করোনার তোপে মনোযোগ সরেছে যক্ষ্মা থেকে

বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস আজ

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২৪ মার্চ, ২০২১ at ৫:০৪ পূর্বাহ্ণ

করোনার তোপের মধ্যে গত বছর যক্ষ্মা রোগ বেশি মনোযোগ পায়নি। যার কারণে তুলনামূলকভাবে রোগী কম শনাক্ত হয়েছে। এ সময়ে করোনার প্রকোপের কারণে অনেকের মধ্যে যক্ষ্মার লক্ষণ থাকলেও তা পরীক্ষার আওতায় আসেনি। স্বাস্থ্য বিভাগগুলোও করোনাকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে যক্ষ্মা রোগী শনাক্তে পিছিয়ে পড়েছে বলে সংশ্লিষ্টদের ধারণা। এরই মধ্যে ‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার যক্ষ্মামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আজ বুধবার দেশব্যাপী পালিত হচ্ছে বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস। দিবসটি উপলক্ষে সিভিল সার্জন কার্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান র‌্যালি, আলোচনা সভাসহ অন্যান্য কর্মসূচি পালন করছে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর চট্টগ্রামে মোট যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত হয়েছে ১৪ হাজার ১১৬ জন। তা আগের বছরের চেয়ে ৫ হাজার ৩২৫ জন কম। গত বছর ফুসফুস আক্রান্ত যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা ছিল ১০ হাজার ৭১ জন। ফুসফুস বহির্ভূত রোগীর সংখ্যা চার হাজার ৪৫ জন।
এর আগের বছর ২০১৯ সালে মোট যক্ষ্মা রোগী ছিল ১৯ হাজার ৮৮১ জন। এর মধ্যে ফুসফুস আক্রান্ত রোগী ১৪ হাজার ৭০২ জন এবং ফুসফুস বহির্ভূত রোগীর সংখ্যা ৫ হাজার ১৭৯ জন।
সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, আসলে করোনার কারণে যক্ষ্মায় সেভাবে মনোযোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি; যার কারণে আগের বছরগুলোর চেয়ে শনাক্ত কম হয়েছে। এছাড়া রোগীদের মধ্যেও একটা আতঙ্ক কাজ করেছে। এটাও একটা কারণ।
চিকিৎসকদের মতে, যক্ষ্মা রোগীদের মধ্যেও কাশি থাকে; যার কারণে অনেকে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করে চুপ ছিল। আবার অনেকে করোনা সংক্রমণের ভয়ে যক্ষ্মা পরীক্ষার জন্য নমুনাও দেয়নি। এসব কারণে যক্ষ্মা রোগী প্রকৃতপক্ষে কম দেখাচ্ছে। নইলে এই সংখ্যা আগের চেয়ে বাড়ত বলে তাদের ধারণা।
২০২০ সালে নতুন শনাক্ত হয়েছে ১৩ হাজার ২২৯ জন। পুনঃআক্রান্ত হয়েছে এমন রোগীর সংখ্যা ৮৮৭ জন। ফুসফুস আক্রান্ত জীবাণুযুক্ত নতুন যক্ষ্মা রোগী শনাক্তকরণের হার ৬৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ। প্রতি ১ লাখ লোকের মধ্যে বছরে ১২০ জন যক্ষ্মা শনাক্ত হয়।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. নুরুল হায়দার জানান, চিকিৎসায় যক্ষ্মা ভালো হয়। তবে করোনার কারণে অনেকে ভয়ে ভয়ে ছিলেন। গত বছর যক্ষ্মা চিকিৎসায় সাফল্যের হার ছিল ৯৬ শতাংশ। শনাক্ত করা রোগীর মধ্যে শিশু ছিল ৬৫৬ জন। চিকিৎসাধীন রোগীদের মধ্যে যক্ষ্মা ও অন্যান্য কারণে মৃত্যু হয়েছে ৩১৪ জনের।
চট্টগ্রামে যক্ষ্মা পরীক্ষার ৯৮টি ডটস কর্নার রয়েছে। এর মধ্যে নগরে ৬৪টি। কফ পরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে ৬৫টি। এর মধ্যে নগরে ২৭টি। এসব কেন্দ্রে গত বছর সন্দেহজনক রোগীর কফ পরীক্ষা করা হয় ৮৬ হাজার ২৯৫ জনের। ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা ৯২ জন। ২০১১ থেকে গত বছর পর্যন্ত ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা ৮৭০ জন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন যক্ষ্মা রোগী ১৭২ জন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ
পরবর্তী নিবন্ধমামলার ২০ মাস পর পরিবেশের চার্জশিট