মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের আশপাশে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র আরাকান আর্মির যুদ্ধ পুনরায় তুমুল হওয়ার আভাস পাওয়া গেছে। এতে ব্যবহৃত মর্টার শেল, শক্তিশালী বোমা, গ্রেনেড ও গুলির শব্দ আবারও শুনেছেন কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত এলাকার মানুষ। এমনকি সেদেশে চলমান যুদ্ধে ব্যবহৃত গুলি দমদমিয়া এলাকার এক ব্যক্তির বসতঘরের আঙিনায় এসে পড়েছে বলেও জানান হ্নীলা ইউনিয়নের সদস্য মোহাম্মদ আলী। এছাড়া শুক্রবার রাত ১১টা থেকে শুরু হওয়া বিস্ফোরণের শব্দ গতকাল শনিবার দুপুর পর্যন্ত থেমে থেমে শোনা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। খবর বিডিনিউজের।
হ্নীলার ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, রাত থেকে ভেসে আসা বিস্ফোরণের শব্দের মধ্যে গতকাল শনিবার সকালে দমদমিয়ার বাসিন্দা আব্দুর রহিমের বসতবাড়ির আঙিনায় একটি গুলি এসে পড়েছে। তবে এতে কেউ হতাহত হননি।
কাতারের আমিরের রয়েল প্যালেসের ইতিহাস বিশেষজ্ঞ ও গবেষণার কাজে জড়িত টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান বলেন, তিনি প্রায় সাত মাস পর নিজ জন্মভূমিতে আসেন। কিন্তু ভোরে মিয়ানমারে বোমা বিস্ফোরণের বিকট শব্দে তার বাড়ি কেঁপে ওঠে। তার ভাষ্য, সমস্যা মিয়ানমারে হলেও টেকনাফের বাসিন্দাদের নানা ধরনের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। স্থানীয় লোকজন আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এ ব্যাপারে সরকারিভাবে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি বলেও মনে করছেন তিনি।
শহাপরীর দ্বীপের বাসিন্দা আবু তালেব বলেন, থেমে থেমে ভারী গোলার শব্দ এপারে শোনা যাচ্ছে। এ কারণে সীমান্ত এলাকায় অযথা না যাওয়ার নির্দেশ দিচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোহাম্মদ শরিফ বলেন, শুক্রবার রাতে আবারও বিস্ফোরণের শব্দে বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এভাবে আর কতদিন চলবে? বর্তমানে সীমান্ত এলাকার মানুষ আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করছেন।
মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধে ব্যবহৃত গোলা–বারুদের বিস্ফোরণের শব্দে সীমান্তের লোকজন শান্তিতে ঘুমাতে পর্যন্ত পারছেন না বলে টেকনাফের অন্তত তিনটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দাবি।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফ উল্লাহ নেজামী বলেন, হঠাৎ করে এভাবে বিস্ফোরণের শব্দে বাড়িঘর কেঁপে উঠছে। এলাকায় বাসিন্দাদের আতঙ্কিত হওয়াই স্বাভাবিক। মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যা হলেও এ কারণে কোনো রোহিঙ্গা যেন বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সীমান্তে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।