আমেরিকার লজ্জাজনক দিন

এমরান হোসাইন | শুক্রবার , ৭ জানুয়ারি, ২০২২ at ৫:১৯ পূর্বাহ্ণ

আমেরিকার ইতিহাসে লজ্জাজনক দিন ছিলো ৬ জানুয়ারি। ২০২১ সালে এদিনে ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ক্যাপিটল হিল ভবনে প্রেসিডেন্ট ট্টাম্পের একদল উগ্র সমর্থক নারকীয়ভাবে হামলা চালিয়ে বিশ্বকে হতবাক করে দেয়। বর্বরোচিত এ হামলার পেছনে বিশিষ্ট কজন কংগ্রেস ম্যানকে হত্যার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এ হামলায় ৫ জন নিহত এবং ১৪০ জন গুরুতর আহত হয়েছিল। এখনো আমেরিকার সাধারণ জনগণ এ জঘন্য হামলার গুরু রহস্য নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত। আমেরিকার ঐতিহাসিক ক্ষমতা হস্তান্তরের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য এ বর্বর হামলা চালিয়েছিল বলে নানা জরিপে উঠে আসে। আমেরিকার ইতিহাসে এ জঘন্য হামলার ৩৫ হাজার পৃষ্ঠার অভিযোগের নথি নিবিড় বিশ্লেষণ করে আজ বুধবার অ্যাটনি জেনারেল মেরিক গ্যারল্যান্ড বক্তব্য দেবেন। এদিকে মার্কিন অ্যাটর্নির অফিসের উদ্ধৃতি দিয়ে ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়- গত সপ্তাহে ডিসি-তে ফেডারেল প্রসিকিউটররা ঘোষণা করেছেন যে ৬ জানুয়ারী এর ঘটনার সাথে সম্পর্কিত অপরাধের জন্য ৭২৫ জনেরও বেশি লোককে অভিযুক্ত করা হয়েছে। প্রায় ১৬৫ জন বিভিন্ন ফেডারেল অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। হামলায় নিহত (৭জানুয়ারী) পুলিশ অফিসার সিকনিকের দীর্ঘদিনের গার্লফ্রেন্ড ব্রায়ান ডি সিকনিক পিভিএস নিউজ আওয়ারকে অভিযোগ করেন- পুলিশ কর্মকর্তা সিকনিকের মূতুর জন্য ট্টাম্প শতভাগ দায়ী। এজন্য ট্ট্রাম্পকে জেলে থাকা চাই। দি গার্ডিয়ান পত্রিকার কলামিস্ট রবার্ট রিচ এ জঘন্য ঘটনার বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বলেন- ক্যাপিটল হিলে হামলার জন্য উসকানি দিয়েছিলেন ট্টাম্প। ‘সেভ আমেরিকা মার্চ’ ডাক দিয়ে ৬ জানুয়ারি ওয়াশিংটন ডিসি তে আসার আহবান জানিয়েছিলেন। ২৬ ডিসেম্বর টুইট করে সমর্থকদের বলেছিলেন ৬ জানুয়ারী দেখা হবে ওয়াশিংটন ডিসিতে। মিস করবেন না। এ ঘটনার বর্ষপূর্তীকে সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ মাধ্যম সিএনএন, ফক্স নিউজ, নিউইয়র্ক টাইমস, দি ওয়াশিংটন পোস্টসহ নানা ফেডারেল এবং স্টেটভিত্তিক নিউজ মিডিয়াসহ সামাজিক যোগাযোগে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। রোববার এবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্যানেলটির চেয়ারম্যান বেনি থম্পসন বলেন, তদন্তে তাঁরা এমন কিছু বিষয় পেয়েছেন, যা সত্যিকার অর্থেই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার বিষয়। তাঁরা দেখেছেন, মানুষ মার্কিন গণতান্ত্রিক অখণ্ডতাকে ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করেছে। নির্বাচনের ভিত্তিকে দুর্বল করতে কিছুসংখ্যক মানুষের সমন্বিত তৎপরতা দেখা গেছে। জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির আইনের অধ্যাপক জোনাথন টার্লি ৬ জানুয়ারি ট্টাম্পের পদক্ষেপের কড়া সমালোচক-তিনি ওয়াশিংটন পোস্টকে এক সাক্ষাৎকারে বলে-ট্টাম্প প্রমাণ করেছিলেন ক্যাপিটল হিলে সহিংস আক্রমণ প্রত্যাশিত এবং তিনি সক্ষম হয়েছিলেন।
লেখক : যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাংবাদিক

পূর্ববর্তী নিবন্ধস্বপ্নের প্রজন্ম গ্রন্থাগার
পরবর্তী নিবন্ধমুক্তিযুদ্ধে বাবার অবদান অভূতপূর্ব