করোনায় প্রায় এক বছর ধরে বন্ধ সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। এতে সেশনজটসহ নানা সংকটে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। ফলে ক্যাম্পাস ও হল খুলে দেয়ার দাবিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছেন। তবে গতকাল সংবাদ সম্মেলন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি আরো তিন মাস বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখার ঘোষণা দিলেও মার্চেই হল খোলার দাবি জানিয়েছেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা।
গতকাল বিকাল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাশে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বর্ষের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। এর আগে সকালে ড. মু. শহীদুল্লাহ হল ও অমর একুশে হলে ঢুকে যান বেশকিছু শিক্ষার্থী। পরে প্রশাসন ও হল সংসদের হস্তক্ষেপে তারা হল ছাড়েন। রাজু ভাস্কর্যে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ থেকে শিক্ষার্থীরা সরকারের নেয়া সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানান। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘এক দফা এক দাবি, হল খুলবে ফেব্রুয়ারি’, ‘সব হল খুলতে হবে, নইলে তালা ভাঙতে হবে’, ‘ভিসি স্যার টিকা নিন, হল সব খুলে দিন’সহ নানা স্লোগান দেন।
সমাবেশ থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে হল খোলার সিদ্ধান্ত নিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়া হয়। এরপর রাজু ভাস্কর্য থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ভিসির কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীদের ৫ প্রতিনিধি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে কথা বলে তাদের দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি ভিসির হাতে তুলে দেন।
পরবর্তীতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো আখতারুজ্জামান বলেন, আগামীকাল (আজ) সাড়ে ১০টায় একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিং রয়েছে। আজ (গতকাল) হওয়া জাতীয় সিদ্ধান্ত, প্যানডেমিক সিচ্যুয়েশন, শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিনেশনের আওতায় আনাসহ শিক্ষার্থীদের সবগুলো বিষয় নিয়ে একাডেমিক কাউন্সিলে আলোচনা করা হবে। সেখানেই সকল বিষয় সমন্বিত করে আমরা সিদ্ধান্ত নিব।
হল ছাড়তে নারাজ জাবি শিক্ষার্থীরা : অন্যদিকে সরকারের হল ত্যাগের নির্দেশনা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে হল ছাড়তে দেয়া প্রজ্ঞাপনকে উপেক্ষা করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হল ছাড়তে অনড় অবস্থানে রয়েছেন। গতকাল দুপুরে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের প্রজ্ঞাপন বাতিলসহ আরো পাঁচ দফা দাবি জানান। তার মধ্যে হল থেকে কাউকে বের না করা ও অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে নয় বরং হামলাকারী নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের নামে মামলা করার দাবি জানান। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে পুনরায় লাগানো তালা ভেঙে হলে ঢুকেছে শিক্ষার্থীরা। এর আগে সকালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে হল ছাড়ার অনুরোধ করতে হল প্রশাসন হলে গেলেও শিক্ষার্থীরা তা আমলে নেননি।
মার্চেই হলে প্রবেশ করতে চান রাবি শিক্ষার্থীরা : পহেলা মার্চেই হলে প্রবেশ করতে চান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। আবাসিক হল ও ক্যাম্পাস খোলার দাবিতে লাগাতার কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এই ঘোষণা দেন। শিক্ষার্থীরা বলেন, মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরদের সঙ্গে আলোচনায় বসবে। আমরা আশা করছি সেখানে তারা ফেব্রুয়ারির মধ্যে হল খোলার একটা সিদ্ধান্ত নিবে। আমরা ইউজিসির সিদ্ধান্তের ওপর ভিত্তি করে সংবাদ সম্মেলনে আমরা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব। তবে আমরা হলে ঢুকতে বদ্ধ পরিকর। প্রয়োজনে হলের সামনে অবস্থান কর্মসূচি করবো।