পবিত্র কোরআনে আল্লাহ পাক বলেছেন, ‘ইন্নাল্লাহা মাআস্ সোয়াবেরীন’ অর্থাৎ নিশ্চয়! আল্লাহ ধৈর্য্যধারণকারীদের সাথে আছে। ক্ষুধা তৃষ্ণায় কাতর হৃদয় খাদ্য পানীয় সবকিছু হাতের কাছে কিন্তু রোজাদার না খেয়ে আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য সূর্যাস্ত পর্যন্ত অসীম ধৈর্য্য ধারণ করেন। এই ধৈর্য্যের বিনিময় হল ইফতারের আনন্দ। তাই যে কোনো মুসলমানকে ইফতার করানো মহা পুণ্যের কাজ।
বিশ্বনবী হযরত মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরমায়াছেন, যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করায়, সে উক্ত রোজাদারের সমান সওয়াব পাবে অথচ উক্ত রোজাদারের ভাগ থেকে কিছুমাত্র সওয়াব কম হবে না। রাহমাতুল্লিল আলামীন, মাহবুবে খোদা, হযরত মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্যত্র ইরশাদ করেছেন, মাহে রমজান মাসে কোনো রোজাদার ব্যক্তিকে ইফতার করালে আল্লাহ তার গুনাহ ক্ষমা করবেন এবং দোজখের আগুন থেকে মুক্তি পাবেন। কবুল হয়েছে এমন একটি রোজার পূণ্য তাঁকে আল্লাহ পাক দান করবেন।
সাহাবীগণ বললেন, হে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের প্রত্যেকের তো মানুষকে ইফতার করানোর সামর্থ নেই। প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে কোনো রোজাদার ব্যক্তিকে সামান্য পরিমাণ দুধ বা পানি অথবা একটি খেজুর দ্বারা ইফতার করালেও আল্লাহ তা’লা ওই ব্যক্তির সমান সওয়াব দান করবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে তৃপ্তিসহকারে খাওয়াবেন আল্লাহ পাক তাঁকে হাউজে কাওসারের পানি পান করবেন।
রোজাদারকে ইফতার করানো যেমন পূর্ণ্যকর্ম, নিজে করাও কম সওয়াবের কাজ নয়। সূর্যাস্তের পর পরই (তাড়াতাড়ি) ইফতার করা অধিক সওয়াবের কাজ। মহানবী হযরত মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, মানুষ ততদিন কল্যাণের মধ্যে থাকবে, যতদিন তারা ইফতারের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করে নেবে। বিশিষ্ট তাবিঈ আবু আতিয়্যা বর্ণনা করেছেন, একদিন আমি ও তাবিঈ মাসরূক হযরত আয়শা সিদ্দিকা (রঃ)-এর কাছে জিজ্ঞেস করলাম, হে উম্মুল মোমেনিন! রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীদের মধ্যে দু’জন আছেন, একজন তাড়াতাড়ি ইফতার করেন এবং মাগরিবের নামাজও তাড়াতাড়ি আদায় করেন, আর একজন কিছুক্ষণ দেরী করে ইফতার করেন এবং মাগরিবের নামাজও দেরী করে আদায় করেন তাদের মধ্যে উত্তম কে? হযরত আয়শা (রঃ) জিজ্ঞেস করলেন, কে তাড়াতাড়ি ইফতার করেন এবং নামাজ আদায় করেন? আমি বললাম, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ)। হযরত আয়শা বললেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরূপই করতেন। (সহীহ মুসলিম)।