মামলার ২০ মাস পর পরিবেশের চার্জশিট

মূল অভিযুক্ত চিহ্নিত, বাদ পড়েছে তিনজন ফয়’স লেকে পাহাড় কেটে বসতি

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২৪ মার্চ, ২০২১ at ৫:৩৯ পূর্বাহ্ণ

নগরীর আকবরশাহ থানাধীন ফয়’স লেক এলাকায় পাহাড় কেটে বসতি বানিয়ে ভাড়া বাণিজ্য করে আসছিল প্রভাবশালীরা। নানা সময়ে অভিযান চালিয়ে এসব বসতি উচ্ছেদ করা হলেও পুনরায় কার্যক্রম শুরু হয়। এ যেন চোর-পুলিশ খেলা। তবে সাম্প্রতিক সময়ে আদালতে মামলা, দোষীদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়ার কাজে গতি এনেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। সম্প্রতি ফয়’স লেক এলাকার এ ধরনের একটি ঘটনায় ২০১৯ সালে দায়ের হওয়া মামলায় প্রায় ২০ মাসের মধ্যে আদালতে চার্জশিট দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। তবে মামলায় মূল অভিযুক্তকে চিহ্নিত করা গেলেও অন্য তিন আসামিকে চিহ্নিত করতে পারেননি তদন্ত কর্মকর্তা। ফলে ওই তিনজনকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়ে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১০ জুলাই ফয়’স লেক সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালায় জেলা প্রশাসন। এ সময় একটি বসতি উচ্ছেদ করতে গেলে মো. জামাল নামের এক ভাড়াটিয়া অভিযান পরিচালনাকারী দলকে জানায়, আকবর শাহ থানাধীন শান্তিনগর এলাকার হাতেম আলীর ছেলে মো. হাছান (২৬), দুধওয়ালা মোল্লার ছেলে মামুন, পারভেজ ও নাইম মিলে এসব পাহাড় কেটে বসতি বানিয়ে লোকজনকে ভাড়া দিয়েছে। এই চারজন ওই এলাকার প্রায় পাহাড় কাটার সাথে জড়িত। এরপর ওই বছরের ১৭ জুলাই পরিবেশ অধিদপ্তরের তৎকালীন পরিদর্শক আবুল মনছুর মোল্লা বাদী হয়ে উক্ত চারজনকে এজাহারনামীয় আসামি করে আকবর শাহ থানায় মামলা (নং ১৬) দায়ের করেন। মামলার তদন্তে নেমে মূল আসামি মো. হাছানকে চিহ্নিত করতে পারলেও সাক্ষী ও সুনির্দিষ্ট নাম-ঠিকানা নিশ্চিত করতে না পারায় অন্য তিন আসামিকে চিহ্নিত করতে পারেনি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আবুল মনছুর মোল্লা আজাদীকে বলেন, ওইসব এলাকায় অবৈধ বসতি ছিল। বর্ষা মৌসুমে বসতিগুলো উচ্ছেদ করা হয়েছে। ওইসব বসতিতে ভাড়াটিয়ারা দীর্ঘদিন থাকেন না। যে কারণে মামলার সময়ে যাদের বিরুদ্ধে পাহাড় কাটার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছিল পরে তদন্তকালে তাদের চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। কয়েকজন সাক্ষী শুধু নাম বলতে পারলেও সুনির্দিষ্ট পরিচয় জানাতে পারছিলেন না। আমরা স্থানীয় থানা থেকে পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু ওই নামের সুনির্দিষ্ট কাউকে পাওয়া যায়নি। যে কারণে তিনজনকে ‘নট সেন্ট আপ’ করা হয়েছে। আদালতে মামলার বিচারকাজ চলাকালীন যদি পরিচয় নিশ্চিত করা যায়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে সম্পুরক চার্জশিট দেওয়া হবে।
পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের পরিচালক মো. নূরুল্লাহ নূরী আজাদীকে বলেন, ২০০৭ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রায় ২৯টি মামলা তদন্তাধীন ছিল। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর মামলাগুলোর তদন্ত শেষ করার পদক্ষেপ নিয়েছি। ইতোমধ্যে নতুন মামলার পাশাপাশি পুরনো বেশিরভাগ মামলায় আদালতে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর পুরোপুরি টেকনিক্যাল একটি সংস্থা। ফৌজদারি মামলা তদন্তের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে সক্ষমতার অভাব ছিল। এজন্য মামলা তদন্তে কিছু ত্রুটিবিচ্যুতি থাকতে পারে। এখন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। মামলার তদন্তের বিষয়ে প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে। সময়ের সাথে সাথে পরিবেশের মামলার তদন্তেরও গুণগত মানের উন্নতি হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকরোনার তোপে মনোযোগ সরেছে যক্ষ্মা থেকে
পরবর্তী নিবন্ধআট মাসে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ