মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভ দমনে দিন দিন খড়গহস্ত হচ্ছে জান্তাবাহিনী। একটি পাওয়ার প্ল্যান্টে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দিতে নিরাপত্তাবাহিনী গুলি চালিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া, বড় বড় নগরীতে রাস্তায় সাঁজোয়া যান টহল দিতে শুরু করেছে। গণবিক্ষোভ দমনে শনিবার রাত থেকেই সামরিক জান্তা আমলের একটি আইন পুনরায় জারি করা হয়েছে। ওই আইন অনুযায়ী, রাতে বাড়িতে কোনো অতিথি এলে কর্তৃপক্ষকে তা জানাতে হবে। ওই আইনের বলে নিরাপত্তা বাহিনী আদালতের অনুমতি ছাড়াই সন্দেহভাজন যে কাউকে গ্রেপ্তার ও নাগরিকদের বাড়ি তল্লাশি করতে পারবে। অপর এক খবরে বলা হয়েছে, সামরিক জান্তা সারা দেশের অভ্যুত্থান বিরোধী প্রতিবাদকারীদের সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, সশস্ত্র বাহিনীকে বাধা দিলে তাদের ২০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। সামরিক অভ্যুত্থানের নেতাদের প্রতি কেউ মৌখিক বা লিখিত বাক্যের মাধ্যমে বা কোনো সাইন বা দৃশ্যমান কিছু উপস্থাপণের মাধ্যমে ‘ঘৃণা বা অবজ্ঞা’ উস্কে দিলে তাকেও দীর্ঘমেয়াদে কারাদণ্ড ও জরিমানা গুণতে হবে বলে জানিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী। খবর বিডিনিউজের। গত ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের বেসামরিক সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতার দখল নেয় দেশটির সেনাবাহিনী। যার বিরুদ্ধে টানা নয়দিন ধরে গণবিক্ষোভ চলছে। গত রোববার উত্তরের রাজ্য কোচিতে একটি পাওয়ার প্ল্যান্টে সেনা মোতায়েন করার পর বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। বিক্ষোভকারীদের আশঙ্কা ছিল, সেনাবাহিনী নগরী বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দিতে পাওয়ার প্ল্যান্টের দখল নিয়েছে। ফেসবুক লাইভে দেখা যায়, কোচির রাজধানী মিতকিনা নগরীতে একটি পাওয়ার প্ল্যান্টের বাইরে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দিতে নিরাপত্তা বাহিনী গুলি ছুড়ছে। তবে তারা তাজা গুলি নাকি রাবার বুলেট ছুড়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এদিকে রোববার সন্ধ্যা নামার পরপরই বাণিজ্য নগরী ইয়াংগন, মিতকিনা এবং রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিতউইতে সড়কে সাঁজোয়া যান চলতে দেখা যায়। এরপর গতকাল সোমবার প্রতিবাদে পূর্ববর্তী দিনগুলো থেকে লোক কম ছিল বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। তবে যারা ছিলেন তারা ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চির মুক্তি ও সামরিক শাসন অবসানের দাবি জানিয়েছেন।
গত কয়েকদিন ধরে দেশটির রাজধানী নেপিডো, বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গন, দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়সহ বহু শহরে হাজার হাজার মানুষ অভ্যুত্থান বিরোধী বিক্ষোভ করেছে। বিক্ষোভকারীরা অং সান সু চিসহ আটক সব নির্বাচিত নেতার মুক্তি দাবি করে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে আসছে।












