তিন বছর আগে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করা মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী দিন দিন দুর্বল হয়ে পড়ছে। দেশটিতে শান্তি ফেরাতে তাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করার এটাই ভালো সময় বলে মনে করেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
মিয়ানমারের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে জান্তা শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ চলছে। দেশটির উৎখাত হওয়া সরকারি দলের বেশ কয়েকজন নেতা একত্রিত হয়ে গণতন্ত্রপন্থি একটি প্যারালাল সরকার গঠন করেছে এবং সেনাবাহিনীর সঙ্গে আগে থেকেই লড়াইরত বিভিন্ন আদিবাসী বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে একজোট হয়ে জান্তা বিরোধী তুমুল লড়াই শুরু করছে। এরইমধ্যে তারা সেনাবাহিনীকে যুদ্ধে পরাজিত করে দেশটির নানা সীমান্ত শহর ও অঞ্চলের দখল নিয়েছে। এ সপ্তাহান্তেই তারা থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের গুরুত্বপূর্ণ শহর মায়াবতীর দখল নেয়। খবর বিডিনিউজের।
গত রোববার দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী স্রেথা বলেন, বর্তমান শাসকরা কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাদের শক্তি হারাতে শুরু করেছে। তবে তারা শক্তি হারাতে শুরু করলেও এখনও ক্ষমতা তাদেরই হাতে এবং তাদের কাছে অস্ত্র আছে। খুব সম্ভবত এটাই আলোচনা শুরু করার এবং একটি চুক্তিতে উপনীত হওয়ার সঠিক সময়।
গত বছর অগাস্টে স্রেথা থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রতিবেশী মিয়ানমারের সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যোগাযোগ বৃদ্ধি করেছেন। যার মধ্যে যুদ্ধরত পক্ষগুলোর মধ্যে আলোচনার পথ প্রশস্ত করার লক্ষ্যে একটি মানবিক উদ্যোগের অধীনে মিয়ানমারে সহায়তা প্রদান করাও অন্তর্ভুক্ত। গত মাসে থাইল্যান্ডের পার্লামেন্টে মিয়ানমারের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য একটি সেমিনারেরও আয়োজন করা হয়। যেখানে দেশটির জান্তা সরকার বিরোধীরা উপস্থিতি ছিলেন। ওই সেমিনার আয়োজন নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী।
স্রেথা বলেন, মিয়ানমার থাইল্যান্ডের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি এবং অন্যান্য থাই কর্মকর্তারা মিয়ানমারের বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে কথা বলছেন। সেইসঙ্গে মিয়ানমারের বিষয়ে তারা চীন ও যুক্তরাষ্ট্র–সহ আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সাথেও আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, মিয়ানমার একীভূত, শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধশালী হলে যে দেশটি সবচেয়ে বেশি লাভবান হতে পারে তা হলো থাইল্যান্ড।