্টিতে নিরাপদ সড়ক উপহার দেয়া আমাদের দায়িত্ব